করোনা আবহে চোখ রাঙাচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, গাউডলাইন দিল এইমস

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপাদাপিতে নাজেহাল গোটা দেশ। এরইমধ্যে নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’। ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ এই ‘মিউকরমাইকোসিস’ বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। কেবলমাত্র মহারাষ্ট্রেই এর জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের। আক্রান্ত ১৫০০ এর গণ্ডি পেরিয়েছে। এরাজ্যেও এখনও পর্যন্ত ৫ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বহু করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে বাসা বাঁধছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। ইতিমধ্যেই এই সংক্রমণকে মহামারী বলে ঘোষণা করেছে রাজস্থান ও তেলেঙ্গানা সরকার।
AIIMS এইমস জানাচ্ছে, যাঁদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত ও কড়া ডোজের স্টেরয়েড নিচ্ছে যারা, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। এই নিয়ে একটি গাইডলাইনও দিয়েছে এইমস (AIIMS)।
কী এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস:
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমোসিস একটি বিরল ফাঙ্গাল সংক্রমণ (rare fungal infection)৷ এটি শরীরে দেখা দিলে ৫৪শতাংশ রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের কথা অনুযায়ী, কোভিড সংক্রমণ থেকে রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। তখনই এই জাতীয় ছত্রাক শরীরে বাসা বাঁধে। তবে ,কোভিড রোগীরাই যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হবেন, এধারণা সম্পূর্ণ ভুল।চিকিৎসকেদের কথায় যে সব রোগীকে দীর্ঘদিন আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে এবং যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের শরীরের এই জাতীয় সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ফুসফুস, সাইনাস, মতিষ্কে ছড়াতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ প্রাণঘাতী হতে পারে।
কারা বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ?
১. AIIMS এর কথায়, ডায়াবেটিসে রোগী ,যারা বেশি মাত্রায় স্টেরয়েড নেন তাঁদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ঝুঁকি বেশি।
২. দীর্ঘদিন ধরে কড়া ডোজের স্টেরয়েড চলছে , এরকম রোগীদের ক্ষেত্রেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বেশি
৩.গুরুতর কোভিডে আক্রান্ত , ভেন্টিলেটরে অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন রোগীও সংক্রমিত হতে পারেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ বিভিন্নরকম হতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা বলছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হলে নাক দিয়ে অস্বাভাবিক ভাবে কালো রস বা রক্ত বেররোতে পারে। অনেকক্ষেত্রে নাক বন্ধ, মাথা ব্যাথা ও চোখে ব্যাথা অনুভব হয়। চোখ ফুলে যাওয়া, দুটো দেখা, লাল চোখ এমনকি না দেখতে পাওয়াও সংক্রমণের লক্ষণ। এছাড়াও মুখে অসাড় ভাব, মুখ খুলতে বা চিবোতে হলে ব্যাথা পাওয়া, দাঁত নড়বড় করা, মুখের ভিতর কালচে ভাব বা ফুলে যাওয়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে হতে পারে।

কী করণীয়:
১. সবার আগে ইএনটি(ENT) দেখানো অত্যাবশ্যক। অথবা অফথ্যার্মোলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
2.সুগার টেস্ট ও তা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় ফলো আপ করা ।
৩. MRI বা CT স্ক্যান উইথ কন্ট্রাস্ট-প্যারানেসাল সাইনাসেস করাতে হবে।
৪. নিজের ইচ্ছামতো অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ, স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না।
৫. অনান্য কো-মর্বিডিটি থাকলে তাঁর চেকআপ করাতে হবে ও মেডিসিন চালু করা দরকার।

Advt

Previous articleঅতিমারির মধ্যেই ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণকে মহামারী বলে ঘোষণা করল তেলেঙ্গানা সরকার
Next articleসৌরভকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য চ‍্যাপেলের