ঝাড় উপড়ে বাঁশ নামিয়ে ল্যাজে গোবরে আলিমুদ্দিন

ঝাড়েই ভালো ছিলো, সেখান থেকে উপড়ে বাঁশ কাছে নিয়ে আসার ঠেলা কী হতে পারে, তা বুঝতে চলেছে আলিমুদ্দিন ৷ বিধানসভা ভোটে এভাবে ‘সিপিএম-মুক্ত বাংলা’ কেন হলো তার কারন জানতে জেলায় জেলায় চিঠি পাঠাচ্ছে সিপিএম রাজ্য কমিটি৷ বলা হয়েছে, একইভাবে জেলা কমিটিও চিঠি পাঠাক জোনাল ও লোকল কমিটিকে৷ সব উত্তর পাঠাতে হবে আলিমুদ্দিনে৷ দলের রাজ্য নেতারা না’কি এই সব উত্তর থেকেই ভোটে ধুয়ে-মুছে যাওয়ার কারনের নির্যাস পেয়ে যাবে৷  

এদিকে জানা গিয়েছে, উত্তর দিতে খাতা-পেন্সিল নিয়ে তৈরি জেলা কমিটিগুলি৷ আর উত্তরের যে দু-চারটে নমুনা জানা গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট হচ্ছে, ঝাড়ের বাঁশ যেচে নিজেদের কাছে আনার খেসারত দিতে চলেছে আলিমুদ্দিন৷ কার্যত লকডাউনের মাঝেই গোহারা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ‘কেন এভাবে হারলাম’, তাঁর কারণ খুঁজতে নেমেছে৷ রাজ্য নেতারা জানেন, এই পরাজয়ের পর আলিমুদ্দিনের উপর নীচুতলার নেতা কর্মীরা পুরোদস্তুর খেপে রয়েছেন৷ প্রতিদিন অসন্তোষ বাড়ছে৷ তাই জেলা কমিটিগুলি যাতে সংক্ষেপে ‘টু দ্য পয়েন্ট’ উত্তর দেয়, সেজন্য আলিমুদ্দিনের সাদা চুলের নেতারা বিস্তর ভাবনাচিন্তা করে এক প্রশ্নমালা তৈরি করেছেন৷ এই প্রশ্নমালা জেলায় জেলায় যেতে শুরু করেছে৷ উত্তরের অপেক্ষায় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী৷

উত্তর কেমন হতে পারে তার সুর আগেই যেন মোটামুটি বেঁধে দিয়েছেন তন্ময়, ভট্টাচার্য, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়রা৷ সেই ধাঁচেই আসতে চলেছে উত্তর৷ আলিমুদ্দিনের প্রশ্নমালার একটি প্রশ্নে বলা হয়েছে, “তৃণমূল- বিজেপির বোঝাপড়ায় রাজনীতি সম্পর্কে জনগণ কি সিপিএম তথা বামেদের প্রচার গ্রহণ করেনি?” এই প্রশ্নে বিস্মিত দলের জেলা নেতারা। রাজ্য কমিটি কেন এইসব অবান্তর প্রসঙ্গ নিয়ে জাবর কাটতে চাইছেন, জেলার নেতারা তা বুঝতেই পারছেন না৷ দলের উপরতলা থেকে এ ধরনের ভিত্তিহীন, অবাস্তব স্লোগান সামনে আনার মাশুল তো ভোটে পার্টি দিয়েছে৷ ফের কেন এই প্রশ্ন ? জবাবও তৈরি করেছে একাধিক জেলা কমিটি৷ উত্তরে বলছে, ” এ সব স্লোগান বা তত্ত্ব বাজারে নামিয়েছিলেন আলিমুদ্দিনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত উডেন চেম্বার৷ কতখানি বাস্তবসম্মত, তা ওনারাই বলুন”৷

রাজ্য কমিটি জেলার নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছে, আগামীদিনে দলের করণীয় কী? এ বিষয়ে পরামর্শও চাওয়া হয়েছে৷ উত্তরে বলা হচ্ছে, “পরামর্শ তো একটাই৷ এই নির্বোধ নেতৃত্ব এখনই বদল করা দরকার৷ এদের সঙ্গে বাস্তবের কোনও যোগাযোগ নেই৷ এই নেতাদের জন্যই সিপিএমকে আজ প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে এসইউসিআই-এর সঙ্গে”৷ আর একটি উত্তর এই রকম, “এসব জিজ্ঞাসা করার আপনারা কে ? ভোটে দলের নীতি নির্ধারণ করেছে রাজ্য কমিটি যাকে তাকে জুটিয়ে এনে জোট করেছে রাজ্য কমিটি৷ মানুষ সরাসরি থাপ্পড় মেরে আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছে৷ সব কিছুর দায় রাজ্য কমিটির, রাজ্য নেতৃত্বের৷”

ISF-এর সঙ্গে জোটের প্রভাবও জানতে চেয়েছে আলিমুদ্দিন। জেলা বা লোকাল কমিটি থেকে এই প্রশ্নের জবাব হিসাবে যা উঠে আসছে তা আলিমুদ্দিন হজম করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেবেই৷  তবে প্রায় সব জেলার উত্তরে একটা বিষয় ‘কমন’, “নেতৃত্বের বদল না করলে সামনের দিন আরও ভয়ঙ্কর”

Previous articleব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে চিনুন, জেনে নিন কী করবেন, কী করবেন না
Next articleকিংবদন্তি বঙ্গরত্ন ভাওয়াইয়া শিল্পী ধনেশ্বর রায় প্রয়াত