ভাঙল শতাধিক বাঁধ, সংস্কারের টাকায় কী করেছেন ২ প্রাক্তন সেচমন্ত্রী রাজীব, শুভেন্দু?

ইয়াস বাংলায় বড় মাপের ধাক্কা না দেওয়া সত্ত্বেও এড়ানো গেল না বড় ক্ষয়ক্ষতি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর মিলিয়ে প্রায় ১৩৪ টি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর মিলেছে। ফসলের খেতে ঢুকছে সমুদ্রের নোনা জল। প্রায় ১ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে ১৫ লক্ষ মানুষ কার্যত গৃহহীন, ৩ লক্ষ বাড়ি ভেঙেছে। লবনাক্ত জলে শস্যের বিপুল ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে মাছেরও। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ধারাবাহিকভাবে নদী বাঁধ মেরামতির টাকা বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও এত দ্রুত শতাধিক বাঁধ ভাঙল কীভাবে? তাহলে গত দশ বছরে কী কাজ করেছেন রাজ্যের সেচ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রাক্তন মন্ত্রী? প্রথমজন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও দ্বিতীয়জন শুভেন্দু অধিকারী। এরমধ্যে রাজীব গত দশ বছরে দীর্ঘ সময় ধরে সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর দায়িত্ব পান শুভেন্দু। দুই নেতাই তৃণমূল সরকারের দশ বছরে প্রভূত ক্ষমতার ক্ষীর খেয়ে বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। প্রথমজন বিপুল ভোটে পরাজিত। দ্বিতীয়জন জিতেছেন নামমাত্র ভোটে। আজ যখন ইয়াসের অভিঘাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল এলাকার গ্রামগুলিতে তাসের ঘরের মত বাঁধ ভেঙে লক্ষাধিক মানুষ বিপন্ন, তখন সেচ দফতরে বাঁধ সংস্কারের জন্য দশ বছর ধরে দফায় দফায় বরাদ্দ হওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকায় কী কাজ হল, সেই প্রশ্ন উঠছে। বাঁধ ঠিকঠাক মেরামতি না হলে সুন্দরবন উপকূলের একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হয়ে সেখানকার মানুষ বড় দুর্যোগে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বেন তা জানতেন না সেচ দফতরের দুই প্রাক্তনী? আজ এই বিপর্যয়ের মধ্যে তাঁদের ভূমিকাও কিন্তু আতসকাচের নিচে চলে আসছে।

রাজ্য প্রশাসনের একাংশে দাবি উঠছে, সেচ দফতরের কাজে গাফিলতি হয়ে থাকলে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হোক। বরাদ্দ হওয়া বাঁধ সংস্কারের টাকা নয়ছয় হল কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে বর্তমান রাজ্য সরকারকেই। ঘটনাচক্রে, শতাধিক বাঁধ ভেঙে লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হলেও এই মুহূর্তে টুঁ শব্দ শোনা যাচ্ছে না দলবদলু দুই প্রাক্তন সেচমন্ত্রীর মুখে। তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী হয়ে সবরকম সুবিধা ভোগের পর ভোটের মুখে ‘অসম্মানিত’ হওয়ার ছুতোয় যে গদ্দাররা দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন মন্ত্রী থেকে কী কী কাজ করেছেন তার অনুসন্ধান হওয়াটাও জরুরি।

আরও পড়ুন- কাশ্মীরের ছকে বাংলাকে ৩ খন্ড করার ষড়যন্ত্র, বিস্ফোরক দাবি হিন্দি দৈনিকের

Advt