বিপাকে শুভেন্দু -রাজীব, বাঁধ ভাঙা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী হয়ে সবরকম সুবিধা ভোগের পর ভোটের মুখে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন রাজ্যের দুই প্রাক্তন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajiv Benarjee) এবং শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari)। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মানুষের জন্য কী কাজ করেছেন তাঁরা? কেন ভাঙল একের পর এক নদী বাঁধ? এবার আতসকাচের তলায় রাজীব-শুভেন্দুর ‘কীর্তি’। ইয়াস এবং কোটালের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে অসংখ্য নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এবার তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Benarjee)।

ইয়াস (Yaas) বাংলায় বড় ধাক্কা না দিলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর মিলিয়ে প্রায় ১৩৪ টি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর মিলেছে। ফসলের খেতে ঢুকছে সমুদ্রের নোনা জল। প্রায় ১ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে ১৫ লক্ষ মানুষ কার্যত গৃহহীন, ৩ লক্ষ বাড়ি ভেঙেছে। লবণাক্ত জলে শস্যের বিপুল ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে মাছেরও। প্রশ্ন ওঠে, ধারাবাহিকভাবে নদী বাঁধ মেরামতির টাকা বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও এত দ্রুত বাঁধ ভাঙল কীভাবে?

ক্ষমতায় আসার পর দীঘার সমুদ্র তর্কে সুন্দর করে সাজিয়ে ছিলেন মমতা। ইয়াসের (Yaas) দাপটে প্রায় তছনছ দিঘা। ভেঙে গিয়েছে মেরিন ড্রাইভ। মাত্র কয়েক বছর আগে তৈরি মেরিন ড্রাইভ কীভাবে এত ক্ষতিগ্রস্ত হল? বৃহস্পতিবার, রিভিউ মিটিংয়ে সেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেচ দফতরের কাজে ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রশ্ন তোলেন, “টাকা কি জলে দেওয়া হবে, নাকি টাকা দিয়ে জল আটকাব?”

এখানেই প্রশ্নের মুখে দলবদলু ২ সেচমন্ত্রীর ভূমিকা। তাহলে গত দশ বছরে কী কাজ করেছেন দুই প্রাক্তন মন্ত্রী- রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী? এরমধ্যে দশ বছরে দীর্ঘ সময় সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব। এরপর দায়িত্ব পান শুভেন্দু। বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন দুজনেই। প্রথমজন বিপুল ভোটে পরাজিত। দ্বিতীয়জন কোনো মতে জিতেছেন।

সেচ দফতরে বাঁধ সংস্কারের জন্য দশ বছর ধরে দফায় দফায় বরাদ্দ হওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করার দাবি উঠেছে আগেই। এবার বাঁধ ভাঙ্গার কারণ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে শতাধিক বাঁধ ভেঙে লক্ষাধিক মানুষ আতান্তরে পড়লেও ‘মানুষের কাজ করতে চেয়ে দল বদলানো’ দুই প্রাক্তন সেচমন্ত্রী একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। অথচ ঝড় থামার সঙ্গে সঙ্গেই ডায়মন্ড হারবারের দুর্গত মানুষের পাশে ছুটে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Benarjee)। শুক্রবার আকাশপথে এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রীও। তবে তদন্ত হলে কেঁচো খুঁড়তে কী কেউটে বেরোবে তা নিয়ে ঘাম ছুটেছে অনেকের কপালেই।

 

 

Previous articleইয়াস-তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে মিমি, ব্যবস্থা করলেন ত্রাণের
Next articleইয়াস-এর ক্ষয়ক্ষতি ও অর্থ বরাদ্দ নিয়ে আগামিকাল মোদি-মমতা বৈঠক