বাংলার স্বার্থে আপনার পা ধরতেও রাজি, নোংরা খেলা খেলবেন না: মোদিকে মমতা

মোদি-মমতা বৈঠক নিয়ে শুক্রবার রাত থেকেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক মহল। শনিবার, নবান্ন (Nabanna) থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তার কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্পষ্ট অভিযোগ করলেন, তাঁকে অপমানিত, অপমানিত করা হয়েছে। মমতাhttps://shrachirealty.com/project/renaissance/ বলেন, কেন্দ্র সরকারের মনোভাব প্রতিহিংসাপরায়ণ। পিএমও (Pmo) থেকে তাঁকে অপমান করা হয়েছে। তাঁর ও মুখ্যসচিবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই একাধিক টুইট করা হয়। মোদির উদ্দেশে মমতা বলেন, “বাংলার স্বার্থে আপনার পা ধরতেও রাজি কিন্তু নোংরা খেলা খেলবেন না।”

প্রধানমন্ত্রী অন্য রাজ্যে যাবেন বলে এ রাজ্যে আসেন। তার আগেই দুর্গত এলাকায় যাওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘোষণা হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। “আমাদের কপ্টার আকাশে প্রায় ২০ মিনিট চক্কর কাটে। ১ মিনিট দেখা করতে চাই। আগে বলা হয়েছিল শুধু প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক হবে। পরে দেখলাম বিরোধী দলনেতা পৌঁছে গিয়েছেন বৈঠকে।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দু-মাস আগে গুজরাটে (Gujarat) প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে সেখানকার বিরোধী দলনেতা উপস্থিত ছিলেন না। এদিনও ওড়িশার (Odissa) বিরোধী দলনেতা উপস্থিত ছিলেন না। অথচ বাংলার ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম।

ঘরের ভিতরে কোনও সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে যে ছবি দেওয়া হয়েছে তাই দেখেছে সংবাদমাধ্যম। সেখানে ছবি ফটোশপ করা হয় বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বৈঠকে তিনি এবং মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Banerjee) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন অনেকক্ষণ। সে ছবি তারা প্রকাশ করেনি।

Pp

মমতা বলেন, যখন বাংলা ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করছে, তখন তাঁকে বদনামের ছক কষা হচ্ছে। “প্রধানমন্ত্রী আপনার দুটো পা ধরলে খুশি হলে, আমি বাংলার জন্য করতে পারি। দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না”। এরপরই মমতা প্রশ্ন তোলেন, “আমরা ভোটে জিতেছি, তাই কি আমাদের সঙ্গে এই আচরণ করা হচ্ছে? হার হজম করতে পারছে না, তাই এমন আচরণ করা হচ্ছে। এভাবে আমাদের অপমান করবেন না। জনতার রায় মেনে নিন”।

মমতা অভিযোগ করেন ইচ্ছাকৃতভাবেই বারবার তাঁকে অপমান করছে কেন্দ্র। বলেন, “আমি যখন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অনুষ্ঠানে গিয়েছি, তখন কী হয়েছিল আপনারা দেখতে পেয়েছেন। কোভিড নিয়ে বৈঠকে আমাকে ডেকেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি”। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। “কিন্তু গিয়ে দেখি রাজ্যপাল, বিধায়ক, বিরোধী দলনেতা ও কেন্দ্রীয়মন্ত্রীরা রয়েছেন। বিজেপি নেতাদের মাঝে আমি একা।” বৈঠকের খবরও ঠিক করে তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মমতার।

মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, খালি চেয়ারের ছবি তোলে ভুল তথ্য পরিবেশনের চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা রিপোর্ট দিতে চাই। রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে দিই। তারপর তাঁকে বলি, অনুমতি অনুমতি নিয়েই আমি দিঘায় যাচ্ছি। তাহলে আমাদের দোষ কোথায়?”

ইয়াস হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত ভুলে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, সব দফতর একসঙ্গেই কাজ করছে। এখানে সংঘাতের প্রসঙ্গ না টানাই ভালো। কিন্তু শুক্রবার দিন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক এবং তারপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কেন্দ্রের বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের এবং রাজ্যপালের টুইট বার্তায় আক্রমণ তাঁকে যে ব্যথিত করেছে সেই কথা স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী।

 

Previous articleবাংলায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরোধীনেতা, অন্য রাজ্যে নয় কেন, শোরগোল গোটা দেশে
Next articleমাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢুকছে বর্ষা