ওজনদার নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হলেই এখানে অস্থিতিকর পরিস্থিতি হয়, কোর্টে CBI

“হেভিওয়েট নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হলেই এ রকম অস্থিতিকর পরিবেশ তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গে৷ নারদ-মামলা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এই প্রথম নয়, বিচ্ছিন্নও নয়। এটাকে ‘টেমপ্লেট আচরণ’ বলা যায়”।  হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে মঙ্গলবারের সওয়ালে একথা বলেছেন দেশের সলিসিটর জেনারেল তথা CBI আইনজীবী তুষার মেহেতা৷  মেহতা বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আমি আপনাদের কাছে জানতে চাইছি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে CBI কোনও তদন্ত করলে, সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া কী হওয়া উচিত? এই বিষয়টিও আদালতের নজরে রাখা দরকার।’’

মেহেতা তাঁর সওয়ালে কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল রাজীব কুমার এবং তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “পুলিশ কর্তা রাজীব কুমারের বাড়িতেও যখন CBI গিয়েছিলো, তখনও তাঁদের হেনস্থা হতে হয়েছিলো৷ হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে ধরনা দেওয়া হয়েছিল। CGO কমপ্লেক্সের বাইরেও দীর্ঘদিন ঘেরাও এবং ধরনা কর্মসূচি চলেছে৷ মদন মিত্রর গ্রেফতারির সময়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। CBI-এর গাড়ি ভাঙচুর হয়েছিল, CBI-এর কনস্টেবল আহতও হয়েছিলেন”।

মেহেতা বলেন, “২০১৪ সালেও এই ঘটনা হয়েছে। গ্রেফতার করা মাত্রই সাংবাদিক বৈঠক হয়েছে। তার পরের দিনই বিক্ষোভ হয়েছে। হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এই সব কিছু রাজ্য সরকারের সমর্থনে হয়েছে। এতো শুধু CBI অফিসারদের নিরাপত্তাই নয়, বিচারব্যবস্থার উপরেও হুমকি।”

তুষার মেহেতা বলেন, “দেশে বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন, বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিও এর আগে গ্রেফতার হয়েছে সারা দেশে। তা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে, কিন্তু বাংলার মতো এই ধরনের হামলার ঘটনার নজির নেই। নারদ মামলায় ৪ জন গ্রেফতার হবার পর যা ঘটেছে, তা কল্পনা করা যায়না”৷ মেহেতা বলেন, “সেদিন গোটা ঘটনায় বিচারব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। যে মন্ত্রীরা সেদিন ঘেরাও করেছিলেন, তাঁরা

সাধারন মানুষ নন, তারা সাংবিধানিক পদের অধিকারী। এরাজ্যে যখনই উঁচু পদে থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়, তখনই এই ধরনের পরিকল্পিত বিক্ষোভ এবং হামলার ঘটনা ঘটে”।

◾বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় – “আগের ঘটনাগুলির সময় কি অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনের আবেদন করেছিলেন এবং করে থাকলে, সে আবেদন কি মঞ্জুর হয়েছিল?”

 

◾বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়, মেহেতাকে – “নারদ-মামলায় ঘেরাও বা ধরনা’র সঙ্গে যদি অভিযুক্তদের প্রত্যক্ষ যোগ বা মদতের প্রমাণ না থাকে, তাহলে এদের জামিন কেন বাতিল করা হবে ?”

◾বিচারপতি সৌমেন সেন, মেহেতাকে – “আগের যে ধরনা বা ঘেরাও-এর কথা বলছেন, সেই সময় যদি বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত না হয়ে থাকে, তাহলে সেই উদাহরন এখন কিভাবে যুক্তিসঙ্গত ?”

 

◾বিচারপতি সৌমেন সেন – এই ঘটনাগুলোয় কাজে বাধা দেওয়ার জন্য CBI কি কারও বিরুদ্ধে FIR করেছিল? একজন অভিযুক্তকে যখন আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে, তখন আপনার করা অভিযোগগুলোর কী সম্পর্ক?

 

◾ বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়- সাধারণ মানুষের উপর গোটা ঘটনা প্রভাব ফেলবে। কিন্তু এই অভিযুক্তরা যদি জড়িত না থাকেন তাহলে কেন তাঁরা ভুক্তভোগী হবেন?

 

ফের শুনানি শুরু হবে দুপুর ২টোয়৷

Previous articleরামদেবের বিতর্কিত অ্যালোপ্যাথি মন্তব্যের জের, অতিমারিতে ‘Black Day’ পালন চিকিৎসকদের
Next articleবৈঠকে অনুপস্থিত: প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে শো-কজ কেন্দ্রের, কড়া জবাব তৈরি আলাপনের