সুবিধাবাদী আর কাকে বলে! বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রচারের হাওয়া দেখে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (rajib banerjee) ভেবেছিলেন মোদির দলই বুঝি ক্ষমতায় আসবে। তাই আগেভাগে ক্ষমতার বৃত্তে থাকার লোভে তৃণমূল কংগ্রেসকে বেইজ্জত করে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তৃণমূল মন্ত্রিসভায় ক্ষমতার ক্ষীর চেটেপুটে খেয়ে ভোটের মুখে দলকে ছুরি মারার কাজটা করেছিলেন দলবদলু রাজীব। শুভেন্দু অধিকারীর অনুকরণে ‘আমরা দাদার অনুগামী’ নামে ফাঁপা প্রচার তুলে দল ছাড়ার আগে বলেছিলেন, তৃণমূলে নাকি সম্মান পাচ্ছেন না তিনি। দমবন্ধ করা পরিস্থিতি। তাই খোলা হাওয়া পেতে বিজেপিতে গিয়ে নাম লেখান।
ভোটের পরই ফের ভোলবদল ‘রাজনৈতিক ধান্ধাবাজ’ রাজীবের। ডোমজুড় কেন্দ্র নিয়ে হম্বিতম্বি করেও সেখানে লজ্জার হার হয়েছে তাঁর। নিজের বিধায়ক হওয়া হয়নি, বিজেপিও ক্ষমতায় আসেনি। ফলে ভোটের আগে যে অঙ্ক কষে তৃণমূল ছেড়েছিলেন তা পুরোপুরি চৌপাট। অথচ ক্ষমতার বৃত্তে না থাকলেও চলবে না। অতএব শুরু হয়েছে নতুন কৌশল নেওয়া। পরিচিতদের মাধ্যমে ফিলার পাঠানো থেকে তৃণমূলের মন জোগানো কথা টুইট করে ফের ক্ষমতার আশেপাশে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা। তারই সর্বশেষ নমুনা দেখা গেল মঙ্গলবার রাজীবের ৩৫৬ ধারার বিরোধিতা করে লেখা টুইটে। সত্যিই যদি ৩৫৬ ধারা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের মতামতের বিরোধী তিনি হয়ে থাকেন তাহলে তা বিজেপির দলীয় সভায় গিয়ে বললেন না কেন? তার বদলে কেন প্রকাশ্যে টুইট করলেন? কারণটা অতি পরিষ্কার। তা হল, এটা যত না বিজেপি নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য, তার চেয়ে অনেক বেশি তৃণমূলকে বার্তা দেওয়া। বলা ভাল, তৈলমর্দন। বোঝানো, দেখ আমি কিন্তু তোমাদের সুরেই কথা বলছি…!
রাজনৈতিক মহলে এও শোনা যাচ্ছে, ক্ষমতালোভী রাজীব শুধু তৃণমূলে ঢুকতেই মরিয়া নন, এমনকি তৃণমূলের টিকিটে কোনও একটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ারও মনোবাসনা আছে তাঁর। ভোটের মুখে দলকে অস্বস্তিতে ফেলে, পিছন থেকে ছুরি মেরে চার্টার্ড প্লেনে দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের বাড়িতে মিটিং করেছিলেন কী করে রাজ্যে তৃণমূলকে হারানো যাবে! আর এখন ভোটে হেরে নির্লজ্জের মত তোষণনীতি দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের মান ভঞ্জনের চেষ্টায় নেমেছেন। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে এতটাই বেপরোয়া এই দলবদলু প্রাক্তন মন্ত্রী। শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূল কংগ্রেসও অবাক চক্ষুলজ্জাহীন রাজীবের এহেন কীর্তি দেখে।
আরও পড়ুন- ভ্যাকসিন নষ্ট হলে করোনা টিকা প্রাপ্তি কমবে, রাজ্যগুলিকে স্পষ্ট বার্তা কেন্দ্রের