চিরাগে ক্ষুব্ধ পাঁচ এলজেপি সাংসদ দল ছাড়ার পথে

চিরাগ পাসোয়ান

লোকসভায় লোক জনশক্তি পার্টির (LJP) সাংসদ মোট ছ’জন। তার মধ্যে পাঁচজনই বিদ্রোহী এবং দল ছাড়ার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে। ফলে বিহারের প্রবাদপ্রতিম দলিত নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর বছরখানেকের মধ্যেই অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে তাঁর হাতে গড়া দল। বিদ্রোহী সাংসদদের বিক্ষোভের তির রামবিলাস পুত্র চিরাগ পাসোয়ানের (chirag paswan) দিকে, বর্তমানে যিনি এলজেপির সভাপতি এবং লোকসভায় দলের নেতা। একসঙ্গে পাঁচ সাংসদ দল ছাড়ার ঘোষণা করে স্পিকারকে অনুরোধ করেছেন তাঁদের যেন আর এলজেপি সদস্য হিসাবে ধরা না হয়। সূত্রের খবর, বিদ্রোহী পাঁচ সাংসদ সম্ভবত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডিইউতে (JDU) যোগ দিতে চলেছেন। আর তা বাস্তবায়িত হলে চিরাগের বিরুদ্ধে নীতীশের রাজনৈতিক প্রতিশোধ সম্পূর্ণ হবে বলে মত রাজনৈতিক শিবিরের।

গত বছর বিহার বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই এনডিএর দুই শরিক জেডিইউ ও এলজেপির মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে। রামবিলাসের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র চিরাগ পাসোয়ান পার্টির সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন, মোদির নেতৃত্ব মানলেও বিহারে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদে চায় না এলজেপি। এনডিএ না ছেড়েই নীতীশের দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেন চিরাগ। অভিযোগ ওঠে, নীতীশের বিরুদ্ধে চিরাগের এই অবস্থানে ইন্ধন আছে বিজেপির। ভোটের ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, এলজেপি মুছে গেলেও বহু আসনে তাদের ভোট কাটাকাটির ফলে হেরে যান জেডিইউ প্রার্থীরা। এই ঘটনায় এলজেপির উপর ব্যাপক ক্রুদ্ধ হন নীতীশ। ঘটনা পরম্পরায় দেখা যাচ্ছে, এলজেপির যে পাঁচ সাংসদ দলত্যাগের ঘোষণা করেছেন তাঁরা সকলেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনে চিরাগের নীতীশ-বিরোধী কৌশলের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে, চিরাগ পাসোয়ানের ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্যই বিহার বিধানসভায় মুছে গিয়েছে রামবিলাসের দল। এলজেপির ভরাডুবির জন্য দলের সভাপতি চিরাগই দায়ী। গত এপ্রিলে এলজেপির অন্যতম নেতা কেশব সিং চিরাগের বিরুদ্ধে দলের কর্মীদের ঠকানোর অভিযোগ তুলে জেডিইউতে যোগ দেন। তারপর থেকেই চিরাগের বিরুদ্ধে তাঁর দলের অভ্যন্তরে অসন্তোষ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। লোকসভায় এলজেপির ভাঙনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রামবিলাসের ভাই ও চিরাগের কাকা সাংসদ পশুপতি কুমার পরস। তিনি নীতীশের দলের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন।

আরও পড়ুন-কোটি কোটি টাকার জমি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাম মন্দির ট্রাস্ট, CBI তদন্তের দাবি

লোকসভায় মোট ছ’জন সাংসদ রয়েছে এলজেপির। দলত্যাগী পাঁচ বিক্ষুব্ধ সাংসদের মধ্যে রয়েছেন চিরাগের কাকা পশুপতি কুমার পরস, চন্দন সিংহ, বীণা দেবী, প্রিন্স রাজ ও মেহবুব আলি কেশর। একসঙ্গে পাঁচজন দল ছাড়লে পড়ে থাকবেন একা দলনেতা চিরাগ পাসোয়ান। সেক্ষেত্রে এনডিএতে গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে থেকে যেতে হবে লোক জনশক্তি পার্টিকে।

Previous articleফের ভাঙন! ১০০ টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে যোগ দিল তৃণমূলে
Next articleদলত্যাগীদের ‘চর্বি ঝড়া’র সঙ্গে তুলনা করলেন দিলীপ ঘোষ, পাল্টা দিলেন কুণালও