আজ 72তম জন্মদিনের দিনই হিংসা-সংলাপ মামলায় কলকাতা পুলিশের ভার্চুয়াল জেরার মুখোমুখি হতে হল বিজেপির ফিল্মস্টার Mithun Chakrabortyকে। মিঠুনের শিবিরসূত্রে খবর, আজ বুধবার সকাল দশটা থেকে মানিকতলা থানার তদন্তকারী অফিসারের মুখোমুখি হয়েছেন মিঠুন। প্রায় পৌনে দু ঘন্টা জেরা চলে। কলকাতার একটি হোটেল থেকে ভার্চুয়াল জেরায় ছিলেন মিঠুন। বিকেলে তাঁর শুটিং আছে।

বিধানসভা ভোটের আগে হঠাৎ BJPর মঞ্চে উদয় হন মিঠুন। মুখে বড় বড় সংলাপ: মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে। আমি জাত গোখরো ইত্যাদি।

এরপর ভোট ঘিরে সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলে বাংলা সিটিজেন্স ফোরামের মৃত্যুঞ্জয় পাল মানিকতলা থানায় অভিযোগ করে বলেন,” মিঠুন সন্ত্রাসে ইন্ধন দিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন।” মৃত্যুণের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত পুলিশের তদন্তের রিপোর্ট চায়। পুলিশ এফ আই আর করে তদন্ত শুরু করে।

এদিকে এফ আই আর নস্যাৎ করতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মিঠুন। কিন্তু হাইকোর্ট কোনো স্থগিতাদেশ না দিয়ে মিঠুনকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলে। কোভিড পরিস্থিতিতে শারীরিকভাবে না এসে ভার্চুয়াল জেরার নির্দেশ দেয়।


মিঠুনশিবিরের খবর, তাঁদের সঙ্গে মানিকতলা থানার কিছু ইমেল বিনিময়ের পরেই আজকের দিনটি চূড়ান্ত হয়েছে। কারণ দিনটি শুভ বলে মনে করেন মিঠুন।


মিঠুনের বক্তব্য: এগুলি সিনেমার ডায়লগ। অভিযোগকারীদের বক্তব্য: মিঠুন তো রামকৃষ্ণের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন। ভোটের আগে তো ‘যত মত তত পথ’ বলেননি। বেছে বেছে হিংসাত্মক সংলাপ নিয়ে বীরত্ব দেখালেন বলেই তাঁর দলের কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে সন্ত্রাস করেছে।

মিঠুনের শিবিরসূত্রের খবর, মিঠুনের পাশে ছিলেন আইনজীবী বিমান সরকার। কিন্তু কিছু প্রশ্নে মিঠুন তদন্তকারীদের সন্তুষ্ট করতে সম্ভবত পারেননি। বিষয়টি মোটামুটি এরকম:

প্রশ্ন: আপনি ‘ মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে’ ধরণের সংলাপ কেন বলেছেন?

মিঠুন: আমি ফিল্মস্টার। এই সংলাপ আগেও বলেছি। এটা নেহাতই ফিল্মি ডায়লগ।
প্রশ্ন: আপনি কটা ছবিতে কত চরিত্রে অভিনয় করেছেন?

মিঠুন: তিনশোর বেশি।

প্রশ্ন: তাহলে এত সংলাপ থাকতে শুধু মারব ধরব গোছের হিংসাত্মক সংলাপ ভোটের আগে সব জায়গায় বললেন কেন?
মিঠুন: ( অস্বস্তিতে) এগুলো পপুলার ডায়লগ তাই।
প্রশ্ন: হঠাৎ এগুলোই বলতে শুরু করলেন কেন সব জায়গায়?
মিঠুন: হিট সংলাপ তাই।
প্রশ্ন: আপনি বিজেপি নেতা হিসেবে বলেছেন নাকি মঞ্চের শিল্পী হিসেবে?
মিঠুন: এগুলো ফিল্মের ডায়লগ।
মিঠুনশিবিরের খবর, এ ধরণের আরও কিছু প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়ে যান মিঠুন। তবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পুলিশ সূত্রে কোনো খবর মেলেনি। তারা বলছেন যা বলার হাইকোর্টে বলবেন। শুক্রবার শুনানি আছে।
অভিযোগকারী মৃত্যুঞ্জয় পালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, আদালতের নির্দেশে এই জেরা হওয়ারই ছিল। আমরা পরবর্তী শুনানিতে বলব ফিল্মি ডায়লগ বলে অশান্তি ছড়িয়ে পার পেতে পারেন না তারকারা।