সুখবর,রাজ্যের স্কুলগুলিতে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি এবং লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ করতে চলেছে SSC

গতবছর কোভিড সংক্রমণের সময় রাজ্য সরকার সংক্রমণের হার কমাতে বাধ্য হয়ে লকডাউনের পথে হেঁটে ছিল । এবছরও তার অন্যথা হয়নি । দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন । কার্যত লকডাউনের ফলে কর্মসংস্থানের অভাব আরও প্রকট হয়েছে। শিক্ষা পর্ব শেষ করার পরও প্রচুর ছেলেমেয়ে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন, তবু চাকরি পাচ্ছেন না। রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া। নতুন করে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বেরোয়নি কোনও বিজ্ঞপ্তি।
এই পরিস্থিতির মাঝে চাকরি প্রার্থীদের জন্য সুখবর । খুব শীঘ্রই স্কুল সার্ভিস কমিশন রাজ্যে গ্রন্থাগারিক, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ করতে চলেছে। এই মর্মে শূন্যপদের বিস্তারিত তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন। আগামী ২৫ জুনের মধ্যে তা জমা করতে হবে।

গ্রুপ-সি পদে আবেদনের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পাশ এবং গ্রুপ-ডি এর ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণী পাস যোগ্যতা লাগবে।  গ্রন্থাগারিক পদে লাইব্রেরি সায়েন্সের ডিগ্রি লাগবে।
দীর্ঘদিন পরে রাজ্যে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ হতে চলেছে। শেষবার এই পদে বিজ্ঞপ্তি বের হয়েছিল ২০১২ সালে। নিয়োগ শেষ হয়েছিল ২০১৩ সালে। দীর্ঘ ৯ বছর পরে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বের হবে। ফলে শূন্যপদের সংখ্যা যে ভালোই হবে তা আশা করা যায়।

পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেক্রেটারির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ আঞ্চলিক স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (পূর্ব / পশ্চিম দক্ষিণ / উত্তর / দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে গ্রন্থাগারিক, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ – ডি পদে শূন্যপদের হিসাব জমা করতে।

২০০৯ অনুসারে ডি.ই. (এসই) কমিশনের আঞ্চলিকগুলিতে শূন্যপদ প্রেরণ করবে। সেখান থেকে শূন্যপদের বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রীয় কমিশনে পাঠাতে হবে।

ডিআই-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী সাত দিনের মধ্যে শূন্যপদের হিসাব সংগ্রহ করে আঞ্চলিকগুলিতে পাঠাতে। এরপর  এসএসসির আঞ্চলিক কমিশন সেই শূন্যপদের বিস্তারিত হিসাব আগামী ২৫ জুনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনে পাঠাবে। এরপরেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বের করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেক্ষেত্রে জুলাই মাসেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনে প্রথম গ্রুপ ডি পরীক্ষা হয় ২০০৯ সালে। তখন গ্রুপ ‘সি’ গ্রুপ ‘ডি’ এবং লাইব্রেরী সায়েন্স ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালের পরীক্ষায় লাইব্রেরী সায়েন্স ছিল না।
লাইব্রেরী সায়েন্স এর ক্ষেত্রে নিজস্ব সাবজেক্টের ওপরে ৭০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছিল । তার মধ্যে ৬০ নম্বরের পরীক্ষা হবে লাইব্রেরী সায়েন্স ও ইনফরমেশনের ওপর এবং ১০ নম্বর জিকে ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ।এটি স্কুল সার্ভিস কমিশনের তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী বলে তিনি জানিয়েছেন।
ক্লার্ক পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ছিল ৩০ নম্বরের। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং জিকে ছিল হাফ নম্বর করে। ক্লার্কের মেন পরীক্ষা ছিল ৩০ নম্বরের, যার মধ্যে ১৫ নম্বর ছিল অঙ্ক এবং ১৫ নম্বর ইংরেজি ।তিনি জানিয়েছেন, ১৫ নম্বরের অঙ্ক পরীক্ষার অঙ্কগুলিকে কষে দেখাতে হবে । প্রত্যেকটি প্রশ্নের মান ছিল ৩ নম্বরের । ১৫ নম্বর ইংরেজিতে থাকবে এন্টনিম, সিনোনিম, কমন এরর, ইউজ অফ ওয়ার্ডস, একটা প্যারাগ্রাফ বা লেটার বা ট্রান্সলেশন করতে হবে।
গ্রুপ ‘ডি’র ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি টেস্ট ৩০ নম্বরের। এরমধ্যে ২০ নম্বর ছিল জিকে এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং ১০ নম্বরের অঙ্ক । ক্লার্ক পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ নম্বরে যেহেতু হাফ নম্বর করে একটি প্রশ্নের মান, তাই ৬০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কিন্তু গ্রুপ ‘ডি’র ক্ষেত্রে ৩০ টি প্রশ্ন ছিলো। যার মধ্যে ২০টি ছিল কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং জিকে এবং ১০ নম্বর ছিল অঙ্ক । প্রত্যেকটির মান ১ নম্বর করে। গ্রুপ ‘ডি’র ক্ষেত্রে মেন পরীক্ষায় ইংরেজি ছিল ৮ নম্বরের এবং অঙ্ক ৭ নম্বরের। ইংরেজির ৮ নম্বরের মধ্যে থাকবে synonym-antonym, কমন এরর, শূন্যস্থান পূরণ করে দিতে হবে। সাতটি অঙ্কের মধ্যে দুই থেকে তিনটি অঙ্ক কষে দেখাতে হবে। ২০০৯ সালে রাজ্য সরকার প্রথম এসএলএসটি এর মাধ্যমে প্রথম নন টিচিং স্টাফ গ্রুপ ‘ডি’ তে নিয়োগ করে । তখন লাইব্রেরিয়ান গ্রুপ ‘ডি’ এবং গ্রুপ ‘সি’ ছিল। ২০১৩ সালে লাইব্রেরিয়ান পদ তুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকে লাইব্রেরিয়ান এর জন্য কোনও পরীক্ষা হয়নি। সেই সময় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই একাডেমিক ছিল এবং ইন্টারভিউ ছিল । যেহেতু স্কুল সার্ভিস কমিশন সেগুলি তুলে দিয়েছে, তাই লিখিত পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে।

Previous articleহাত বাড়ালেই বন্ধু! ইয়াস বিধ্বস্ত সাগরের মানুষের পাশে বেলানগরের তরুণ-তরুণীরা
Next articleমাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে মূল্যায়ন কীভাবে? জানানো হবে শুক্রবার, জুলাইয়ে ফল