তৃণমূল বলছে রাবণ, বিজেপির কথায় মধুলোভী: সুনীলে তীব্র আপত্তি দুই দলেই

সাংসদ সুনীল মণ্ডলের (sunil mondal) এখন আম ও ছালা দুইই যাওয়ার অবস্থা! ভোটের আগে তৃণমূল (tmc) ত্যাগ করে বিজেপিতে (bjp) গিয়েও সম্মান পাচ্ছেন না বলে পুরনো দলে ফেলার অজুহাত তৈরি করতেই তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি আক্রমণ। সাংসদ সুনীলকে বিশ্বাসঘাতক ও সুযোগসন্ধানী আখ্যা দিয়ে তৃণমূল যখন বলছে ওকে দলে ফেরানো যাবে না, তখন বিজেপি বলছে ওঁর মত ধান্ধাবাজ নেতাদের গেরুয়া শিবিরে জায়গা নেই। ভুল রাজনৈতিক পদক্ষেপের জেরে সুনীল মণ্ডলের এখন দুকূল ডোবার উপক্রম। এর মধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকারের কাছে চাপ বাড়ানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনীল মণ্ডলের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে বলে লোকসভা সূত্রে সর্বশেষ খবর।

আর এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝে সুনীল মণ্ডলের নিজের কেন্দ্রেই তাঁকে ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরের অনীহা ও আপত্তি চোখে পড়ার মত। শুক্রবার জামালপুর এলাকায় সাংসদকে রাবণ সাজিয়ে পোস্টার ও ফ্লেক্স ছড়ানো হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের মুখের পাশে সুনীল মণ্ডলের ছবি রেখে তাঁকে ‘রাবণ রাজনীতিক’ আখ্যা দিয়ে তৈরি হয়েছে ওই ফ্লেক্স। তাতে সাংসদকে ‘বাংলা ও বাঙালির শত্রু’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। এমনকি সেই ফ্লেক্স নিয়ে মিছিলও করেছেন তৃণমূল কর্মীরা। যা নিয়ে আলোড়ন রাজনৈতিক মহলে। সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে তাদের আপত্তির কারণ স্পষ্ট করেছেন জেলা তৃণমূলের সম্পাদক প্রদীপ পাল। তিনি বলেন , তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে লড়ে সুনীল মণ্ডল সাংসদ হয়েছিলেন। অথচ বিধানসভা ভোটের আগে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী-সহ দলের পদাধিকারীদের কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রকাশ্যে। কিন্তু ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর এখন সুনীল ভোলবদল করেছেন। নানা অজুহাত খাড়া করে তৃণমূলে ফেরার সুযোগ খুঁজছেন। কিন্তু দলের কর্মীরা কেউই চান না যে সুনীল আবার তৃণমূলে ফিরুন। সেই দাবির বিষয়টি তুলে ধরতেই রাবণ ফ্লেক্স টাঙিয়ে অভিনব প্রতিবাদ।

আরও পড়ুন:পরিবর্তন হচ্ছে না বিশ্ব টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভারতের প্রথম একাদশ, ইঙ্গিত শ্রীধরের

একদিকে তৃণমূলে যখন তাঁর ব্যাপারে তীব্র আপত্তি তখন তাঁর বর্তমান দল বিজেপিও তাঁকে ছেড়ে কথা বলছে না। জামালপুর বিধানসভায় বিজেপির আহ্বায়ক জিতেন ডকালের কটাক্ষ, সুনীল মণ্ডল হলেন নীতি-আদর্শহীন, ক্ষমতার মধুলোভী এক রাজনীতিক। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসছে, এমন হাওয়া উঠতেই উনি বিধানসভা ভোটের আগে ক্ষমতার মধু খাওয়ার বাসনা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপি জিততে না পারায় এখন উনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। এই বিজেপি নেতার কথায়, আমরাও চাই না সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে থাকুন। পরিস্থিতি যা, তাতে রাজনৈতিকভাবে চরম বেকায়দায় দলবদলু সাংসদ সুনীল মণ্ডল। যুযুধান দুই পক্ষই তাঁর বিষয়ে এক মেরুতে দাঁড়িয়ে। প্রশ্ন হল, রাজনৈতিক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের জন্য শেষ পর্যন্ত কি তাঁর কাছে দুই শিবিরের দরজাই বন্ধ হতে চলেছে ?

Previous articleপরিবর্তন হচ্ছে না বিশ্ব টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভারতের প্রথম একাদশ, ইঙ্গিত শ্রীধরের
Next articleবকখালির সমুদ্রে ট্রলার ডুবি, একাধিক মৎস্যজীবীর নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা