কঠিন পরিস্থিতিতে উত্তরাধিকার নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, সিআইআই-আইডব্লিউএন-র অনুষ্ঠানে মিলল পরামর্শ

অতিমারি পর্বে বহু মানুষ তাঁদের নিকট আত্মীয়দের হারিয়েছেন। কঠিন অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখোমুখি কমবেশি সকলেই।পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্যকে হারিয়ে অনেক পরিবারই অসহায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শুক্রবার সিআইআই-আইডব্লিউএন(CII-IWN) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে আলোচনার মুল বিষয়বস্তু ছিল,’পরিকল্পিত উত্তরাধিকারী’।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অ্যাকুইলার ম্যানেজিং পার্টনার এবং আইডব্লিউএনের চেয়ারপার্সন, সুচরিতা বসু (Sucharita Basu) বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে মৃত্যুভয় নিয়ে বেঁচে থাকার বিষয়টি খুবই হতাশার এবং মৃত্যু আশঙ্কায় দিন কাটানো হৃদয় বিদারকও বটে। আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের কাছের বন্ধু, প্রিয়জন থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনদেরও হারিয়েছি। এমনকি আরও অনেকেই এই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে নিজের পরিবার-পরিজনদের অসহায় অবস্থায় ফেলে অকালে মারা গেছেন। তাঁদের জন্যেও আমাদের প্রান কেঁদেছে। এই সময় আমাদের উচিত যারা আমাদের উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল, তাঁদের আমাদের অবর্তমানে যাতে কোনওভাবে অসুবিধায় না পড়তে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা। সেজন্য একমাত্র উপায় তাঁদের নামে উইলস বা ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিকল্পিত উত্তরাধিকারীর হাতে সম্পত্তি তুলে দেওয়া। যা এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
সম্পত্তির ‘পরিকল্পিত উত্তরাধিকার’ নিয়ে পর্যালোচনা করে সিনিয়র অ্যাডভোকেট(Senior Advocate), সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (S N Mookherjee) (গোপাল মুখোপাধ্যায়) জানান, সম্পত্তি কারও নামে লিখে দেওয়া বা উইল তৈরির সময় রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী, সেটির রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক নয়। সময়বিশেষে উইল প্রত্যাহারও করা যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে লিঙ্গের নিরপেক্ষতার বিষয়টি কার্যকর হয়েছে। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে ট্রান্সজাকশন স্কয়ারের প্রতিষ্ঠাতা, গিরিশ ভানভরী(Girish Vanvari) জানান, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পরিকল্পনার বিষয়টি বয়সের উপর নির্ভর করে না। তবে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে বিষয়টি চল্লিশ বছরের নীচেই হওয়া বাঞ্ছনীয়।

অতিমারি পর্বে আমাদের জীবন এতটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে যে নিজেদের অদূর ভবিষ্যত নিজেদের কাছেই অজানা হয়ে পড়েছে। আমরা সকলেই জীবনের এমন এক কঠিন সময়ে এসে পড়েছি যে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার সময় চলে এসেছে। এবং তা কেমনভাবে করা যায়, সে সম্পর্কে প্রত্যেকের জানা প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে বলে জানান একুআইএলওয়ের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট শুভশ্রী পানি ।
উত্তরাধিকার বিষয়টি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া যা পদ্ধতিগতভাবে পরিকল্পনা করা এবং কার্যকর করা প্রয়োজন। তবে, এই মহামারী পর্বে সুস্থভবে বেঁচে থাকা একটি চ্যালেঞ্জ। অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে সাধারণত পারিবারিক ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের বিষয়টি প্রযোজ্য হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মালিকের স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েরাই ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। পাশাপাশি, ব্যবসায়ের উত্তরাধিকারসূত্রে পরিকল্পনা এর মূল্য, শেয়ারহোল্ডারদের চাহিদা, কর্মচারীদের প্রতি কর্তব্য এবং পণ্য সরবরাহের বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মহামারী পর্বে এটি একটি অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া হওয়া উচিত এবং সেইসঙ্গে উত্তরসূরিগুলির জন্য নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট রাখা অনিবার্য।

আরও পড়ুন- ভুয়ো IAS কাণ্ড: রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কোনও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প নয়, নির্দেশ নবান্নের

Previous articleভুয়ো IAS কাণ্ড: রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কোনও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প নয়, নির্দেশ নবান্নের
Next articleভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে গ্রেফতার দেবাঞ্জন ঘনিষ্ঠ শান্তনু