ভুয়ো টিকা: রাজনীতির প্যাঁচ কষে ময়দানে শুভেন্দু, কেন্দ্রীয় তদন্ত চেয়ে চিঠি হর্ষবর্ধনকে

কসবা ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের ঘটনায় গোটা রাজ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘটনার মূল পান্ডা দেবাঞ্জনকে(debanjan)। এরই মাঝে ভুয়ো টিকাকাণ্ডে রাজনীতির অংক কষে ময়দানে নামলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(suvendu Adhikari)। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে(health Minister Harsh Vardhan) চিঠি দিলেন তিনি। দু’পাতার ওই চিঠিতে বিস্তারিত বর্ণনার পাশপাশি ঘটনায় তৃণমূল সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন শাসকদলের দাপুটে নেতাদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি ও যোগসুত্র নিয়েও। তবে তৃণমূল সাংসদ মিমির উদ্যোগে এই গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যেই সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে সরকার। পাশাপাশি তদন্ত করছে কলকাতা পুরসভাও। এরই মাঝে শুভেন্দুর তরফে কেন্দ্রকে এই চিঠি পুরোপুরি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল। এখনতো দাবি তোলা শুভেন্দুকে পাল্টা তোপ দেখেছেন রাজু তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

জানা গেছে, শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘ভোটার স্লিপের মতো টিকার কুপন দেওয়া হচ্ছে শাসকদলের তরফে। শুধু তাই নয়, যেখানে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য টিকাকরণে প্রতি দিন রেকর্ড করছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের অনীহায় এই কর্মসূচি অনেক পিছিয়ে পড়ছে।’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘ওই টিকা শিবির থেকে যাঁরা আধার কার্ড দেখিয়ে টিকা নিয়েছেন, তাঁরা কেউই টিকার শংসাপত্র পাননি। শুধু কসবা-ই নয়, এ ধরনের শিবির চালানো হয়েছিল আমহার্স্ট স্ট্রিট, সোনারপুরেও। যেখানে কয়েকশো মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আর এ সবই হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের নজরদারিতে।’

আরও পড়ুন:সায়নী ঘোষের ‘উপদেষ্টা, পথপ্রদর্শক’ কে? জানালেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে শুভেন্দু আরও লিখেছেন, ‘ধৃত দাবি করেছেন, তিনি কোভিশিল্ডের টিকা দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে। যদি সেটাই হয়ে থাকে তাহলে উনি এত টিকা পেলেন কোথায়? তাহলে কি সরকারি আধিকারিকদের নাকের ডগা দিয়েই এসব চলছে। আর যদি সেগুলি টিকা না হয়ে থাকে, তাহলে কী? দিনের পর দিন একজন কীভাবে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে এসব করছে। তার তদন্ত হওয়া দরকার। না হলে সাধারণ মানুষের ভরসা উঠে যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের টিকাকরণের এই উদ্যোগের উপর থেকে।’ শুধু তাই নয়, শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি নিয়ে সরব হয়েছেন শুভেন্দু।

এদিকে এই ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা তোপ দেগে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ওনার মন্তব্য অনেকটা গরুর গাড়ির হেডলাইটের মতো। শুভেন্দু সিবিআইয়ের কথা বলছে অথচ নারদ কান্ডে শুভেন্দু অধিকারীর নাম আছে এফআইআর-এ। সারদা- নারদা মামলায় শুভেন্দুর গ্রেফতার হওয়া উচিত। ওর মুখে সিবিআই মানায় না। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দেবাঞ্জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তদন্ত চলছে।’ পাশাপাশি শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে দেবাঞ্জন এর ছবি প্রসঙ্গে যে অভিযোগ শুভেন্দু করেছেন তার পাল্টা দিয়ে কুনাল ঘোষ বলেন, ‘তাহলে তো ব্যাংক জালিয়াতদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে। আমি এতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন নই যে বলব নরেন্দ্র মোদি ব্যাংক জালিয়াতি করে বিদেশে গিয়েছিলেন ওদের সঙ্গে। ফলে বিরোধী দলনেতার এইভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।’

 

Previous articleসায়নী ঘোষের ‘উপদেষ্টা, পথপ্রদর্শক’ কে? জানালেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি
Next articleউপনির্বাচনের প্রয়োজন নেই : সায়ন্তন, ‘BJP গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না’, পাল্টা জবাব তৃণমূল সাংসদের