উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগে স্থগিতাদেশ বহাল, আদালতে হাজিরা দিলেন SSC চেয়ারম্যান

উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল রাখলো হাইকোর্ট ৷

শুক্রবার এ সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের এজলাসে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকারকে ডেকে এনে তাঁকে বলেছেন, “এই কমিশন কোন লোকজন চালাচ্ছেন? অবিলম্বে গোটা কমিশনই বাতিল করা উচিত। স্বচ্ছতার সঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ করুন৷ তালিকা ঠিক থাকলে আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশ প্রত্যাহার করতে পারে। ততদিন জারি থাকবে স্থগিতাদেশ”৷

এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সরাসরি ‘অপদার্থ’ বলেও ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট। বিচারপতি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “কমিশনকে এই মুহুর্তে বাতিল করা উচিত। ২০১৯-এর ১ অক্টোবর ইন্টারভিউের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশের পরেও কেন তা প্রকাশ করা হল না?” কমিশনের কাছে এর উত্তর চান বিচারপতি৷ এদিন উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। শুরুতেই বিচারপতি কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেন অনিয়ম করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। বেলা আড়াইটা নাগাদ এজলাসে হাজির হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকার৷ তাঁকে দাঁড় আরও এক দফা অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি৷ তিনি বলেন, “আগামী ৭দিনের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর-সহ ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। যাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের প্রাপ্ত নম্বর দিয়ে খারিজের কারণও দেখাতে হবে। নম্বরের বিভাজন করে তালিকা প্রকাশ করতে হবে”৷ কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিচারপতি জানান, ” ৭ দিনের মধ্যে এই নির্দেশ অনুসারে কাজ সম্পন্ন করে আসুন। সব কিছু খতিয়ে দেখে আদালত পরবর্তী নির্দেশ দেবে”৷

কিছুদিন আগে জানানো হয়েছিলো, পুজোর আগে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে৷ গত ২৯ জুন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তাঁদের ওয়েবসাইটে ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করে৷ এরপরই এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা হয় হাইকোর্টে। মামলাকারীদের অভিযোগ, ইন্টারভিউ তালিকায় বেনিয়ম আছে। ন্যূনতম ঠিক কত নম্বর পেলে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হচ্ছে, তার কোনও উল্লেখই করা হয়নি৷ আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ হচ্ছে না। বেশি নম্বর পেয়েও অনেকেই ইন্টারভিউয়ে ডাক পাচ্ছেন না।” এই অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ৩০ জুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই আইনি জটে ১৪,৩৩৯ পদে নিয়োগ আটকে গিয়েছে।

এই নিয়োগ আদৌ সম্ভব হবে কি’না, তা এখন নির্ভর করছে ৭ দিনের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকার হাইকোর্টে কী রিপোর্ট জমাদেন, তার উপর৷ আগামী শুক্রবার হাইকোর্টে উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ নিয়ে ফের শুনানি৷

আরও পড়ুন:টাকা না দিতে পারায় আড়াই মাস হাসপাতালে পড়ে করোনায় আক্রান্তের মৃতদেহ!

 

Previous articleটাকা না দিতে পারায় আড়াই মাস হাসপাতালে পড়ে করোনায় আক্রান্তের মৃতদেহ!
Next articleপদ্মবনে মুকুল কাঁটা, বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বসলেও কথা বললেন না কেউই