বেটি বাঁচান! মোদিকে চিঠি লিখে যোগীরাজ্যে ‘আত্মঘাতী’ গৃহবধূ

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে ভারতের ‘বেটি’রা কতখানি সুরক্ষিত? সে প্রশ্ন ফের একবার তুলে ধরলেন উত্তরপ্রদেশের এক ছাপোষা গৃহবধূ। লাগাতার গার্হস্থ্য হিংসা শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার(suicide) পথ বেছে নিলেন আগ্রার গৃহবধূ মোনা দ্বিবেদী(Mona diwedi)। যদিও যাওয়ার আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) জন্য এক চিঠি রেখে গেলেন তিনি। যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে(Prime Minister) উদ্দেশ্য করে দুই সন্তানের মায়ের কাতর আবেদন, “মোদীজি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, বাড়ির ভিতরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।” এদিকে অতীতের মতোই যোগীর রাজ্যে নির্যাতিতার মৃত্যুতে পুলিশের ভূমিকায় অবশ্য একই ছবি দেখা গিয়েছে। গার্হস্থ্য হিংসায় ওই গৃহবধূর মৃত্যুতে গ্রেফতার তো দূরের কথা, নিতান্ত অভিযোগটুকুও দায়ের করেনি যোগীর পুলিশ।

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মোনার মৃতদেহ। পরিবারের দাবি ঘরের মধ্যে গুলি চলার শব্দ পেয়ে ছুটে যান তারা। দরজা ভেঙে মোনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যদিও মৃত্যুর আগে তিন পাতার একটি চিঠি লিখেছেন মোনা। সেই চিঠি বর্তমানে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, তার মা নেই বাবা মদ্যপ। স্বল্পশিক্ষিত বলে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে। পর থেকেই চলতে থাকে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার। তাঁর অভিযোগ, “আমার ভাসুর পঙ্কজ এবং দেওর অম্বুজ শাসক দলের সদস্য। গত ১৪ বছর ধরে লাগাতার মারধর ও অত্যাচার করা হচ্ছে আমাকে। কিছু বললেই বর তাড়িয়ে দেবে এই ভয়ে চুপ করে থেকেছি এতদিন। ভাসুর ও দেওর শাসক দলের সদস্য হওয়ায় হুমকি দিয়েছে, ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেউ নেবে না। আজ ১৪ বছর পর মুখ খুলছি‌। আমার কিছু হয়ে গেলে তার জন্য দায়ী থাকবে আমার ভাসুর ও দেওর।” শুধু তাই নয় চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করে তিনি লিখেছেন, “মোদীজি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, বাড়ির ভিতরে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।”

আরও পড়ুন:হিন্দু দেবী কালীকে নিয়ে আপত্তিজনক কার্টুন, নয়া এফআইআরে বিপদ বাড়ল টুইটারের

এদিকে নৃশংস এই মৃত্যুর পর সুইসাইডনোটে সরাসরি ভাসুর ও দেওরের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও কেন তাদের জেরা করা হলো না তার কোনও জবাব মেলেনি যোগীর পুলিশের তরফে। ঘটনায় ন্যূনতম অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেও জানা গিয়েছে। যদিও নিজের চিঠিতেই মোনা লিখেছেন, তার মৃত্যু হলেও অভিযোগ দায়ের করার মতো কেউ নেই। যোগীর রাজ্যে ফের এই ঘটনা উত্তর প্রদেশের মহিলাদের নিরাপত্তা তো বটেই, প্রশ্ন তুলে দিল মোদির স্বপ্নের ‘বেটি বাঁচাও’ প্রকল্প নিয়েও।

 

Previous articleহিন্দু দেবী কালীকে নিয়ে আপত্তিজনক কার্টুন, নয়া এফআইআরে বিপদ বাড়ল টুইটারের
Next articleইউরো কাপের সেমিফাইনালে ডেনমার্ক