নন্দীগ্রাম-মামলার এজলাস বদলে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জির রায় ঘোষণা ৭ জুলাই

মুখ্যমন্ত্রীর দায়ের করা নন্দীগ্রাম- মামলা তাঁর এজলাসেই চলবে কি’না, বিচারপতি কৌশিক চন্দ তা জানাবেন বুধবার, ৭ জুলাই৷

কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি চন্দের এজলাসে গত বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন নন্দীগ্রাম বিধানসভার ফল সংক্রান্ত মামলা স্থানান্তরের আবেদনের শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখা হয়৷ বুধবার, ৭ জুলাই, বেলা ১১টায় বিচারপতি চন্দ জানাবেন, তিনি এই মামলা শুনবেন, না’কি ‘রিলিজ’ করে দেবেন৷ যদি নন্দীগ্রাম- মামলা বিচারপতি চন্দ ছেড়ে দেন, তাহলে নতুন কোনও এজলাসে তা নথিভুক্ত হবে এবং সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর করা মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলবে৷ অথবা মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি খারিজ করে বিচারপতি জানাতেও পারেন নন্দীগ্রাম-মামলা তিনিই শুনবেন৷

গত বৃহস্পতিবার মামলা স্থানান্তরের আবেদনকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে ভার্চুয়ালি সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি৷ ওইদিনের শুনানিপর্বে এজলাসে ভার্চুয়ালি হাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷
হাইকোর্টে ২৪ জুনের সওয়ালে মুখ্যমন্ত্রীর কৌঁসুলি অভিষেক মনু সিংভি নন্দীগ্রাম- মামলার নিরপেক্ষ বিচার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷ বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে নন্দীগ্রাম মামলার বিচার পর্ব চললে, তা কতখানি নিরপেক্ষ হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সিংভি৷ সিংভি বলেন, “আমরা জানতাম মামলাটি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে যাবে। হঠাৎ ১৬ জুন জানতে পারি আপনার বেঞ্চে এসেছে মামলাটি।’’

আরও পড়ুন:নিমেষে ভাইরাল সায়নী ঘোষের টুইট, পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধি নিয়ে এমন কী লিখলেন তৃণমূল নেত্রী

একইসঙ্গে বিচারপতি চন্দের বিজেপি-যোগ নিয়েও অভিযোগ তোলেন সিংভি৷ প্রসঙ্গত তৃণমূলের তরফেও বিচারপতি কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধে আগেই এই একই অভিযোগ করা হয়েছিল। ওইদিন বিচারপতি চন্দকে সরাসরি সিংভি বলেন, “বিচারপতির ভূমিকা পবিত্র। আপনাকে অনুরোধ করব মামলা থেকে সরে যান৷” সিংভি সওয়ালে বলেন,‘‘এই মামলা নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ করা যেতেই পারে। আপনার সঙ্গে বিজেপি-র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আপনি বিজেপি-র লিগ্যাল সেলের কর্তা ছিলেন। বিজেপি-র হয়ে বিভিন্ন মামলায় আপনাকে উপস্থিত থাকতেও দেখা গিয়েছে। তাই আপনার উচিত হবে এই মামলা থেকে সরে যাওয়া’’৷ সিংভি ছাড়াও এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী এস এন মুখোপাধ্যায় এবং সঞ্জয় বসু৷

এই সওয়ালের পর বিচারপতি কৌশিক চন্দ সেদিন বলেন,”আমি এক সময়ে বিজেপি-র লিগাল সেলের প্রধান ছিলাম বলেই আপনাদের অসুবিধা?” তিনি বলেন, “বিভিন্ন আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যোগাযোগের থাকতেই পারে৷ মিঃ সিংভি, আপনি তো কংগ্রেসের। মামলাকারীর অপর আইনজীবী মিঃ মুখোপাধ্যায় বিজেপি-র। তারপরও আপনারা অন্য দলের মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে মামলা লড়ছেন। আর এখানে বিচারপতির পূর্ব- জীবন নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন”৷ সিংভি’র কাছে বিচারপতি জানতে চান, ” আমার সম্পর্কে আপনাদের দু’টি অভিযোগ, প্রথমটি বিচারপতি হবার আগে বিজেপি করতাম এবং দ্বিতীয়টি, আমার বিচারপতির পদ স্থায়ীকরণে মুখ্যমন্ত্রী সুপারিশ করেননি, আপত্তি জানিয়েছেন৷

বিচারপতি সেদিন স্বীকার করেন অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর ছবি আছে৷ তিনি বলেন, “বিজেপির হয়ে যে কেউই মামলা করতে পারে। বিজেপি’র তরফে আমাকে মামলা দেওয়া হয়েছিলো, আমি করেছি৷ আমি যে সময় বিজেপির মামলা করেছি, সেই সময় বিজেপির কোনও প্রভাবই ছিল না।”

পাশাপাশি বিচারপতি চন্দ বলেছিলেন, “আবেদনকারীর পূর্ন অধিকার রয়েছে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানোর। পুনর্বিবেচনার আর্জি আইনিভাবেই দেখা হবে৷ আপাতত রায়দান মুলতুবি রইলো৷”

বুধবার হাইকোর্টে সেই রায়-ই ঘোষণা করতে চলেছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ৷

 

Previous articleনিমেষে ভাইরাল সায়নী ঘোষের টুইট, পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধি নিয়ে এমন কী লিখলেন তৃণমূল নেত্রী
Next articleময়নাগুড়িতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ ৬৬ টি পরিবারের