Wednesday, November 5, 2025

‘বিজেমূল’ বলা ভুল হয়েছে, মানুষ নেয়নি আমাদের, কর্মীদের কাছে স্বীকারোক্তি সূর্যকান্তর

Date:

Share post:

সিপিএম (cpim) সম্বন্ধে রাজনৈতিক মহলে বেশ কয়েকটি বিশেষণ ঘুরে বেড়ায়। কেউ বলেন, জ্যোতিবাবুর (jyoti basu) দলের চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। কেউ বলেন প্রত্যেকবার ওরা নিজেদের ভুল খুঁজে বের করে, আর ফের ঘটা করে সেই ভুল আবার করে। কেউ কেউ তো এও বলেন, জ্যোতিবাবু তো সেই কবে নয়ের দশকে ‘ঐতিহাসিক ভুল’-এর (historical blunder) কথা বলে গিয়েছিলেন, সেই ট্র‍্যাডিশন সমানে চলছে।

সেই ট্র‍্যাডিশনে পা মেলালেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (cpm state secretary suryakanta mishra)। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী কী ভুল হয়েছিল একুশের বিধানসভা ভোটে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দলের বিধায়ক সংখ্যা ‘শূন্য’তে আনার পর অবশেষে সিপিএমের আত্মোপলব্ধি!

কী কী ভুলের তালিকা সামনে এনেছেন সূর্যকান্ত?

১) বিজেপি (bjp) বিরোধিতায় তাঁদের ঘাটতি ছিল। অর্থাৎ বিজেপি-তৃণমূলকে একাসনে বসানো উচিত হয়নি।

২) দুটি দলকে একাসনে বসাতে গিয়ে ‘বিজেমূল’-এর মতো স্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বাম ভোটাররা বিভ্রান্ত হয়েছেন, কেউ আবার বিরক্তিতে তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন।

৩) ১০ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার প্রেক্ষিত বদলে দিতে সরকার বেশ কিছু জনপ্রিয় স্কিম চালু করেছিল। যে স্কিমে মানুষ দারুনভাবে উপকৃত হয়। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে ‘দুয়ারে সরকার’ (duare sarkar), ‘স্বাস্থ্য সাথী’ (sasthya sathi), দিদিকে বলো’কে (didike bolo) নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ যে উপকার পেয়েছে তার অভিজ্ঞতার সঙ্গে এগুলো মেলেনি। ফলে মানুষ বাম কংগ্রেসকে পরিত্যাগ করেছে।

৪) সূর্যকান্তর অকপট স্বীকারোক্তি, ২০১৪-র লোকসভা এবং ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-বিজেপির কোথাও একটা অদৃশ্য বোঝাপড়া ছিল বলে মনে হয়েছে। কিন্তু ২০১৯ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি বিজেপি বিরোধিতায় নামে, প্রবলভাবে নামে। সেখানে কোনও কৃত্রিমতা ছিল না। বামেরা তাদের ব্যঙ্গ করতে গিয়ে মানুষের থেকে নিজেরাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

৫) ভোটের সময় আঘাত পাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর হুইল চেয়ার প্রচারকে কটাক্ষ করাও মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।

৬) সূর্যকান্ত জানান, দলের বিপর্যয়ের পর বিস্তর গালমন্দ করে বহু চিঠি দলের কাছে আসছে। সেগুলোকে উপেক্ষা করা নয়, গুরুত্ব দিয়ে পড়া হচ্ছে, ইতিবাচক বিষয়গুলোকে আত্মস্থ করার চেষ্টা চলছে।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো আগামিদিনে বামফ্রন্ট (left front) তাদের আন্দোলন-কর্মসূচি চালাবে। কিন্তু সংযুক্ত মোর্চার ব্যানারে নয়। কেন? সুর্যর বক্তব্য, মোর্চা থাকবে কিনা সে বিষয়ে বামফ্রন্টে আলোচনা হবে। সেখানে ছাড়পত্র পেলে তবেই পদক্ষেপ। অর্থাৎ সংযুক্ত মোর্চার (left alliance) অস্তিত্ব যে বিলোপ হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক।

 

spot_img

Related articles

দিনহাটার সাবেক ছিটমহলে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মিটল অচলাবস্থা, শুরু হল এসআইআর প্রক্রিয়া 

দিনহাটার সাবেক ছিটমহল পোয়াতুরকুঠি ও করলা এলাকায় গিয়ে এসআইআর (Summary Revision of Electoral Roll) নিয়ে বাসিন্দাদের বোঝালেন উত্তরবঙ্গ...

অবাধে কাজ করছে BLO-রা, কমিশনের ব্যাখ্যার পরেও কুৎসা! জবাব তৃণমূলের

অতি দ্রুত এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু। একাধিক সমস্যার মধ্যেও সক্রিয়ভাবে যোগদান বিএলও-দের। বাড়ি বাড়ি ফর্ম ফিলাপের (form fill up)...

মদনমোহন মন্দিরে রাস উৎসবের সূচনা, ভক্তদের ভিড়ে মুখর কোচবিহার

রাজআমলের প্রথা মেনে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে শুরু হল রাস উৎসব। এদিন সন্ধ্যায় দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি ও কোচবিহারের...

বিজেপির এসআইআর ষড়যন্ত্র: ব্য়র্থ করে দিতে স্লোগান মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলায় হালে পানি পাচ্ছে না বিজেপি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘আবকি বার ৪০০ পারে’র প্রচার মুখ থুবড়ে পড়েছে।...