করোনা মহামারি আবহে ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে রেজাল্ট আউট হয়েছে। কিন্তু সেখানেই বিপত্তি। বেশকিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অকৃতকার্য হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষাই হয়নি, তাহলে ফেল কেন? মাধ্যমিকে একইভাবে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ১০০ শতাংশ পড়ুয়াকে পাশ করানো হয়েছে। যা উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে হয়নি। উঠছে প্রশ্ন?
তাই, আজ শুক্রবার পাশের দাবিতে জলপাইগুড়ি থেকে শুরু করে কলকাতা ও জেলায় জেলার বিভিন্ন স্কুলে বিক্ষোভে সামিল হল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীরা। পথ অবরোধ, ঘেরাও, বিক্ষোভ-অবরোধে সামিল অকৃতকার্য পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা।
ময়নাগুড়ির ভোট পট্টি স্কুল মোড় এলাকা থেকে জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা বালিকা বিদ্যালয়। এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করতে না পারা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা।
উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম এপিসি গার্লস স্কুল থেকে নদিয়ার শান্তিপুর। হাওড়া থেকে মেদিনীপুর। কলকাতার বড়িশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠের ১২০ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০ জন। ছাত্রীদের অভিযোগ, এটা হতে পারে না। প্রজেক্টের নম্বরও কারও কারও মার্কশিটে নেই। যা নিয়ে ব্যাপক অশান্তি বেঁধেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। তাঁরা সংসদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
একইভাবে নদিয়ার শান্তিপুর বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়। রাস্তার উপর আগুন জ্বেলে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের। এবছর মাধ্যমিকে শান্তিপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে এই বাগআঁচড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া। কিন্তু এই বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছে। এত সংখ্যক অকৃতকার্যের ঘটনা বিগত দিনে স্কুলের ইতিহাসে নেই। যখন রাজ্যজুড়ে পাশের হার ৯৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে সেখানে একটি মাত্র স্কুলে ৭২ জন পড়ুয়া কী ভাবে অকৃতকার্য হল, এই নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা।
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কাছে বনিবনের কল্যাণব্রত সংঘ উচ্চ বিদ্যালয়। এখানকার ১৮৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন ফেল করেছে। তার পর এদিন সকাল থেকেই মার্কশিট নিতে আসা ছাত্রছাত্রীরা কল্যানব্রত স্কুলে বিক্ষোভ দেখান। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের এগারো ক্লাসের পরীক্ষার নম্বর স্কুল থেকেই ভুলভাল পাঠানো হয়েছে। নাহলে ১৮৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কীভাবে ১৫০ জন ফেল করে !
একই ঘটনার সাক্ষী তিলজলা গার্লস হাইস্কুল। সেখানে মাত্র ২০ জন ছাত্রী পাশ করেছেন।