মোদি জমানায় আবাসন শিল্পর দফারফা, আটকে ৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প!

নরেন্দ্র মোদি জমানায় দেশের আবাসন শিল্প চরম সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে । দেশের প্রথম সারির আবাসন সংস্থাগুলির সমীক্ষা রিপোর্টেই রিয়েল এস্টেটের এই দৈন্যদশা প্রকাশ্যে এসেছে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে, গত বছর থেকে দফায় দফায় একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করেও মোদি সরকার কার্যক্ষেত্রে কোনও উন্নতিই করতে পারেনি।

সমীক্ষা রিপোর্ট এবং আবাসন সংগঠনগুলির হিসেব অনুযায়ী , আবাসন শিল্পে আটকে রয়েছে অন্তত ৫ লক্ষ কোটি টাকা। প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ ‌নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট হয় থমকে রয়েছে, অথবা হস্তান্তরের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে অনেক আগে। এর ফলে সরাসরি ভুগতে হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষকেই। কারণ, টান পড়ছে তাঁদের পকেটে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির ঋণ দেওয়া ও পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রাও থেকে যাচ্ছে অপূর্ণ।

ব্যাঙ্কগুলি গৃহঋণে অনুমোদন দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেই পরিমাণ লোন বণ্টন করতে পারছে না। কারণ, প্রকল্পই যে থমকে! ঋণ পরিশোধ বাবদ যে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছিল, পূরণ হচ্ছে না সেটাও।

২০১৪ সালের পর শুরু হওয়া আবাসন প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রেই এই চরম সঙ্কট বেশি দেখা যাচ্ছে। যে নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটগুলির কাজ থমকে রয়েছে, সেগুলির সিংহভাগের দাম ৮০ লক্ষ টাকার নীচে। সবথেকে বেশি ডুবেছে ক্ষুদ্র ডেভেলপাররা। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৩ সালের পর থেকে লাগাতার আবাসন শিল্পে মন্দা শুরু হয়। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেরার মতো কিছু নিয়ন্ত্রণ  ব্যবস্থার অপপ্রয়োগ এবং শোচনীয় অর্থনীতি।

অন্তত ৫ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি আটকে রয়েছে অর্থাভাবে। কোভিড সমস্যার জন্য ২০২০ সালের মার্চ থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আবাসনের কাজ। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় শহর ছেড়ে নিজেদের গ্রামে ফিরেছেন। গত বছর অক্টোবর থেকে তাঁরা ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করলেও লাভের লাভ খুব একটা হয়নি। কারণ, সবথেকে বেশি কড়াকড়ি এই সেক্টরেই। তার উপর পুঁজি এবং লগ্নি সম্পূর্ণ বন্ধ। যার প্রভাব পড়েছে হাজার হাজার আবাসন প্রকল্পে। পরিণাম? ক্রেতাদের হাহাকার। আট বছর আগে ফ্ল্যাট বুক করেও ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে না। এমন চিত্র দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই সর্বত্র।
সম্প্রতি এই সঙ্কট নিয়ে আবাসন প্রকল্প সংক্রান্ত সর্বভারতীয় সংগঠন দেখা করেছিল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে। সেখানে দেশের প্রথম সারির আবাসন নির্মাতাদের প্রতিনিধিরা স্পষ্ট বলেন, সরকার এখনই হস্তক্ষেপ না নিলে আবাসন শিল্প ভেঙে পড়বে।

 

Previous articleচিনে ফের করোনার আতঙ্ক, দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট
Next articleএবার বঙ্গভঙ্গের ধুঁয়ো বিজেপি বিধায়ক বরেন বর্মণের