আজ, শুক্রবার রাজ্যের ৭ কেন্দ্রে উপনির্বাচনের (By-election) দাবিতে কমিশনের রাজ্য দফতরে (CEO) গিয়েছিল তৃণমূলের (TMC) ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এদিন ঠিক দুপুর ২.১৫ মিনিট নাগাদ রাজ্যের দায়িত্বে থাকা মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের (Ariz Aftab) সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং জাভেদ খান।
মিনিট পনেরো বৈঠক শেষে ভালো আছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি জানান, রাজ্যে উপনির্বাচন করার দাবি নিয়ে আসা হয়েছিল। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক তাঁদের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি ধাপ তাঁরা এগিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের এ নিয়ে আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “ তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে কমিশনের নির্বাচন করার প্রচেষ্টা কতটা সেটা জানতেই ফের এখানে আসা। এদিনও কোভিড বিধি মেনে আমরা ৭টি কেন্দ্রের উপনির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি। কমিশনের আধিকারিকের তরফে জানা গিয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে তাঁরাও এ নিয়ে কয়েক ধাপ এগিয়েছেন। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে কিছু চিঠি আমাদের দিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সজাগ হচ্ছে না। আমরা মনে করি এ বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। গত এপ্রিলে প্রবল করোনা আবহের মধ্যে ৮ দফায় নির্বাচন করেছিল কমিশন। আমরা তাতে আপত্তি জানিয়ে দফা কমাতে বলেছিলাম। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। এখন রাজ্যজুড়ে করোনার প্রকোপ যখন একেবারেই কমে গেছে, তখন উপ-নির্বাচন করতে যাচ্ছে বিলম্ব না হয়, সেই কথাই এদিন জানিয়েছি আমরা। মানুষকে অবগত করতে অবিলম্বে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে আমরা।”
এর পরই নাম না নিয়ে বিজেপিকে করে পার্থবাবু বলেন, “যাঁরা মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলছেন, তাঁরাই গণতন্ত্রের অন্যতম অঙ্গ হিসেবে নির্বাচন নিয়ে ঢিলেমি করছেন। নির্বাচন কনিশন যেন এ ধরণের চেষ্টাতে প্রভাবিত না হয়, সেকথাও বলেছি আমরা।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মোট ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট বকেয়া রয়েছে। জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জে সাধারণ বিধানসভা নির্বাচনের সময়ই ভোট হয়নি। দু’টি ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের মৃত্যুর জন্য ভোট করা যায়নি। আর ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনা সংক্রমণে মারা গিয়েছেন খড়দহ কেন্দ্রের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিনহা। বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার পরে মারা গিয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্করও। এছাড়াও, জিতেও সাংসদ পদে থেকে যাওয়া দিনহাটা ও শান্তিপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাছাড়া ভবানীপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাই সব মিলিয়ে ৭টি কেন্দ্রে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার অপেক্ষায় তৃণমূল নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৫ জুলাই দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে রাজ্যে বকেয়া ৭টি বিধানসভার উপনির্বাচনের জন্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্রর কাছে দরবার করেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।