ঢাকায় পর্নকাণ্ড: পরীমনি ‘ঘনিষ্ঠতায়’ পদ হারালেন গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা

খায়রুল আলম, ঢাকা: ঢাকাইয়া সিনেমার নায়িকা পরীমনিকে(Pori Moni) গ্রেফতারের পর ঝুলি থেকে ক্রমশ বেরিয়ে আসছে বেড়াল। মুম্বই ও কলকাতার পর্নকাণ্ড মতো বাংলাদেশও(Bangladesh) সরগরম পর্নকাণ্ড নিয়ে। বিশেষ করে পরীমনির আরেক সহযোগী প্রযোজক রাজ এবং মডেল পিয়াসা ও মৌ গ্রেফতারের পর তাদের সকলের মোবাইল-ল্যাপটপে মিলছে পর্নোগ্রাফি। যা ডার্কওয়েবের(dark web) মাধ্যমে বাইরের দেশে পাচার করা হতো।

এদিকে অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় সামনে আসার পর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েনকে। ডিবি থেকে সরিয়ে সাকলায়েনকে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন। পিওএমে পুলিশের ব্যাকআপ ফোর্স থাকে। জরুরি প্রয়োজনে তাদের ব্যবহার করা হয়।

ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘তাঁর (সাকলাইন) অনেক কাহিনী দেখেছি তো আমরা, যে কারণে বলেছি একটু সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’ ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁর (সাকলায়েন) বিরুদ্ধে এ ঘটনায় কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বোট ক্লাব কাণ্ডের প্রেক্ষাপটে সাকলায়েনের সঙ্গে পরিচয় হয় পরিমনীর। এরপর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। গড়ে উঠে অনৈতিক সম্পর্ক। বোট ক্লাব কাণ্ডে জাতীয় পার্টির নেতা ও ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ এবং তার সহযোগী অমির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার মামলা করেন পরীমনি। বিমানবন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করে ডিবি গুলশান। মামলাটির সুপারভাইজার (তত্ত্বাবধায়ক) ছিলেন এডিসি সাকলায়েন।

পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তার সঙ্গে সাকলায়েনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এই অভিনেত্রীর সাকলায়েনের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে এলে তা তদন্ত করে দেখার কথা শনিবার সকালেই জানিয়েছিল সিআইডি।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক সকালে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যদি কোনো মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও হন তাকেও আমরা প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করব। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা সবাই ব্যবস্থা নেব।

‘এসব মামলার সঙ্গে যত প্রভাবশালী ব্যক্তিই জড়িত থাকুক না কেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সকলকে আমরা আইনের আওতায় আনব।’

পরীমনির বাসায় গত ৪ আগস্ট বিকেল পৌনে ৫টার দিকে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। তার আগে ফেসবুকে লাইভে এসে পরীমনি অভিযোগ করেন, কে বা কারা তার বাসার দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছে।

পরে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ সন্ধ্যায় তাকে আটক করে র‍্যাবের প্রধান কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দিয়ে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়।