দুর্গোৎসবের বিবর্তনের দলিল সম্রাটের ‘বাংলার দুর্গাউৎসব’

কলকাতার দুর্গাপুজো বা বলা ভালো দুর্গা উৎসবের সঙ্গে সাংবাদিক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের (Samrat Chatterjee) নাম এক ব্র্যাকেটে উচ্চারণ হয়। দুর্গাপুজো (Durga Puja) তাঁর কাছে শুধু আরধনা নয়, তার থেকেও বড় সম্প্রীতির মিলনোৎসব। বহু মানুষের স্বপ্ন-রুটি-রুজি। এই সম্পর্কে এর আগেও বই সম্পাদনা করেছেন সম্রাট। নিজেও বিস্তর লেখালেখি করেছেন। তবে, এবার তিনি ৪৩১বছরের দুর্গাপুজোর ইতিহাস নিয়ে গবেষণাধর্মী বই প্রকাশ করলেন – ‘বাংলার দুর্গা উৎসব’। রবিবার, সন্ধেয় উত্তম মঞ্চে কোভিড বিধি মেনে এই বই প্রকাশের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya), বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় (Boiswanar Chatterjee), দেবাশিস কুমার (Debashis Kumar), রতন দে, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরী-সহ বিশিষ্টজনেরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন স্বয়ং সম্রাট চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে পিয়ালী বসু চট্টোপাধ্যায় (Piyali Basu Chatterjee)।

‘বাংলার দুর্গা উৎসব’- এই বইটিতে রাজা উদয়নারায়ণ থেকে রাজা কংস নারায়ণ হয়ে কীভাবে আজকের এই দুর্গোৎসবের রূপ এলো তার ধারাবাহিক তথ্য রয়েছে। ১৬০৬ সাল, রাজা কংস নারায়ণের দুর্গা পুজোর বলে কথা, এলাহি আয়োজন হবে না তা কী হয়! পুজো করতে গেলে প্রথমেই আসে মূর্তি তৈরির কথা। এর আগে হত মন্দিরে পুজো হত। সেই প্রতিমা তো আলাদা। এবার কীভাবে মূর্তি তৈরি হবে? কে দেবে তার রূপ? ৫ জন প্রতিমা শিল্পী বসেছিলেন মূর্তি গড়তে। কার আঁকা ছবি দেখে? থিম পুজো চালু হয়েছিল বলতে গেলে সেই সময়ই। প্রথম থিম মেকার কে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর রয়েছে সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের ‘বাংলার দুর্গা উৎসব’ গবেষণাধর্মী বইয়ের ছত্রে-ছত্রে। রয়েছে সে যুগের দুর্গাপুজোর খাওয়া-দাওয়া। সঙ্গে সেই সময়কার ইতিহাসকে তুলে ধরা হাতে আঁকা ছবি।

 

তবে শুধু সেই সময় নয়, আছে হালফিলের কথাও। দুটো বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, এমনকী করোনাকালেও বাংলার 431 বছরে দুর্গোৎসবের ইতিহাসে থাবা বসাতে পারেনি। বিধি মেনেই ২০২০-র দুর্গোৎসব হয়েছে। যেমন হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা ১০০ বছর আগে কলেরার মহামারীর কালে।

সারা রাজ্য ঘুরে নামী-অনামী গ্রন্থাগারের পুঁথি থেকে বই- লুকিয়ে থাকা নানা তথ্য বাংলার দুর্গা উৎসবের তুলে ধরেছেন সম্রাট চট্টোপাধ্যায়। ‘দুর্গা ভক্তি তরঙ্গিনী’ থেকে শুরু করে তৎকালীন ‘ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়া’ সংবাদপত্র- বিভিন্ন জায়গা থেকেই নেওয়া হয়েছে তথ্য। অনেক গবেষক এবং সাংবাদিকও তথ্য সূত্র দিয়েছেন। বইয়ে সেসবের ঋণ স্বীকার করেছেন সম্রাট। দুর্গাপুজোর ধারাবাহিক বিবর্তন জানার জন্য বাংলার দুর্গোৎসব একটি মূল্যবান নথি।

আরও পড়ুন:ভয় পেয়েছে! মানিকের তোপ বিজেপিকে, তৃণমূল বলল, বিজেপি-তালিবান সমার্থক

 

Previous articleভয় পেয়েছে! মানিকের তোপ বিজেপিকে, তৃণমূল বলল, বিজেপি-তালিবান সমার্থক
Next articleপ্রাণ হাতে আফগানিস্তান থেকে ভারতে ফিরলেন ১৪৬ জন