সোমনাথ বিশ্বাস: তিনি রাজধানী আগরতলার দীর্ঘদিনের বিধায়ক। বর্ণময় রাজনৈতিক কেরিয়ার। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রঞ্জন বর্মনের পুত্র। তিনি সুদীপ রায় বর্মন। ত্রিপুরা রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অন্যতম চর্চিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এহেন সুদীপ রায় বর্মনের হাত ধরেই ২০১৬ সালে ত্রিপুরায় শুরু হয়েছিল তৃণমূলের পথ চলা। কিন্তু সেই পথ থমকে যায় গেরুয়া বাঁকে। সে সময় রাজ্যে বিজেপির উত্থানে গা ভাসিয়ে ছিলেন সুদীপবাবু-সহ আরও অনেকে। এরপর ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসে বিজেপি। যার পিছনে সুদীপ রায় বর্মনের বড় অবদান ছিল। কিন্তু সরকার গঠনের কয়েক মাস পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী বিপ্লব দেব শিবিরের কাছে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েন সুদীপবাবু ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। বাড়তে থাকে দূরত্ব। ক্যাবিনেটে নিজেকে মানাতে না পেরে ছেড়ে দেন মন্ত্রিত্ব। দলের কোনও সাংগঠনিক পদেই নেই তিনি। বরং, কোভিড মহামারি আবহে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ছাতার তলায় থেকে জনগণের সেবা করছেন সুদীপ রায় বর্মন। বিপ্লব দেবের উপর অতিরিক্ত আস্থা রেখে সুদীপ রায় বর্মনের মানভঞ্জনে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি।

ত্রিপুরায় বিজেপির যখন টালমাটাল অবস্থা, ঠিক তখনই সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তৃণমূল। এমতবস্থায় সুদীপ রায় বর্মনকে নিয়ে জল্পনার শুরু হয়। তিনি তৃণমূলে পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে জোর গুঞ্জন। বিশেষ করে গত সোমবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। একাংশ মনে করছে, সুদীপ তৃণমূলে ফিরলে, রাতারাতি রাজ্যের রাজনৈতিক চেহারাটাই বদলে যাবে। দলের সংগঠন আরও মজবুত করতে আর সুদীপ রায় বর্মন অটোমেটিক চয়েস হবেন ঘাসফুল শিবিরের কাছে। আর তাঁর মতো একজন দক্ষ বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা বিজেপিতে অপমানিত, লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর মতো একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ জল মাপা শুরু করয়েছেন।

তেইশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক নতুন রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে ত্রিপুরা। নতুন সন্ধিক্ষণে রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা সুদীপ রায় বর্মন। বিশ্ববাংলা সংবাদের কাছে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অকপট সুদীপবাবু। ফোনে মন খুলে এই প্রতিবেদকে যা বললেন আগরতলার বিধায়ক।

ত্রিপুরার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিযে একনজরে সুদীপ রায় বর্মনের বক্তব্য-

ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত
ত্রিপুরায় তৃণমূলকে আগে এতো সিরিয়াস হতে দেখিনি

এখানে যারা স্বীকৃত বিরোধী, তাদের কোনও ভূমিকাই নেই

তৃণমূল ত্রিপুরায় প্রকৃত রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালন করছে

বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূলের ভূমিকাকে সাধুবাদ জানাই

মানুষের সমর্থন জোগাড় করতে পারলে শাসককে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলবে তৃণমূল


তৃণমূলের আইটি সেল অনেক শক্তিশালী

যে ভাবে রাজ্য চলছে, তাতে মানুষ বিপদে, তাই মন্ত্রিসভায় যাইনি

এ রাজ্যে বিজেপি সঠিকভাবে সরকার চালাতে ব্যর্থ

আমি আশাবাদী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমার কথা শুনবেন

মন্ত্রিত্ব নিয়ে নিজের আখের গোছাতে চাইনি বলেই কোভিডে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে কাজ করেছি
ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিন সরকার দেখতে পাইনি
এখনও পর্যন্ত বিজেপিতে আছি, ভবিষ্যতে কী হবে জানি না
পশ্চিমবঙ্গে মানুষের রায় বুঝিয়ে দিয়েছে সরকার কেমন চলা উচিত
ত্রিপুরায় রাজনৈতিক হানাহানি বামেরা তৈরি করেছে, সেই পরম্পরা চলছে
রাজনৈতিক হানাহানি থেকে ত্রিপুরাকে বেরিয়ে আসতে হবে
ত্রিপুরায় তৃণমূল ভবিষ্যৎ কিনা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে