উত্তরপ্রদেশের পর এবার দিল্লি, অজানা জ্বরে কাঁপছে রাজধানী

প্রতীকী ছবি

উত্তরপ্রদেশের পর এবার রাজধানী দিল্লিতেও অজানা জ্বরের আতঙ্ক। সরকারী হাসপাতাল গুলির ওপিডি তে উপচে পড়ছে ভিড়। আগে যেখানে দিনে ৭০০ থেকে ৮০০ শিশু আসত, এখন সেখানে এই জ্বর নিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে, দিনে প্রায় ২০০০। দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই এই জ্বরের উপসর্গ এবং তার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য দিল্লির সমস্ত বড় বড় হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধানদের কে নির্দেশ দিয়েছে। রাজধানী দিল্লির,গঙ্গারাম হাসপাতাল, চাচা নেহেরু হাসপাতাল, রেনবো চিল্ড্রেনস , হোলি হোম হাসপাতাল সহ প্রায় সব বড় হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান দের মতে, এই অজানা জ্বরের সাথে সাথেই ডেঙ্গু, স্ক্রাব টাইফাস এরও প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশুদের মধ্যে। আর যেভাবে শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে সেটা খুবই চিন্তাজনক।

দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা ধীরেন গুপ্তার মতে, প্রথমেই হাই টেম্পারেচার সহ জ্বর আসছে। পরে তাতে বমি এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে গায়ে ছোট ছোট র‌্যাসও দেখা যাচ্ছে । বাড়াবাড়ি পর্যায়ে রক্তপাতও ঘটছে। শিশুদের গায়ে জ্বর এর সাথে র‌্যাস দেখা যাওয়ায় অনেকক্ষেত্রেই সেটাকে ডেঙ্গু বলে প্রাথমিক পর্যায়ে ভুল করা হচ্ছে। তবে তার মতে ,রাজধানীর আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের জন্যই শিশুদের মধ্যে এই জ্বরের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গঙ্গারাম হাসপাতাল এ ওপিডি তে আসা শিশুদের মধ্যে প্রতি ১০০জনের মধ্যেই হয় স্ক্রাব ফাইটাস, ডেঙ্গু, বা এই অজানা জ্বরের জীবাণু পাওয়া গেছে। যে বিষয়টা খুবই চিন্তার।

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই প্রথমে উত্তরপ্রদেশ ও পরে রাজধানী দিল্লিতে শিশুদের মধ্যে এই অজানা জ্বরের প্রভাব আতঙ্ক বাড়িয়েছে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো প্রায় একই রকমের। যেমন দিল্লির চাচা নেহেরু হাসপাতালের শিশুরোগ বিষয়ক প্রফেসর ডক্টর মমতা জাজু জানান, বেশ কিছু শিশুর জ্বরের সাথেই শ্বাসকষ্ট ও শুরু হয়ে যাচ্ছে, আর তাতেই প্রাথমিক পর্যায়ে এটাকে অনেকেই করোনার সাথে গুলিয়ে ফেলছেন।

তিনি জানান, আগে যেখানে ওপিডিতে দিনে ৭০০ থেকে ৮০০ শিশু আসতো এখন সেখানেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দিনে প্রায় ২০০০, ২৪ ঘন্টা খোলা থাকছে ওপিডি, সেখানে তিনশটি বাচ্চার চিকিৎসার সুবিধাসহ বেড আছে যার প্রত্যেকটাই ভর্তি ডেঙ্গু বা এই অজানা জ্বর নিয়ে। এমনকি দিল্লির বেশ কয়েকটি বড় হাসপাতালের আইসিইউতেও জায়গা নেই। তবে ডক্টর মমতার মতে এই শিশুদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়নি। যেটা খুবই সুসংবাদ। কারণ করোনার তৃতীয় ঢেউতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- গুজরাটের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, বিজেপির বিধায়ক দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত

দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিশুদের মধ্যে বাড়তে থাকা এই জ্বরের প্রভাব ও তার উপসর্গ সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট অতিসত্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে পেশ করতে হবে।
দিল্লির ফোর্টিস হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর বিবেক গোস্বামীর মতে,গত প্রায় দের বছর ধরে শিশুরা ঘরবন্দি করোনার আশঙ্কায়। খেলাধুলাও প্রায় বন্ধ,এই রকম পরিস্থিতিতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করেছে। কারণ গত বছরেও এইরকম কোন জ্বরের প্রভাব শিশুদের মধ্যে দেখা যায়নি। সেক্ষেত্রে তার পরামর্শ জ্বরের প্রাথমিক পর্যায়েই বাবা মায়েদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া,এটি মারাত্মক পর্যায়ে যাওয়ার আগেই।কারণ ইতিমধ্যেই এই জ্বরের প্রভাবে শিশু মৃত্যুর হারও কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে চিকিৎসক মহলের।

আরও পড়ুন- ‘উৎসব’ চালু করেছে- আবাসিক প্রকল্প মেরলিন ঐক্যর আবাসিক ক্লাব

advt 19

 

Previous articleবারুইপুরে উদ্বোধন করা হল ‘মার্লিন ঐক্য’ নামে একটি আবাসিক প্রকল্পের
Next articleআইপিএল খেলতে দলের সঙ্গে যোগ দিলেন বিরাট কোহলি, কে এল রাহুলরা