স্বপন দাশ:(লেখক আরএসএস সদস্য ও বিজেপির পুরনো সংগঠক)
বিজেপি সর্ব ভারতীয় স্তরে কতখানি বাংলা ও বাঙালীকে গুরুত্ব দেয় সে সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমার লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর তা বহুল প্রশংসিত যেমন হইয়াছে তেমনি কিছু সজ্জন দ্বারা সমালোচিত ও হইয়াছে, আমার লেখা এত মানুষ পড়িবেন, শেয়ার করিবেন ভাবতে পারি নাই, আমি আপ্লুত, সকলকে আমার বিনম্র নমস্কার।
এিপুরাতে যারা রক্ত ঝরিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে বিজেপিকে টিকিয়ে রাখলো বিজেপির পতাকা ধরে রাখলো তারা এখন নির্বাসনে, নেপোয় দই খেলো বিপ্লব দেব ও অন্যরা। এক্সপেরিমেন্ট করতে বিজেপি বরাবরই ভালোবাসে, সেকারণেই ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী বহুল মানুষ এর রাজ্যে রঘুবর দাস যিনি আদিবাসী নন এমন একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করার ফল হাতে নাতে পেয়েছে, এসটি সংরক্ষিত একটি আসন বাদে সব আসনে বিজেপি হেরেছে, অথচ লোকসভায় ১৪ টি আসনের ১২ টি তে বিজেপি জয়ী হওয়া শুধু নয় ৮১ টি বিধানসভার ৫৬টি তে বিজেপি এগিয়েছিল। দু’মাসেই সমীকরণ বদলে গেলো, বিজেপির ২০ শতাংশ ভোট কমল, ২৫টি আসন নিয়ে রাজ্য হাতছাড়া হলো।
২০১৪ তে বিজেপি ঝাড়খণ্ডে বিজেপি মেজরিটি পায়নি, বাবুলাল মারানডী র জেভিএম তার ৮ সদস্যের সমর্থনের হাত বাড়ানোর ফলে বিজেপির সরকার তৈরী হয়, কথা ছিল বাবুলাল মারানডী রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী হবেন, হলো উল্টো বাবুলাল মারানডীর দলের ৬ বিধায়ককে বিজেপি ভাঙিয়ে নিলেন পড়ে রইল দুই, বাবুলালজীর হাতে পেন্সিল, আঁটি ও গেলো ছালা ও গেলো।কিন্তু সময় চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায় ওই ৬ জনের সবাই ২০১৯ এ হারলেন, জিতলেন ওই দুজনেই আবার যাঁরা ছেড়ে যাননি বাবুলালজীকে। আর বিজেপি ২৫ আসন পেয়েও কোন আদিবাসী মুখ(একজনই তো জিতেছেন সবেধন নীলমনি) তেমন না পেয়ে সেই বাবুলাল মারানডী, সব অপমান অভিমান ভুলে একজন প্রক্রিত স্বয়ংসেবকের মতো বিজেপিকে বাঁচাতে বিজেপির সম্মান বাঁচাতে বিজেপিতে সদলবলে ফিরলেন বিরোধী দলনেতা হিসাবে।
এিপুরায় বিপ্লব দেব আসার আগেই বিজেপির মাটি তৈরী করেছিলেন পুরোনো সব লোকেরা মাটি কামড়ে থেকে, সমস্ত বুথ কমিটি ( বাংলার মতো ভূত কমিটি নয়) তৈরী করেছিলেন কিন্তু দিল্লির দরকার সুদর্শন একজন, দিল্লি থেকে ১৯৭১ এর পর বাংলাদেশ থেকে আসা একজনকে পাঠালেন, অন্যদের তৈরী করা মাটিতে ফসল তুললেন আর কারিগররা বটতলায় বসে চকচকে ঝকঝকে নব্য বিজেপি নেতাদের দেখছেন আর হাহুতাশ করছেন যেমন বাংলার পুরোনো সব নেতা কর্মীরা করেন( দিলীপ ঘোষের কথায় পুরনোরা কি করলেন এতদিন)।
এিপুরায় তবে কি হবে এবার? বিপ্লব দেব ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নেমেছেন, জনে জনে পুরনোদের ফোন করছেন, কেউ ধরছেন কেউ ধরছেন না, নব্যদের তো বিশেষ ভরসা নেই সবই তো ধার করা তারাতো সুদ আসল ফেরত নেবে, পুলিশ দিয়ে আর ঠ্যাঙারে বাহিনি দিয়ে কি মানুষের মন জয় করা যাবে? সময় এখনও আছে দেখা যাক কি হয়, অপেক্ষা করতে হবে অভিষেকের জাদু কতটা সফল হয় তার দিকে, তবে বিপ্লব দেব সুখে নেই কারণ ইতিমধ্যেই উপজাতিরা মুখ ফিরিয়েছেন।
বিজেপির সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি দলের সংগঠন সাধারন সম্পাদক, এিপুরার সংগঠন সাধারন সম্পাদকের কতটা নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জানা নেই।এরউপর কিশোর বর্মন এখন এিপুরায় অনেকের আশীর্বাদ নিয়ে গেছেন যিনি উ:ব: এ ফাঁকা মাঠ আর উর্বর জমি পেয়েও ফসল তুলতে তেমন পারেন নি সবাইকে নিয়ে চলতে না পারা ও গুটবাজির জন্য ১০-১৫ টি জেতা আসন বিজেপি হারিয়েছে। বিশেষ গুরুত্ব না পেলেই ভালো।
বাংলায় ১৮জন এম পি একজন Cabinet minister নেই?
কেন্দ্রীয় কমিটি তে সহ সভাপতি মুকুল রায় তিনি তো ভেগেছেন অতো মাথায় ওঠালে ডাল তো ভাঙবেই। সংঘের বহু পদাধিকারী সহ বিজেপির কৈলাশ ও অন্যরা বলতে অভ্যস্ত ছিলেন মুকুল রায় এর কারণে বিজেপি ১৮ আসন পেয়েছে। কতজনকে বোঝাবো ভাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুনরায় দেখার জন্য এবং মমতা ব্যানার্জি কে হিন্দু বিরোধী ভেবেই বাঙলার মানুষ বিজেপি কে ঢেলে ভোট দিয়েছিল, যদি মুকুল রায় কে দেখে ভোট দিত তবে বসিরহাটে সায়ন্তন বসু গত লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৩৫০৮০০ ভোটে হারতো না, খোদ বীজপুরে মুকুল রায়ের নিজের ছেলের কেন্দ্রে বিজেপির অর্জুন সিং মাত্র ৭৭৯৬ ভোটে লিড হতো না, দল ভাঙানোর কাজ যে করে সে কখনো দল গড়তেই পারে না।
বাংলার মানুষ মমতা ব্যানার্জি কে দেখেই ভোট দেন বাকি সব……….।
জাগো বাঙালী জাগো।
স্বপন দাশ
