Tuesday, August 26, 2025

মহামারি আতঙ্ক, বৃষ্টির চোখ রাঙানি। সবমিলিয়ে ভালোয়-মন্দে আরও একটু দুর্গাপুজো কাটিয়ে ফেললো বাঙালি। আজ, বিজয়া দশমী। ঘরের মেয়েকে বিদায় জানানোর পালা। ক্ষণিকের জন্য বিষাদে ডুববে বাঙালি। আবেগ ঘন মুহূর্তেও সতর্ক প্রশাসন। দেবী দুর্গার বিসর্জনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকে সজাক দৃষ্টি প্রশাসনের।

কলকাতা শহরের গঙ্গা ঘাটগুলিতে শয়ে শয়ে প্রতিমা বিসর্জনের রীতি রয়েছে। সেইমতো সকাল থেকেই প্রতিমা নিরঞ্জনে ঘাটমুখী মানুষ। যাতে নিরঞ্জনের এই রীতি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য সকাল থেকেই প্রস্তুত ছিল কলকাতা পুরসভা। বেলা যত গড়িয়েছে ততই ঘাটগুলিতে ভিড় বেড়েছে। জলপথে নজরদারিতে রয়েছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ এবং ড্রোনের মাধ্যমেও চলছে নজরদারি।

প্রতিবছর গঙ্গার সবক’টি ঘাটের মধ্যে বেশি বিসর্জন হয় বাবুঘাট সংলগ্ন জাজেস ঘাট, বাজা কদমতলা ঘাট এবং নিমতলা ঘাটে। এবছর তিনটি ঘাটে মোট চারটি করে ক্রেন রাখা হয়েছে। বাজা কদমতলা ঘাটে গঙ্গার জলে ভাসমান বার্জের উপর একটি ক্রেন রয়েছে এবং পাড়েও একটি ক্রেন রয়েছে। নিমতলা এবং জাজেস ঘাটে পাড়ের উপরে একটি করে ক্রেন রয়েছে। করোনার দ্বিতীয় বর্ষেও সকল বিধিনিষেধ জারি রাখা হয়েছে। গঙ্গার জল যাতে দূষিত না হয়, তার দিকেও নজর রাখা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে কাঠামো তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র।

কলকাতা কর্পোরেশনের তরফে এবারই প্রথম দই ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিকল্প ব্যবস্থায়, দুর্গা মূর্তি জলে না ভাসিয়েই নিরঞ্জন করা যাবে। সেক্ষেত্রে গঙ্গা থেকে জল তুলে, হোস পাইপের সাহায্যে সেই জল মূর্তির গায়ে ঢালা হবে। প্রতিমা গলা জল একটি রিজার্ভারে জমা করা হবে। এরপর ক্যানেলের মাধ্যেমে সেই জল ড্রেনে ফেলা হবে। গোটা প্রক্রিয়াটি এবার পরীক্ষামূলক ভাবে দই ঘাটে চালু করতে চলেছে কলকাতা কর্পোরেশন। গোটা প্রক্রিয়াটি ঘুরে দেখেন কর্পোরেশনের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। এছাড়াও প্রতিটি ঘাট পর্যবেক্ষণ করেন প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য দেবাশিস কুমার।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গাইডলাইন অনুসারে প্রতিমার গায়ের ফুল, মালা এবং পুজোর অন্যান্য সামগ্রী নদীর জলছবি ফেলা যাবে না। বিসর্জনের আগে গঙ্গার তীরেই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তা ফেলা হচ্ছে। এই উদ্যোগের কারণে কলকাতা পুরসভার পর্যাপ্ত কর্মী, পুলিশ এবং পরিকাঠামো রয়েছে গঙ্গার ঘাটগুলিতে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিটি প্রতিমার সঙ্গে পাঁচজনের বেশি ঘাটে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ দর্শকদেরও দূর থেকেই বিসর্জন দেখে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

দশমীর দিন মূলত বেশিরভাগ বিসর্জন হবে বাড়ির প্রতিমাই। ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

আরও পড়ুন- ছত্তিশগড়ের যশপুরে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কা, মৃত ৪, আহত কমপক্ষে ১৫

 

 

Related articles

২৮ অগাস্ট পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি অধ্যক্ষদের, চিঠি মুখ্যমন্ত্রী -শিক্ষামন্ত্রীকেও

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবসকে ঘিরে ফের সরগরম হয়ে উঠল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৮ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে...

বদমেজাজি! আমার ছবি এমনিও হলে চলে না, অকপট স্বীকারক্তি অঞ্জন দত্তের 

অভিনেতা–পরিচালক অঞ্জন দত্তকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে নানা বিতর্ক। অনেকেই তাঁকে ‘ঠোঁটকাটা’ বা ‘বদমেজাজি’ আখ্যা দেন। তবে এ...

চাঞ্চল্যকর ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরে! প্রতিশোধ নিতে শিক্ষকের হাতের কব্জি কেটে নিল যুবক

রোমহর্ষক ঘটনা! প্রতিশোধ নিতে শিক্ষকের হাতের কব্জি কেটে নিল যুবক। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর...

একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস! মঙ্গলে জেলা সফরে বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী

আগামিকাল, মঙ্গলবার বর্ধমানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সফর ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই সাজিয়ে তোলা হয়েছে...
Exit mobile version