বদলা নয় বদল চাই: ত্রিপুরা পুলিশের সব চক্রান্ত বানচাল করে আজ সভা অভিষেকের 

বিপ্লব দেবের পুলিশের সব চক্রান্ত ব্যর্থ করে নির্ধারিত জায়গাতেই আজ সভা তৃণমূলের (Tmc) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Bandyopadhyay)। ২০১১-র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান, “বদলা নয়, বদল চাই”- কে সামনে রেখে আজ সভা করবেন অভিষেক। সভার সময় এক ঘণ্টা এগোনো হয়েছে, দুপুর দুটোর বদলে হবে বেলা একটায়। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তারক্ষীরা। রয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। তারা জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনে সুষ্ঠুভাবে সভা করার বিষয়টি তারা দেখবে। ইতিমধ্যেই প্রবল উৎসাহ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আগরতলা বিমানবন্দরের বাইরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানানোর জন্য তৈরি ত্রিপুরার মহিলা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের আগরতলার (Agartala) সভা বানচাল করতে সবরকমের বেআইনি পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল ত্রিপুরায় বিজেপি (Bjp) সরকার। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেনি। আদালতে মুখ পুড়েছে বিজেপির, পুলিশের এবং রাজ্য সরকারের। শনিবার রাতে হাইকোর্ট (High Court) রায় দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে আগরতলার সেই জায়গাতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হবে, যেখানে কথা ছিল। তবে কোভিড বিধি মেনে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

আগরতলায় অনুমতি নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সভা শনিবার দুপুরে বাতিল করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বলে পুলিশ প্রশাসন। মঞ্চ অর্ধসমাপ্ত রাখতে বাধ্য করেছে। ভাঙার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অন্যায় এই আবদারের কাছে মাথা না নুইয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়েছে, রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আগরতলার নির্দিষ্ট স্থানেই হবে। আগরতলা রবীন্দ্রভবন চত্বরের সামনেই সভার প্রস্তুতি চলছিল। সেখানেই সন্ধে থেকে অবস্থান শুরু হয় তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রশাসনের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে হাইকোর্টে সভা করতে চেয়ে মামলা করে তৃণমূল কংগ্রেস। রাত ৯টা ২০ মিনিটে মামলার শুনানি শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করেন সঞ্জয় বসু এবং শঙ্কর লোধ। ঘণ্টা খানেকের কম সময়ের সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারপতি জানিয়ে দেন, সভা করা যাবে। তবে কোভিড বিধি মেনে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ফলে স্বৈরাচারী রাজ্য সরকারের সব উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। কোর্টের রায় জানার পরেই সভাস্থলে উল্লাসে ফেটে পড়েন কর্মী-সমর্থকরা। উল্লাসের মাঝেই শুরু হয় মঞ্চ তৈরির কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্লেক্স, ফেস্টুন, ফ্ল্যাগ লাগানো শুরু হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সফল করতে নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করবেন ঘোষণা করার পরেই থরহরি কম্প শুরু হয় ত্রিপুরা সরকার এবং প্রশাসনিক মহলে। পুজোর আগে ত্রিপুরা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে অভিষেকের ত্রিপুরা সভা আটকেছিল। তারপর ফের সভা ঘোষণা করার পরেই নয়া আরটিপিসিআর নীতি লাগু করে প্রশাসন। তাতেও কাজ না হওয়ায় দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে গভীর রাতে এফআইআর দায়ের করে শনিবার তলব করা হয় থানায়। কিন্তু সুবিধে না হওয়ায় তারপরেই প্রশাসন জানায় সভাস্থল পরিবর্তন করতে হবে। সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে আস্তাবলের মাঠে। কারণ কী? প্রশাসনের যুক্তি, সভার অনুমতি নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল ৭০০ জনের মতো সদস্য- সমর্থক আসবেন। কিন্তু তাদের গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, প্রায় হাজার দশেকের বেশি সদস্য-সমর্থক আসবেন। এছাড়া আরটিপিসিআর নীতি লাগু হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন ত্রিপুরার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, এই দু’দিন আগেও বিজেপি বলছিল তৃণমূলের পিছনে দশজনেরও সমর্থন নেই। তাহলে দশ হাজার এল কোথা থেকে? আসলে এটাই বাস্তব। বিজেপি বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের তলার মাটি সরছে। প্রতিদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন বাড়ছে। আর সেই সমর্থন বৃদ্ধির ভয়েই সভা বানচালের নানা চক্রান্ত। মঞ্চ ভাঙার প্রস্তুতি, র‍্যাফ-পুলিশ এলাকা ঘিরে নেয়। কিন্তু মাথা নত করেননি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। সভাস্থলে অবস্থান চলেছে, সেইসঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া চলেছে নীরবে। শেষে কাঙ্ক্ষিত জয়। নির্ধারিত জায়গাতেই সভা হবে অভিষেকের। তিনি কী বার্তা দেন তা জানতে, উৎস তৃণমূলের নেতাকর্মীদের থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।

Previous articleসেপ্টেম্বরেই কোভিডে মৃত্যু ৪৪ হাজার ২৬৫ জনের! ফের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের পথে রাশিয়া
Next articleছেলের জন্য ডায়েটিশিয়ান এবং মনোরোগবিদের শরণাপন্ন শাহরুখ-গৌরী