স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচতে কীভাবে সতর্ক হবেন ? world stroke day-তে পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকরা

বর্তমানে মাঝ বয়সেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন স্ট্রোক এ। আসলে বদলে যাওয়া জীবনযাত্রার এর মূল কারণ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
তাদের মত, বদলে যাওয়া জীবনযাত্রায় এতটাই প্রভাব ফেলেছে যে, বছর তিরিশেই হচ্ছে স্ট্রোক! চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে প্রতি বছর স্ট্রোক হয় ১৮ লক্ষ মানুষের।  আক্রান্তের অধিকাংশের এক মাসের মধ্যে মৃত্যু হয়।
নিশ্চয়ই ভাবছেন কোন কোন উপসর্গ দেখলে বুঝবেন আপনার বা অন্য কারও স্ট্রোক হয়ে থাকতে পারে ?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মত,
আচমকা চোখ ধোঁয়া ধোঁয়া দেখা ,কথা জড়িয়ে যাওয়া,
মুখ বেঁকে যাওয়া ,শরীরের একদিক অবশ হয়ে যাওয়া ,
শরীরের একদিকের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দুর্বল হয়ে পড়া ,অসংলগ্ন কথা ,ভুলভাল কথা বলা ইত্যাদি থেকে সহজেই বোঝা সম্ভব কোনও ব্যক্তির স্ট্রোক হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, দেশে স্ট্রোক আক্রান্তদের ২৫ শতাংশই তরুণ। শরীরে মনে যন্ত্রণার ভার বয়ে বেড়াতে হয় বহু মানুষকে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই কষ্টই বাকিদের কাছে শিক্ষা হয়ে উঠতে পারে। স্ট্রোক এমন সমস্যা, যার প্রতিষেধক খোঁজার থেকে প্রতিরোধ করা বেশি জরুরি। অর্থাৎ আগে থেকে সাবধান হওয়া।
সে জন্য কী করতে হবে? চিকিৎসকদের পরামর্শ প্রথমেই নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের অভ্যেস করুন।
কীভাবে বুঝবেন আপনার স্ট্রোক হয়েছে? কখন রোগীকে আনতে হবে হাসপাতালে?  ৩০ অক্টোবর world stroke day-তে এই নিয়েই আলোচনা হল মল্লিকবাজারের ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসে। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠিক সময়ে রোগী হাসপাতালে আনা অত্যন্ত জরুরি। স্ট্রোকের চিকিৎসায়, আরও তিন রকম পরিষেবা শুরু হতে চলেছে এই হাসপাতালে। জানালেন স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ  জয়ন্ত রায়। তারমধ্যে আছে comprehension stroke center, Rapid AIM, স্ট্রোক প্রিভেনশন ক্লিনিক।এদিনের সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রো-চ্যান্সেলর স্বামী আত্মপ্রিয়ানন্দ।

এরই পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে আয় কমে গেলে অনেকে গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েন। কিন্তু, সেই টেনশনের কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তো গোটা পরিবারের বিপদ! তাই মন ভাল রাখার চেষ্টা সবার আগে করতে হবে। নিজের না হলেও পরিবারের বাকিদের কথা ভেবে।
৩০-৩৫ বছর বয়সের পর থেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। আর এই প্রবণতা বেশি বেড়ে গিয়েছে কোভিড কালে। স্ট্রোক মানে মস্তিষ্কের কোনও অংশে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে সেই অংশে আর অক্সিজেন পৌঁছোয় না। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের সেই অংশের কোষগুলির মৃত্যু হয়। আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ কোনও না কোনও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও অংশের কোষের মৃত্যু হলে, সেই অংশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কাজ করার ক্ষমতা চলে যায়। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর কমবয়সীদের মধ্যেও Blood Vessel Occlusion Stroke বা Venous Occlusion Stroke বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা কিছুটা কোভিডের ফলে হওয়া ভ্যাসকুলোপ্যাথির (vasculopathy) জন্যই হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর অনেকেই বাড়ি থেকে কাজ করছেন। হাঁটাচলা কমে গিয়েছে। শারীরীক পরিশ্রম হচ্ছে না। যার ফলে ওজনও বাড়ছে, চিকিৎসকের মতো যা স্ট্রোকের প্রবণতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পূর্বপুরুষদের স্ট্রোক হয়ে থাকলে কম বয়স থেকেই সতর্ক হতে হবে। জানতে হবে,  পরিবারের অন্যদের স্ট্রোক হয়েছিল কেন।  সেই কারণটি জানা থাকলে আগে থেকে চিকিৎসা করা যেতে পারে ।
কোনও উপসর্গকেই অবহেলা করা যাবে না। মাইল্ড স্ট্রোক হলেও তার চিকিৎসা করতেই হবে।
হাইপারটেনশন থাকলে  বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে কম বয়স থেকেই।ব্লাড সুগার ধরা পড়লে সতর্কতা বাড়তে হবে ।
উচ্চ রক্তচাপের রোগী না হলে যে স্ট্রোক হতে পারে না, এমন ভেবে নেওয়ার কারণ নেই। পরিবারে স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলে সতর্ক থাকতেই হবে ।

Previous articleবিরাটের মন্তব্য অবাক করেছে কপিলদেবকে
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ