পাত পেড়ে খেয়েও বিভীষণকে ভুললেন অমিত শাহ, জনমজুরির রোজগারেই চলছে মেয়ের চিকিৎসা

এলেন। ভাষণ দিলেন। কুৎসা করলেন। পাত পেড়ে কব্জি ডুবিয়ে খেলেন। এবং ভুলে গেলেন। হত দরিদ্রকে দেওয়া কথা রাখলেন না।

একটা বছর আগের কথা। বাংলায় তখন ডেইলি প্যাসেঞ্জার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সোম থেকে রবি, অমিত শাহের রোস্টার দিল্লি টু কলকাতা। কলকাতা টু দিল্লি। আসা-খাওয়া-যাওয়া। যাওয়া-খাওয়া-আসা। প্রতিশ্রুতি দেওয়া। এবং জুমলার রঙ্গমঞ্চ নাটক মঞ্চস্থ করা।

২০২০ সালের ৫ নভেম্বর। বাংলায় হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের আগে তখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। বাঁকুড়ায় দলের কর্মসূচিতে নিত্যযাত্রী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে বিতর্কিত মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও রাজনৈতিক সভা। এবং গরীব-তপসিলি জাতি-উপজাতিদের একচিলতে ঘরে গিয়ে পঞ্চব্যঞ্জন সহকারে খাওয়া। তারই অঙ্গ হিসেবে চতুরডিহি গ্রামে বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের বিরাট আয়োজন।

আরও পড়ুন- অপশাসনে দেশের মধ্যে শীর্ষে যোগীরাজ্য, ভোটের আগে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির

সেদিন বিভীষণের ছোট্ট বাড়িতে ভোর থেকে সাজ সাজ রব। নিজে হাতে রেঁধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খাইয়েছিলেন স্ত্রী মনিকা হাঁসদা। বিভীষণ হাঁসদাকে পাশে বসিয়েই সেদিন আঙুল চেটে চেটে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। দুপুরে খাওয়ার ফাঁকে কঠিন অসুখে ভুগতে থাকা মেয়ে রচনার চিকিৎসার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের করুণ আর্জি জানিয়েছিলেন বিভীষণ। একগাল হাসি আশ্বাস দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিল্লির এইমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পর্যন্ত আশ্বাস মিলেছিল!

এরপর স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারও বলেছিলেন বিষয়টি দেখে নেবেন। বিভীষিণের অভিযোগ, কেউ কথা রাখেনি। প্রতি মাসে মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। এক বছর পরেও মেয়ের কঠিন অসুখের চিকিৎসা চালাতে ভরসা বলতে বিভীষণ হাঁসদার জনমজুরির সামান্য উপার্জনই। কোথায় এইমস? কোথায় অমিত শাহ? কোথায় বিজেপি সাংসদ? বিভীষণ বুঝেছে, দিল্লি এখন অনেক দূর।

 

Previous articleলন্ডনে বিশাল প্রাসাদ কিনলেন ধনকুবের মুকেশ আম্বানি
Next articleমাত্র ১৩৩ টাকা খরচে মিললো পুলিশের চাকরি