৭৭ বসন্ত পড়িয়েছেন। বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। দীর্ঘদিন অসুস্থ। তিনি রেজ্জাক মোল্লা। বাম ও তৃণমূল সরকারের প্রাক্তন মন্ত্ৰী। অসুস্থ থাকায় রাজনীতি থেকে “অবসর” নিয়েছেন নিজেকে “চাষার বেটা” বলা রেজ্জাক সাহেব। ফের একবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। হাসপাতাল থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল মনের মানুষ। বড় মনের মানুষ। নিয়ম করে আমার খোঁজ খবর রাখেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠিয়েছেন।”
দলের স্থানীয় নেতাদের প্রতি কিছুটা অভিমানী হলেও অসুস্থ রেজ্জাক ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামের বাড়িতে বসে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের প্রশংসা করে বলেন, “দলকে আরও সংগঠিত করতে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। ভাঙড় থেকেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম, ভাঙড়েই শেষ করেছি। তাই ভাঙড়ের জন্য আমার সর্বদাই মন টানে।”
ছাত্র রাজনীতি দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে অভিষেক ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান রেজ্জাক মোল্লার। এরপর ১৯৭২ সালে ভাঙড় কেন্দ্র থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা থেকে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। এবং একের পর ভোটে জিতে বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে রেজ্জাক মোল্লা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও সিপিএম সম্পর্কে দল বিরোধী মন্তব্য করতে থাকেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে তাঁর সেই বিখ্যাত উক্তি “হেলে ধরতে পারে না কাউকে…!” এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। এরপর ২০১৪ সালে সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। ”ন্যায়বিচার পার্টি” তৈরি করে সামাজিক আন্দোলনে সামিল ছিলেন কিছু দিন। কিন্তু সেভাবে কিছু করে উঠতে পারছিলেন না।
এরপর ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। ওই বছরই তৃণমূলের টিকিটে জেতেন ভাঙড় থেকে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের দায়িত্বও পান। এক সময়ের দাপুটে নেতা এখন অসুস্থ। দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছেন কিডনির অসুখে। চোখেও সমস্যা আছে। হৃদরোগ আছে। পা ভেঙে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে বা হাঁটাচলা করতে পারেন না। লাঠি বা হুইল চেয়ার সঙ্গী। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখায় তিনি কৃতজ্ঞ।