বিস্ফোরণ বললেও ভুল হবে। এক অভিযোগে বেআব্রু বিজেপির অন্দরমহল। এতদিন বিরোধীরা যা বলেছেন এবার তাই বললেন দলেরই নেতা সুরজিৎ সাহা। হাওড়া জেলা সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহা চোর অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারীর গায়ে কাদা মাখিয়ে দিলেন। বুধবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে বললেন, আপনার কাছ থেকে আমরা সার্টিফিকেট নেব না। আপনি কত বড় চোর সবাই জানে। নারদায় আপনাকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। সারদায় একই অভিযোগ। বিজেপির অন্য কাউকে দেখা যায়নি। আপনি আগে প্রমাণ করুন, আপনি কতটা সৎ।
ঘটনার সূত্রপাত হাওড়া পুর নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির বৈঠক নিয়ে। মঙ্গলবার বৈঠক করতে হাওড়ায় যান শুভেন্দু। ওই বৈঠকে দলের একটা বড় অংশ বিদ্রোহ করে অনুপস্থিত ছিল। ১০জন সদস্য মিটিং বয়কট করেন। বৈঠকে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, কেউ কেউ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এমনকি তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়ের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখার অভিযোগও তুলে শুভেন্দু বলেন, এই আঁতাতের কারণেই বিধানসভা ভোটে দল হেরেছিল। তার জবাবেই সুরজিৎ বলেন, শুভেন্দুবাবু, সবে তো আপনি ৬ মাস ভারতীয় জনতা পার্টিতে এসেছেন। কে কত বড় বিজেপি তার সার্টিফিকেট আপনার থেকে দলের কর্মীরা নেবেন না। আপনাকে ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে টাকা নিতে। হাওড়ার কোনও বিজেপি নেতাকে ক্যামেরায় দেখা যায়নি ঘুষ নিতে।
হাওড়া পুরভোটের জন্য শুভেন্দু একটি কমিটি করে দেন। সেই কমিটি নিয়েও তোপ দেগে সুরজিৎ বলেন, ওটা তো তৃণমূলের বিটিম। যে লোকটা নিজের ওয়ার্ডে, নিজের বুথে জিততে পারে না, যার নামে গদ্দার পোস্টার জেলা সভাপতিকে বুথের সামনে থেকে সরাতে হয়েছে সেই রথীন চক্রবর্তীকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তৃণমূলের কোনও বিটিমের নেতৃত্বে হাওড়ার বিজেপি কর্মীরা কাজ করবেন না। চোর, গদ্দারদের সঙ্গে আমরা ঘর করব না।
আদি-নব্য লড়াই উসকে দিয়ে সুরজিৎ আরও বলেন, আমরা প্রয়োজনে পুরনো নেতৃত্বের নির্দেশে কাজ করব, কিন্তু এই তৎকাল চোর নেতাদের সঙ্গে কাজ করব না। অরূপ রায়ের সঙ্গে সাঁটের অভিযোগ শুভেন্দুকে প্রকাশ্যে প্রমাণ দিতে হবে। না পারলে ক্ষমা চাইতে হবে। আপনি টাকা নিয়েছেন সকলে দেখেছে। আপনি প্রমাণ করুন আপনি কতবড় সৎ!
সুরজিতের বিস্ফোরণ নিশ্চিতভাবে দলে শুভেন্দু বিরোধী বিশাল অংশকে উৎসাহিত করবে। হাওড়ায় বিজেপির ভোট-ভবিষ্যতের ছবিও এই ঘটনায় ক্রমশ পরিস্কার হচ্ছে।