KMC Election: দুই অঙ্কের নীচে BJP, শূন্য CPM, নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতার পথে TMC

(দিনের আলোর মতো পরিস্কার, রাজ্য ও কলকাতার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে, এবারও নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে কলকাতা পুরসভা দখল করতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল)

১৯ ডিসেম্বর কলকাতা (Kolkata) ও হাওড়ায় (Howrah) পুরভোট (Corporation Election) হবে। গণনা হবে ২২ ডিসেম্বর। রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission) বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর থেকেই ছোট লালবাড়ি দখলে রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা তুঙ্গে।

কে নেবে পুরসভার দখল?

 

দিনের আলোর মতো পরিস্কার, রাজ্য ও কলকাতার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে, এবারও নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে কলকাতা পুরসভা দখল করতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল (TMC)। ২০১৫ সালে শেষবার কলকাতা পুরভোটে ১৪৪টি আসনের মধ্যে ১১৪টি আসন জিতে পুরবোর্ড দখল করেছিল তৃণমূল। এবার সেই সংখ্যা যে আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলিরও তা অজানা নয়। পরোক্ষে তা স্বীকারই করে নিয়েছে বিরোধীরা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শেষভোটে পুরসভার প্রধান বিরোধী দল বামেরা (Leftfront) কি দাঁত ফোটাতে পারবে? কংগ্রেসের (Congress) হাল কী হবে? আর রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির (BJP) ঝুলিতে কটি আসন যাবে? তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

একুশের বিধানসভা ভোট আর পুজোর আগে ভবানীপুর উপনির্বাচনের ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, পুরসভার প্রধান বিরোধী দল সিপিএম তথা বামেরা “বিগ-জিরো”। অর্থাৎ, ২০১৫ সালে শেষ কলকাতা পুরসভার ভোটে ১৫টি আসন পাওয়া বামেরা একটিও ওয়ার্ড জিততে পারবে না। বিধানসভার মতো পুরসভাতেও শূন্য হতে চলেছে বামেরা। এবং সিংহভাগ ওয়ার্ডে বাম প্রার্থীদের জানানত বাজেয়াপ্ত হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়লেও কিছু ওয়ার্ডে কংগ্রেসের ভোট বাড়লেও বামেদের অবস্থা আরও শোচনীয় হবে।

২০১৫ পুরভোটে ৪টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। পরে দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের আসন কমে দাঁড়ায় দুইয়ে। একুশের বিধানসভা ভোটের নিরিখে কংগ্রেস একটি আসনে (৪৫ নং ওয়ার্ড) থেকে সামান্য লিড পেয়েছে। পুরভোটে সেটাই ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ কংগ্রেসের কাছে। আর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কাউন্সিলর থাকলেও এবার সেটা টলমল।

তুলনায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অবস্থা সংগঠননিক ভাবে সামান্য ভালো হলেও একুশের ভোটে কলকাতার ১১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে একটিতেও জিততে পারেননি গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীরা। তারপর ভবানীপুর উপনির্বাচনে গো-হারা হেরেছে বিজেপি। ২০১৫ সালে শেষবার কলকাতা পুরভোটে সেইসময় এরাজ্যে তেমন কোনও হাওয়া না থাকলেও ২০১৪-তে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর কিছুটা শক্তি বাড়িয়ে বিজেপি কলকাতার ৭টি ওয়ার্ড নিজেদের দখলে আনতে পেরেছিল। কিন্তু সেই ছবি গত ৬ মাসে অনেকটাই বদলে গিয়েছে।

একুশের বিধানসভা ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩২-টিতেই এগিয়ে তৃণমূল‌। উপনির্বাচনের মূল ভোটে ভবানীপুরের দুটি (৭০ ও ৭৪ নং ওয়ার্ড), রাসবিহারীর একটি (৮৭ নং ওয়ার্ড), জোড়াসাঁকোর পাঁচটি (২২, ২৩, ২৫, ২৭, ৪২ নং ওয়ার্ড), শ্যামপুকুরের দুটি (২১ ও ২৪ নং ওয়ার্ড), মানিকতলা (৩১ নং ওয়ার্ড) ও চৌরঙ্গির (৪৫ নং ওয়ার্ড) একটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। বিজেপি এগিয়ে ছিল ১১টিতে। কংগ্রেস একটি আসনে (৪৫ নং ওয়ার্ড)। কিন্তু ভবানীপুর উপনির্বাচনে দেখা যায় সেখানের যে দুটি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়েছিল সেই দুটি ওয়ার্ডেও (৭০ ও ৭৪ নং) এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল।

তবে গেরুয়া শিবিরে লাগাতার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আদি-নব্য ঝগড়া।

শীর্ষ নেতৃত্বের উপর নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের অনাস্থা, সবমিলিয়ে গতবারের জেতা ৭টি আসন (ওয়ার্ড নং ৭, ২২, ২৩, ৪২, ৭০, ৮৬, ৮৭) আদৌ গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীরা নিজেদের দখলে ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে দলের অন্দরেই।

তাহলে একুশের বিধানসভা ভোটের ৮ মাস পর কলকাতা পুরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফল কী দাঁড়াচ্ছে?

দেখা যাচ্ছে, ১৩৪টি ওয়ার্ডে এগিয়ে শাসক তৃণমূল শিবির, ৯টি আসনে এগিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, একটিতে এগিয়ে কংগ্রেস। একুশের ভোটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোনও কেন্দ্রেই এগিয়ে নেই বামেরা। অর্থাৎ, বিধানসভার মতো পুরভোটেও বামেদের ঝুলি শূন্য।

যদিও বিধানসভা ভোট পুরভোটের মধ্যে ইস্যুর আকাশ-পাতাল পার্থক্য। স্থানীয় ইস্যুর উপর ভিত্তি করেই মূলত পুরভোট হয়। তাই বিধানসভা ভোটের ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফল নজরে থাকলেও গত ৫ বছর কাউন্সিলরদের কাজের খতিয়ানের হিসেব বদলে দিতে পারে অনেক কিছু।

 

Previous articleGoa TMC:ত্রিপুরার মতো গোয়াকেও গুরুত্ব, অর্পিতার আসনে ফালেইরোকে জিতিয়ে আনছে তৃণমূল
Next articleMohan Bhagwat Kolkata Visit:সোমবারই কলকাতা আসছেন সংঘপ্রধান মোহন ভগবত