দলের মধ্যে বয়স-নীতি চালু করার পর এবার অবসরকালীন আর্থিক সহায়তার ভাবনা-চিন্তা শুরু করল সিপিএম। ইতিমধ্যে কেরল সিপিএম পেনশনের জন্য আলাদা তহবিল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই পথেই যেতে চাইছে বঙ্গ সিপিএমও।
আরও পড়ুন:Durgapur Airport:আবার চুরি! বিজেপি সরকারের নয়া কীর্তি, দুর্গাপুর বিমানবন্দর চলে গেল উত্তরাখণ্ডে!
আগামিদিনে সিপিএমে সম্মেলন হবে। তারপর পার্টি কংগ্রেস। সেখান থেকেই সিপিএমে বয়স-নীতি কার্যকর হবে। সেই বয়সনীতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার সর্বোচ্চ বয়স হবে ৭৫। রাজ্য এবং জেলা কমিটিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা আরও কম হবে। বাংলায় ষেমন রাজ্য ও জেলা কমিটির সদস্যদের সর্বোচ্চ বয়স হবে যথাক্রমে ৭২ ও ৭০ বছর। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ, যে সব নেতা-কর্মীরা দলের নীতি মেনে কমিটি বা সদস্যপদ থেকে সরে যাবেন, তাঁদের আর্থিক সাহায্যের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এই নির্দেশ মেনেই কেরল সিপিএম পেনশন তহবিল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বঙ্গ সিপিএম এখনও আলোচনার স্তরেই রয়েছে।
সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী বা হোলটাইমাররা দলের কাছ থেকে ভাতা পান। আর যাঁরা নিজেরা আয় করেন, তাঁদের দলকে চাঁদা বা লেভি দিতে হয়। জনপ্রতিনিধিরা যে বেতন পান, সেই টাকা প্রথমে দলের কাছে যায়। দল সেখান থেকে চাঁদা কেটে জনপ্রতিনিধিদের ভাতা দেয়। বিধায়ক-সাংসদদের পেনশনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি, তবে অঙ্ক আলাদা।
কেরল সিপিএমে সিদ্ধান্ত, ৭৫ বছরের সীমা মেনে যাঁরা দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন, তাঁদের পেনশন দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তাঁদের চিকিত্সার জন্য সহায়তাও দলের তরফে থাকবে। ওই রাজ্যের প্রতিটি জেলা কমিটিকে এই কাজের জন্য পৃথক তহবিল করতে বলা হয়েছে। কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এই নির্দেশিকা রাজ্য কমিটিতে পাশ হয়েছে। তার পরে পলিটবুরোর সম্মতিও পেয়েছেন কেরলের সিপিএম নেতৃত্ব। প্রাক্তন বিধায়ক বা সাংসদেরা অবশ্য দলীয় পেনশনের আওতায় আসবেন না।
দক্ষিণী রাজ্যে রাজনৈতিক কারণে তহবিল বা চাঁদা দেওয়া হয় মুক্তহস্তে। সম্প্রতি ত্রিপুরায় বিজেপির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত সিপিএমের দফতর ও কর্মীদের সাহায্যের জন্য আর্থিক সাহায্যের ডাক দিয়েছিল দল। কেরল এক দিনে তুলে দিয়েছে ৬ কোটি টাকারও বেশি! এ বার জেলায় জেলায় দলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য পেনশনের তহবিলও জোগাড় করে ফেলতে তৈরি। ‘শহিদ’ কর্মীদের পরিবারকে সাহায্য বা বিপন্ন পরিবারের কাউকে বাম পরিচালিত কোনও সংস্থা বা সমবায়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার চল আছে সিপিএমে। কেন্দ্র বা রাজ্যে দলের শীর্ষ স্তরের নেতাদের চিকিত্সার খরচের ব্যবস্থা করার রেওয়াজও আছে। তবে এই ধরনের পেনশন তহবিল এই প্রথম।
রাজ্য সিপিএম অবশ্য তাদের আয় বুঝেই ‘প্রাক্তন’দের সহায়তার বন্দোবস্ত করবে। এক সিপিএম নেতা বলছেন, সব রাজ্যের পরিস্থিতি সমান নয়। অবসরপ্রাপ্তদের আর্থিক সহায়তার ভাবনা কেন্দ্রীয় স্তর থেকেই হচ্ছে। তবে বয়স-নীতি মেনে কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেও তাঁদের মধ্যে যাঁরা এখনও সক্ষম, তাঁদের দলের কাজে যুক্ত রাখাটা দরকার। তাতে পুরনো নেতা-কর্মীরা মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকবে।