Thursday, May 15, 2025

টানা কয়েকঘন্টার রোমহর্ষক পর্ব, ঘুম ভাঙাতে ভাঙতে হলো দরজা! কলিযুগের এক কুম্ভকর্নের হদিস মিললো চুঁচুড়ায় (Chuchura)। নাম সৌমেন নিয়োগী। তিনি চুঁচুড়ার (Chuchura)  বড়বাজারে একটি আবাসনের তিনতলায় থাকেন। বছর ৪২-এর সৌমেন নিয়োগী (Soumen Niyogi) ভারতীয় রেলের শিয়ালদহ শাখায় লোকো পাইলট (Loco Pilot) হিসাবে কর্মরত।

সৌমেন নিয়োগী

সৌমেনের স্ত্রী বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বর্ধমানের  (Bardhaman) মেমারিতে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন। সৌমেন  একাই ছিলেন বাড়িতে। জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯টা নাগাদ স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথাও হয় সৌমেনের। যদিও এদিন ঘর থেকে তাঁকে বের হতে দেখা যায়নি। সৌমেনের স্ত্রী ওই আবাসনেরই আরেক আবাসিক মনোজিৎ দত্তকে ফোন করে স্বামীকে ডাকতে বলেন। কিন্তু মনোজিৎ সৌমেনকে বহু ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। এরপর অন্যান্য আবাসিকরা সুর চড়িয়ে সৌমেনকে ডাকা শুরু করেন। কোথায় সৌমেনবাবু। গলা চেঁচানো, দরজা টাকানো, অনবরত কলিং বেল বাজানো কোনভাবেই সৌমেনের সাড়া মেলেনি। এরপর মনোজিৎবাবু বিষয়টি ফোনে সৌমেনবাবুর স্ত্রীকে জানান। তিনি ঘরের দরজা ভেঙে দিতে বলেন এবং বিপদের আশঙ্কা করে বিয়ে বাড়ি থেকে জলদি  চুঁচুড়ার দিকে রওনা হন।

আরও পড়ুন-Meeting: ফের বিজেপির কথার সুর ধনকড়ের কণ্ঠে, পুরভোট-বৈঠকে সংঘাতের কাঁটা

মনোজিৎবাবুর দৌলতেই খবর যায় চুঁচুড়া থানায়। চুঁচুড়া থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। পুলিশ কর্মীরাও ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। এরপর পুলিশ লোক ডেকে মিস্ত্রী ডেকে আনেন। মিস্ত্রীর ছেনি হাঁতুড়ির ঘায়ে কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হয়। এরপর আবাসনের সদর দরজা ভাঙতেই বারমুড পরে সৌমেনবাবু ঘুম চোখে ভিতরের ঘর থেকে বেড়িয়ে আসেন। সমাপ্ত হয় নাটকের। বাইরে টানা কয়েকঘন্টা ধরে যে সাসপেন্স চলছিল তিনি তা কিছুই জানেন না। তবে এ কোন ঘুম? যে ঘুম ভাঙাতে দরজা ভাঙতে হয় তা ভেবেই চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয় বাসিন্দাদের!

ঘুম নিয়ে গবেষনা নতুন নয়। বই ঘাটলে দেখা যাবে খ্রীষ্টপূর্ব থেকেই  ঘুম নিয়ে গবেষনা চলছে। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের কথায় ঘুম হল একটি জৈবিক বিষয়। যা প্রাণীকুলের কাছে স্বাভাবিক। মানুষ সারা জীবনের প্রায় à§©à§« শতাংশ সময় ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন। অর্থাৎ কেউ যদি ৬০ বছর বাঁচে তবে হিসেব কষলে দেখা যাবে তিনি জীবনের সাড়ে ২১বছর ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ঘুম যদি হয় অবিরাম। কোনভাবেই যদি ঘুম না ভাঙে অর্থাৎ কুম্ভকর্ণ। হিন্দুপুরাণ রামায়ণে কুম্ভকর্ণকে রক্ষকুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে, তিনি ছিলেন রাবণের মধ্যম ভ্রাতা৷ কুম্ভকর্ন তাঁর ভ্রাতাদ্বয় রাবণ ও বিভীষণের সহিত এক মহাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করে তারা প্রজাপতি ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতে সফল হন৷ কিন্তু ব্রহ্মার কাছে বর চাওয়ার সময় দেবরাজ ইন্দ্রের অনুরোধে দেবী সরস্বতী তার জিহ্বা আড়ষ্ট করে দেন৷ এই কারণে বর হিসাবে ‘ইন্দ্রাসন’ চাওয়ার বদলে তিনি ‘নিদ্রাসন’ চেয়ে বসেন৷ কথিত আছে টানা ৬মাস ঘুমোতেন কুম্ভকর্ণ। পৃথিবী উল্টে গেলেও ঘুম ভাঙতো না তাঁর।

Related articles

বিকাশভবনে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা চাকরিপ্রার্থীদের, আহত পুলিশ

বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকদের ঘেরাও অভিযানের নামে বিশৃঙ্খলা। ভেঙে ফেলা হয় বিকাশ ভবনের গেট। পাশাপাশি পুলিশ ও...

হারানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লাখ টাকা-সহ ব্যাগ বিশেষভাবে সক্ষমকে ফেরালেন ওসি সৌভিক

পথচারী এবং যাত্রীদের সব সময় পাশে থাকে কলকাতা পুলিশ। তারই আরেক উদাহরণ বৃহস্পতিবার সন্ধেয়। হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের...

শক্তি: ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাই নেই, জানাল মৌসম ভবন

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ‘সাইক্লোনিক সার্কুলেশন’ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উৎকণ্ঠা ছড়িয়েছিল রাজ্যজুড়ে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ ঘিরে ছিল নানা...

ফিরলেন জওয়ান পূর্ণম! স্বামীর সঙ্গে পাঠানকোটে দেখা করতে যাচ্ছেন স্ত্রী রজনী

২২ দিনের উদ্বেগ, অপেক্ষা এবং স্নায়ুচাপের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সুখবর পৌঁছল হুগলির সাউ পরিবারে। পাকিস্তানে আটকে পড়া বিএসএফ...
Exit mobile version