ব্রিটিশবিরোধী কৃষক বিদ্রোহের দ্বিতীয় পর্যায়ের নেত্রী ছিলেন রানি শিরোমণি(Rani Shiromani)। এই বিদ্রোহ চুয়াড় বিদ্রোহ(Chuar revolution) বলে পরিচিত। যদিও এই বিদ্রোহে শুধু চুয়াড় নয়, অনেক জাতি উপজাতি শামিল ছিল। ইংরেজরা বিদ্রোহকে হেয় করার জন্য অবজ্ঞা ভরে নাম দিয়েছিল চুয়াড়। এখানে চুয়াড় শব্দটি ব্যবহৃত হতো, গোঁয়ার- নিচু প্রভৃতি হীন উপমার ক্ষেত্রে। রানি শিরোমণি ব্রিটিশদের হাতে বন্দি হন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল (সম্ভবত)। গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের ১৭ সেপ্টেম্বর (সম্ভবত)। অবশ্য স্বাভাবিক না কি গুপ্তহত্যা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ- এর জন্মের প্রায় দশ বছর আগে সমস্ত কর্মকাণ্ড করে মৃত্যুবরণ করেন রানি শিরোমণি।

রানির গড় বর্তমানে জায়গা পেয়েছে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে। খরচ হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। নির্মিত হয়েছে নজর কাড়া তোরণ, পাকা রাস্তা, চার ধরণের প্রায় ন’টি কটেজ, ক্যাফেটেরিয়া, পারাং নদীর ওপর সেতু। তৈরি হচ্ছে সুইমিংপুল।

রানি শিরোমণি গড়ের প্রবেশ পথে রয়েছে রানি লক্ষ্মীবাঈ- এর প্রতিকৃতি। পর্যটকরা সেই ছবি রানি শিরোমণি’র ভেবে ভুল করছেন। শুধু তাই নয় সেই ছবি তুলে প্রচার করছেন নেট মাধ্যমে। ছড়িয়ে পড়ছে ভুল বার্তা। রানি শিরোমণি’র কোনও প্রামাণ্য প্রতিকৃতি নেই। কুতুরিয়া জুনিয়র হাই স্কুলের উদ্যোগে আর্কাইভ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে রানির প্রামাণ্য মূর্তি।

আরও পড়ুন:Supreme Court: মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্পিকারকে সময় বেধে দিল সুপ্রিম কোর্ট
রানি শিরোমণি গড় থেকে রানি লক্ষ্মীবাঈ- এর ছবি সরিয়ে রানি শিরোমণি’র আর্কাইভ মূর্তির প্রতিকৃতি রাখা যেতে পারে। পরবর্তীকালে কুতুরিয়া জুনিয়র হাই স্কুলের উদ্যোগে নির্মিত রানি শিরোমণি’র আর্কাইভ মূর্তি’র অনুরূপ মূর্তি প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।

বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে রানি শিরোমণি’কে বলা হয়, মেদিনীপুরে রানি লক্ষীবাঈ। ঝাঁসির রানির জন্মের প্রায় দশ বছর আগে সমস্ত কর্মকাণ্ড করে মৃত্যুবরণ করেন রানি শিরোমনি। তাই এক্ষেত্রে তুলনা করাটা ঠিক নয়। যে যার নিজের কর্মকাণ্ডে উজ্জ্বল।

‘ভালোবাসি কর্ণগড়’ সংগঠনের পক্ষ থেকে আবেদন, জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিক। কারণ রানি শিরোমণি এই জেলার মানুষের কাছে শুধু মাত্র ইতিহাস নয়, আবেগ।
