কলকাতায় বসেই বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা! পর্দা ফাঁস প্রতারণা চক্রের

খোদ কলকাতাতে বসেই চলছিল সাইবার প্রতারণা (Cyber Crime)। মূলত কল সেন্টারের আড়ালেই চলছিল এই প্রতরণা চক্র। বিদেশি নাগরিকদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার নাম করে তাদের থেকে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করত এই চক্রটি। প্রতারণার অভিযোগে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সল্টলেকের এ এল ব্লক থেকে ৯ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার ধৃতদের বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এ এল ব্লকের ৩১ নম্বর বাড়িতে কল সেন্টার চালাত এই প্রতারণা চক্রটি। তাদের টার্গেটে ছিল মূলত বিদেশি নাগরিকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানির বাসিন্দারা তাদের প্রতারণার তালিকায় ছিল। সেই কলসেন্টারে বসেই অভিযুক্তরা মাইক্রোসফট সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের একটি ডাটা লিস্ট তৈরি করত। সেই লিস্ট দেখেই ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে বিদেশি নাগরিকদের ফোন করত অভিযুক্তরা।

আরও পড়ুন – ফেসবুকে জীবিত তসলিমা ‘মৃত’ ! 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, টেকনিক্যাল সাপোর্টের নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অ্যাপেল গিফট কার্ড, গুগল পে গিফট কার্ড, টার্গেট গিফট কার্ডের মধ্যে দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা নিত অভিযুক্তরা। এরপর সেই গিফট কার্ডগুলিকে অন্য দেশের মাধ্যমে ভারতীয় মুদ্রায় বদল করে নিজেদের অ্যাকাউন্টে নিত এই চক্রটি। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশ সূত্রে।

বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ বেশ কিছুদিন ধরেই এই চক্রের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছিল। এর আগেও এই চক্রে নাম উঠে এসেছিল শাহবাজ নামের মূল অভিযুক্তের। শেষপর্যন্ত বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ জানতে পারে এই আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা শাহবাজই। সে সল্টলেকের এ এল ব্লকে একটি অফিস খুলে সেখান থেকেই বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।

এরপরই মঙ্গলবার সেই কল সেন্টারে হাজির হয় সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখান থেকে কল সেন্টারের ম্যানেজার অভ্র নীল বোস রায় চৌধুরী ওরফে রাহুল সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত শাহবাজ ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি নিয়ে পালাতে গেলে তাকে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু ব্যর্থ হয়। পুলিশের গাড়িতে ধাক্কা মেরে নিজের গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ এল ব্লকের কল সেন্টার থেকে ৩০টি কম্পিউটার, ১৩টি মোবাইল ফোন, ৩টি রাউটার, ৩টি হার্ড ডিস্ক, ১টি গাড়ি ও সার্ভার উদ্ধার করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম (Cyber Crime) থানার পুলিশ। মূল অভিযুক্তকে খোঁজার পাশাপাশি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ রাজ্যের আর কোথায় কোথায় এই ধরণের প্রতারণা চক্র ছড়িয়ে রয়েছে সেই বিষয়েও তদন্ত চালাচ্ছে।

Previous articleআইএএস ক্যাডার রুল সংশোধনে উদ্যোগী মোদি সরকার, প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleRafael Nadal: অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে নাদাল