রাজধানীতে লজ্জাজনক ঘটনা, গণধর্ষিতাকে মাথা মুড়িয়ে- মুখে কালি মাখিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটানো হল

নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের রাজধানী দিল্লিতে লজ্জার ঘটনা।মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা। এক বিবাহিত তরুণী গণধর্ষিতা হলেন।কারা করলেন?  তরুণীকে উত্যক্ত করতে থাকা এক তরুণের কাকা।

জান  গিয়েছে ওই বিবাহিত মহিলার এক তরফা প্রেমে পড়ে আত্মঘাতী হয় এক যুবক। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী ওই মহিলা।২০ বছর বয়সি ওই মহিলার একটি শিশু সন্তান রয়েছে। দিন কয়েক আগে আত্মঘাতী হন প্রতিবেশী যুবকটি। পুলিশের দাবি, মহিলার দিক থেকে কোনও সাড়া না মিললেও ওই যুবক তাঁর প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। সেই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই মহিলার জন্যই আত্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন যুবকটি।

এরপরই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়।  প্রথমে অপহরণ করে ওই তরুণীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে গণধর্ষণ করা হয়। তারপরের ঘটনা কেউই ভাবতে পারেন নি। ওই গণধর্ষিতাকে মাথা মুড়িয়ে, মুখে কালি মাখিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটানো হয়।শুধুমাত্র এখানেই থেমে থাকেন নি তারা।রীতিমতো উল্লাস করতে দেখা যায় অভিযুক্তদের।এই ঘটনার সাক্ষী দিল্লির কস্তুরবা নগরের বাসিন্দারা।আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ।

 

এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যারা এই নক্কারজনক কাজটি করেছেন,তারা এই সাহস পেলেন কোথা থেকে ? কী কারণে এমন তালিবানি পরিস্থিতি তৈরি হল? কেন আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন অভিযুক্তরা?

দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছেন। তিনি বলেন,  ২০ বছরের এক তরুণীকে বেআইনি মদের কারবারিরা গণধর্ষণ করে। তার পর তাঁর মাথা মুড়িয়ে, জুতোর মালা পরিয়ে, মুখে কালি মাখিয়ে রাস্তায় হাঁটানো হয়। দিল্লি পুলিশকে এ বিষয়ে আমরা নোটিস দিয়েছি। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। ওই তরুণী এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তারও দাবিও জানানো হয়েছে।

ঠিক কী ঘটেছিল, কেনই বা এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি হল ? স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়। তার উপর বেনজির হামলা চালান একদল মহিলা। তারাই মাথা মুড়িয়ে, গলায় জুতোর মালা পরিয়ে, মুখে কালি লেপে রাস্তায় ঘোরানোর ব্যবস্থা করেন। গত ১২ নভেম্বর মহিলার প্রতি অনুরক্ত তরুণ আত্মহত্যা করে বলে জানা গিয়েছে।

অভিযোগ, মহিলাকে যখন ধর্ষণ করা হচ্ছিল তখন ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে অনেকে সেই দৃশ্য উপভোগ করছিলেন।  শাহদারার ওই এলাকায় প্রায় প্রতি ঘরেই বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি হয়। নিত্য মদের আসর বসে।সেই আসর ঘিরে দুষ্কৃতীদের মধ্যে মাঝে মধ্যেই মারামারিও হয়।

এই ঘটনা রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যদিও ড্যামেজ কন্ট্রোলে  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি টুইট করে লিখেছেন,  অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। অপরাধীরা এত সাহস পেল কোথা থেকে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং লেফটেন্যাটন্ট গভর্নর অনিল বাইজলকে আর্জি জানাচ্ছি পুলিশকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়ার। দিল্লিবাসী এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ এবং অপরাধকে কখনওই বরদাস্ত করবে না।’

 

Previous articleটুইটারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংস্থার সিইও পরাগ আগরওয়ালকে চিঠি রাহুলের
Next articleTMC At Commission: গোয়ায় হেনস্থা নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে নালিশ তৃণমূলের