Sunday, November 2, 2025

বিশেষ প্রতিনিধি , ঢাকা:

এবার খোঁজ মিলল ভাসমান হোটেলের! ওই ভাসমান হোটেল আছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে বাবুবাজার সেতুর ঠিক নিচেই মিটফোর্ড মর্গের পাশেই আছে বেশ কিছু ভাসমান হোটেল। আসলে সেখানে নদীর তীরে বাঁধা আছে কয়েকটি নৌকা। সেই নৌকাকেই হোটেলের আকার দেওয়া হয়েছে। থাকার বন্দোবস্তও রয়েছে। আছে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও।
কম টাকায় থাকা যায় বলে ওই হোটেলের ঘরে এসে থাকেন অনেকেই।হোটেল হিসেবে সাজানো নৌকাগুলি দোতলা। এই রকম অন্তত পাঁচটি ভাসমান হোটেল আছে সেখানে। নৌকার মধ্যেই হোটেলের রুমের মতোই আছে অনেকগুলি ঘর। সেগুলির উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ছ’ ফুট, সোয়া চার ফুট ও আড়াই ফুট। আকার অনুযায়ী, প্রতিটি ঘরের ভাড়া ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। তবে ১৫০ টাকার ঘরগুলি তুলনায় একটু বড়। সেখানে একসঙ্গে পাঁচ জন মানুষ থাকতে পারেন।
ভাড়া অল্প হলেও এসব হোটেলের যাঁরা থাকেন তাঁরা কম সুবিধা পান না। শীতের সময়ে লেপ, কম্বল, তোষক, বালিশ, পানীয় জল, মোবাইল চার্জার সহ সব ধরনের বৈদ্যুতিন সুবিধার ব্যবস্থা আছে এখানে। ওই ঘরগুলি সকাল ছ’টা থেকে রাত দু’টো পর্যন্ত খোলা থাকে।
শরীয়তপুর মুসলিম বোর্ডিংয়ের ম্যানেজার শাহ জামাল জানান, ওই বোর্ডিংয়ের মালিক আবদুস সাত্তার ১৯৬০ সালে এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছেলে ওই ব্যবসা চালাচ্ছেন । দোতলা হোটেলে মোট ৫২টি ঘর আছে। তিনি জানান, সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষরাই এখানে থাকতে আসেন। বিশেষ করে যাদের কোনও সুনির্দিষ্ট আয়ের উৎস নেই। এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁরা বছরের পর বছর সেখানেই আছেন। একজন তো প্রায় ৪০ বছরের বেশি সময় সেখানে আছেন বলেও, জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের সুবিধাকে মাথায় রেখে ঘরের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। আমরা তাঁদের বিনামূল্যে কম্বল, জল ও বিদ্যুতের সুবিধা দিই।’পুরাতন ঢাকার বাদামতলি এলাকার ফল বিক্রেতা হাসান । তিনি জানান , তিনি প্রায় ছ’ মাস ধরে আছেন সেখানে। তিনি যে ঘরে থাকেন সেটার ভাড়া ৮০ টাকা। তিনি বলেন, ‘আগে আমি একটা মেসে থাকতাম। সেখানে খরচ বেশি পড়ত। কিন্তু এখানে অনেক কম টাকায় থাকতে পারছি। সেই সঙ্গেই বাড়তি কিছু সুবিধাও পাওয়া যায়।’

ফরিদপুর মুসলিম বোর্ডিংয়ের ম্যানেজার মোস্তফা কামাল জানান, তাঁরা ওই হোটেল প্রায় ৩৩ বছর ধরে চালাচ্ছেন। তাঁর হোটেলে এখন ৪৮টি ঘর আছে। সবুজ মিয়ার বোর্ডিংয়ের আগের নাম ছিল বুড়িগঙ্গা বোর্ডিং। সেখানে প্রায় ৩০টি ঘর রয়েছে। এই সব হোটেলে রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই। খাবার আনতে হয় বাইরে থেকে।

তবে একটা সমস্যা আছে । সেটা হল মশার উপদ্রব ও বুড়িগঙ্গার পচা গন্ধ। কিন্তু, সেই সমস্যাকে আমল দিতে চান না এই ভাসমান হোটেলে বসবাসকারীরা। কারণ, নদীর ঢেউয়ে নৌকার মৃদু দুলুনি উপভোগ করতে করতেই সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন তাঁরা।

Related articles

শুভেন্দুর স্বাস্থ্য শিবিরে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা! নিরপেক্ষতা কোথায়? প্রশ্ন তৃণমূলের

জাতীয় মহিলা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগ, বিজেপির নির্দেশ মেনে ও রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করছে...

SIR আবহে প্রকাশিত ‘আমি কী নাগরিক?’, বিজেপির পর্দাফাঁস ব্রাত্যর

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও বিশিষ্ট নাট্যকার ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) হাতে রবিবার প্রকাশিত হলো নাগরিকত্ব, দেশভাগ ও সাংবিধানিক অধিকার...

বেঙ্গালুরুতে সিগন্যাল ভেঙে ছুটল অ্যাম্বুল্যান্স, মৃত ২

বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) রাস্তায় সিগন্যাল ভেঙে ছুটল একটি অ্যাম্বুল্যান্স। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল ২ জনের। সামনে দাঁড়িয়ে...

SIR-এর ছদ্মবেশে NRC! বৈধ ভোটারের ভোটাধিকার কাড়ার বিরুদ্ধে গর্জে উঠে গণমঞ্চ

রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই টানা আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের। সেখানেই কেন্দ্রের সরকারের এসআইআর (SIR)...
Exit mobile version