Saikat Mitra Reaction: “উনি দেবী, ঈশ্বরের কখনও মৃত্যু হয় না, লতাজি ছিলেন-আছেন-থাকবেন”

সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকারের প্রয়াণে শোক বার্তা দিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সৈকত মিত্র

সৈকত মিত্র, সঙ্গীতশিল্পী

লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) আমার কাছে দেবী উনি ভগবান। ঈশ্বরের কখনও মৃত্যু হয় না। লতাজি ছিলেন-আছেন-থাকবেন। অত্যন্ত খারাপ লাগছে। শুধু সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত জগতের (Music World) সঙ্গে জড়িতরাই নন যাঁরা গান ভালবাসেন তাঁরা সবাই আজ বড় আঘাত পেলেন। বয়স হয়েছিল ঠিকই কিন্তু এই খবর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। সঙ্গীত জগতের (Music World) সবাই লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar) কাছে ঋণী।

আরও পড়ুনঃ Lata Mangeshkar:পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শিবাজী পার্কে লতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে

আমার মনে হয় আগামী সাতদিন সঙ্গীত জগতের সমস্ত মানুষের সঙ্গীত থেকে দূরে থাকা উচিত। এই আবেদন আমি সবার কাছেই করেছি। এটা আগেই বলেছিলাম, যে লতামঙ্গেসকার চলে যাওয়ার পর সাতদিন সঙ্গীতচর্চা বন্ধ রাখা উচিত। যেমন সরস্বতীপুজোর দিন আমরা বই-খাতা দেবীর পায়ে দিয়ে লেখাপড়া করি না, ঠিক তেমনি উনি চলে যাওয়ায় সাতদিন সঙ্গীত চর্চাও বন্ধ রাখা উচিত।

আরও পড়ুনঃ ‘আমি তো শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইতে চাইতাম’, লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতিচারণায় বললেন উস্তাদ রশিদ খান

আমার বাবা প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী শ্যামল মিত্রের (Syamal Mitra) সঙ্গে অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক ছিল লতা মঙ্গেশকরের। ‘বিরাজ বহু’তে সলিল চৌধুরীর (Salil Chowdhuri) সঙ্গীত পরিচালনায় লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে প্রথম ডুয়েট গান শ্যামল মিত্র। সেই সময় লতাজি অনেক উঁচু স্কেলে গান গাইতেন। অনেকেই সেটা হতে পারতেন না। কিন্তু রেকর্ডিং-এর সময় বাবা বলেছিলেন, যে স্কেলটা আরেকটু ওঠালে ভালো হয়। এই কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন লতাজি। বলেছিলেন, “দাদা আপনার সুর সেতারের মতো বাজে।” এরপর তৎকালীন বম্বেতে শ্যামল মিত্রের সঙ্গীত পরিচালনায়, ‘মমতা’, ‘আনন্দ আশ্রম’ ছবিতে গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। আজ বাবার কাছ থেকে শোনা সেসব কথা খুবই মনে পড়ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি দুবার তাঁর সামনাসামনি হই। একবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের একটি অনুষ্ঠানে। আর দ্বিতীয়বার আশা আন্টির বাড়িতে। ওঁরা একই এপার্টমেন্টে ‘গৌরীকুঞ্জ’ থাকতেন। 101 নম্বরে থাকতেন লতা মঙ্গেশকর, 102 নম্বর আশা ভোঁসলে। আশা আন্টির বাড়িতে তখন আমি বসে আছি। সেই সময় ফোন আসে তাঁরা দুজন একসঙ্গে কোথাও ভোট দিতে যাবেন। বাড়ি থেকে বেরিয়ে অপেক্ষা করছি, বেরিয়ে এলেন লতাজি। আশা আন্টি আমাকে নিয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় করান। তিনি আমাকে অনেক আশীর্বাদ করেছিলেন।

লতাজি এক জীবনে যা করে গিয়েছেন তার আশ্চর্য। অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। আমার মতে, তাঁর আগেও কিছু ছিল না, তারপরেও কিছু থাকবে না। উনি নিজেই একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান। রবীন্দ্রনাথের পরে ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে যদি কারও নাম আসে সেটা লতা মঙ্গেশকর। আগামী সাতদিন সঙ্গীতের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখব না। আমার বন্ধুদের কাছেও আমার সেই অনুরোধ।