মাত্র একবছরেই মোহভঙ্গ! বিজেপি বিধায়ক শঙ্করের থেকে মুখ ফেরালো শিলিগুড়ি

মাত্র একবছর আগে বিধানসভা ভোটে বিপুল জনসমর্থন পাওয়ার পরেও কী এমন ঘটলো এই কয়েক মাসে, যেখানে তিনি শুধু হারলেন না, চলে গেলেন তৃতীয় স্থানে?

মাঝে মাত্র এক বছরের ব্যবধান। চিত্রটা একেবারে উল্টে গেল। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক “গুরু” অশোক ভট্টাচার্য-এর সঙ্গ ত্যাগ করে বাম ছেড়ে রাম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন শঙ্কর ঘোষ। নিজের গুরুকে হারিয়ে শিলিগুড়ি বিধানসভা থেকে বিজেপির প্রতীকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। সেই অংক থেকেই এবার গেরুয়া শিবির তাঁকে শিলিগুড়ি পুরভোটে মুখ করে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিল। কিন্তু তৈরি প্লাটফর্মেও মুখ থুবড়ে পড়লেন শঙ্কর। এবার একসঙ্গে হার সঙ্গী হল গুরু-শিষ্যের। গোটা শিলিগুড়ির আশীর্বাদ যাঁর সঙ্গে ছিল, নিজের ওয়ার্ডেই কেন তিনি কলকে পেলেন না, তা নিয়ে আগামী কয়েক মাস বিচারে-বিশ্লেষণে মাথার চুল ছিঁড়তে হতে পারে গেরুয়া শিবিরকে।

তাহলে কি বিধায়ক হিসেবে কার্যফল শূন্য! নাকি উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপির উপর আস্থা হারালেন? বিধায়ক হিসেবে তিনি গত একবছরে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য কাজ করে উঠতে পারেননি। তাঁর এলাকারই একাংশের বক্তব্য, বিজেপিকে জিতিয়ে ফের এলাকাকে বঞ্চিত করে রাখার কোনও মানে হয় না। যার ফলে পরপর দুটি নির্বাচনে জেতার পরও প্রথমবার নির্বাচনে হার স্বীকার করতে হয়েছে শঙ্করকে।

বিজেপিতে বহু আগেই যোগ দিয়েছিলেন চে গেভারার ট্যাটুওয়ালা শঙ্কর। বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিধায়কও হয়েছিলেন তিনি। হেরে গিয়ে অবাক শঙ্কর বলছেন, ‘’শিলিগুড়ির মানুষ মনে করেছে অন্যেরা আরও ভাল কাজ করবে। এলাকার উন্নতিই প্রধান। কে হারল কে জিতল তা বড় কথা নয়। তবে গত ৬ বছর অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করে পাড়াকে সাজিয়েছি। তাই অন্তত এটা আশা করিনি। তবে মানুষ যেটা ঠিক করেছে তা মাথা পেতে নিতে হবে। ওয়ার্ডে আমি রয়েছি তৃতীয় স্থানে।”

কিন্তু মাত্র একবছর আগে বিধানসভা ভোটে বিপুল জনসমর্থন পাওয়ার পরেও কী এমন ঘটলো এই কয়েক মাসে, যেখানে তিনি শুধু হারলেন না, চলে গেলেন তৃতীয় স্থানে? আসল প্রসঙ্গ কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে শঙ্কর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘মানুষ কেন আমাকে প্রত্যাখ্যান করল তা নিয়ে অনেক কথাই বলা যায়। তবে এখন আর কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। আমাদের প্রত্যাশামতো ফল হয়নি। মানুষ তাদের মতো করে প্রার্থী বেছে নিল। কাউন্সিলর হিসেবে অনেকটাই কাজ করেছি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আমার প্রত্যাশা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। ফলাফল বিশ্লেষণ করে আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এটাই বলব।”

আরও পড়ুন- বিজেপি নিশ্চিন্ত হয়ে যাবে, কেন এমন বললেন রীতেশ?