তালিবানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্কুল চালাচ্ছেন সাহসিনী, পড়তে আসে মেয়েরাও

তালিবান(Taliban) আফগানিস্তানের(Afganistan) দখল নেওয়ার পর কাবুলিওয়ালার দেশে ফের ফিরে এসেছে অন্ধকার যুগ। ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালানোর পাশাপাশি মহিলাদের উপর জারি হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। নারীশিক্ষা সেখানে এখন অতীত। যদিও তালিবান শাসনে ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মধ্যেও আফগানিস্থানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে চলছে এক স্কুল। স্কুল যিনি চালাচ্ছেন তিনি একজন মহিলা এবং সেখানে পড়ুয়াদের অধিকাংশই মেয়ে। তালিবান জামানতেও বন্ধ হয়নি ২২ বছর বয়সী সাহসিনী ফ্রেশতার(Freshta) স্কুল(School)।

জানা যায়, মাত্র ১২ বছর বয়সে এই স্কুল খুলেছিলেন ফ্রেশতা। পাহাড়ি এই অঞ্চলে মহিলাদের শিক্ষার হার অত্যন্ত কম। তবে যেটুকু শিক্ষার আলো এখানে পৌঁছেছে তার সবটুকু কৃতিত্ব ফ্রেশতার। কয়েক মাস আগেই বামিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে তিনি এই এলাকার একমাত্র স্নাতক।

অবৈতনিক স্কুলটিতে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা ধরে পড়াশোনার চলে। পড়াশোনা করে আশপাশের ৫০ টি পরিবারের সন্তান। যাদের বয়স ৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। আফগানিস্তানে যখন সরকারি শাসন ছিল তখন মার্কিন সেনা এই স্কুলটি পাহারায় থাকতো। তবে আগস্টে সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর আফগানবাসীর উপর নেমে আসে তালিবানি রক্তচক্ষু। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রেশতা বলেন, আমার এই স্কুল অত্যন্ত সুন্দর ছিল, কিন্তু তালিবান যখন এই অঞ্চলে ঢুকে পড়ে তখন আমার বন্ধুরা আমাকে সাবধান করে দেয়। অত্যন্ত ভয়ে ছিলাম আমরা। প্রথমত আমি স্কুল চালাই তার উপর মেয়েদের পড়াই। ফলস্বরূপ স্কুলের সব পোস্টার, আঁকা ছবি, রং, পেন সব নদীতে ফেলে দিতে হয়। বেশ কয়েকবার তালিবানের মুখোমুখি হতে হয়েছে। যদিও তালিবানকে ঘুনাক্ষরেও টের পেতে দেওয়া হয়নি এখানে কোনও স্কুল রয়েছে।

আরও পড়ুন:আনিস হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ আইনজীবী

ফ্রেশতা আরো বলেন, স্কুলের নিজস্ব কোনও রোজগার নেই। যেটুকু সামান্য অনুদান আসে তা দিয়ে স্কুল রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে। নিজের স্বপ্নের স্কুলকে আগামী দিনেও একই ভাবে চালিয়ে যেতে চান এই অসমসাহসী আফগান তরুণী। এই মুহূর্তে খাদ্য সংকটে বিপন্ন কাবুলিওয়ালার দেশ। তবু পেটে খিদে নিয়েও ফ্রেশতার পড়ুয়ারা আসে রোজ। আর পাঠ নেয় জীবনের। প্রতিকুলতাকে পিছনে ফেলে শিরদাঁড়া সোজা করে চলছে এক স্বপ্ন পূরণের লড়াই।

Previous articleপুরভোটে একই ওয়ার্ডে দুই দলের প্রার্থীর নাম একই! কোথায় জানেন?
Next articleCAB: ঋদ্ধির আচরণে ক্ষুব্ধ সিএবি সচিব, বললেন, সৌরভের সঙ্গে আলোচনা প্রকাশ্যে আনা উচিত হয়নি ওর