আমতার বাদিন্দা ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। আনিসের রহস্যমৃত্যুর পর থেকেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে নিহত ছাত্রনেতাকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে প্রতিবাদে-বিক্ষোভে সামিল হয়েছে SFI সহ বামছাত্র-সংগঠনগুলি। এককথায় ছাত্রনেতার মৃত্যু নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে বিরোধী দলগুলি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সিট গঠন করে তদন্তের গতি এনেছেন, তারপরও থামছে না ছাত্রনেতার মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি।
তারই প্রতিবাদে আজ, সোমবার আনিসকাণ্ডে রাজনীতির অভিযোগ এনে পথে নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। একইসঙ্গে সিট গঠন করে তদন্তে গতি আনায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এবং এই মিছিল থেকেই প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তোলা হয়।
এদিন রামলীলা পার্ক থেকে শুরু মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে গিয়ে এই বিশাল মিছিল শেষ হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সদস্যরা এই মিছিলে পা মেলান। একটা সময় পর এই মিছিল মহামিছিলের রূপ নেয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, এদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ছাত্রছাত্রী তাদের ডাকে পথে নেমেছিল। এবং বাস্তবে সেই ছবিই দেখা গিয়েছে। মিছিল যখন মেয়ো রোডে শেষ হয়, তখন সেই মিছিলের ‘ল্যাজ’ ছিল মৌলালিতে। ফলে এদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর ও মধ্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই মহামিছিলের জন্য কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বলা ভালো, গোটা শহরের দখল নিয়ে নেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
এই মিছিলে উল্লেখযোগ্যভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল ছাত্র ও যুব সভাপতি সার্থক বন্দোপাধ্যায়, মধ্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সংগঠনের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। এছাড়াও মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
এদিন আনিস হত্যা নিয়ে বিরোধীদের ঘৃণ্য রাজনীতি নিয়ে পথে নেমে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের এই মিছিল থেকে স্লোগান উঠল, ‘পুলিশের গাড়িতে বোম মারা হল কেন সিপিএম জবাব দাও’। ব্যানারে লেখা , ’কমরেডদের রক্তমাখা হাতে দরদের নাটক ও অরাজকতা বন্ধ হোক।’
উল্লেখ্য, আনিস রহস্যমৃত্যু সমাধানে সিট গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই তিন পুলিশকর্মী সাসপেন্ড ও দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দোষীদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। হাইকোর্টও সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছে। জানিয়েছে, ছাত্রনেতার মৃত্যুতে তদন্ত করবে রাজ্য সরকারের সিটই। এবার ছাত্রনেতার রহস্যমৃত্যু নিয়ে ‘রাজনীতি বন্ধ হোক দাবি তুলে টিএমসিপি’র পথে নামা খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুন- রাজ্যপালের মুখে বিরোধীদের কথা! কমিশনারকে ডেকে পুনর্নির্বাচনের দাবি ধনকড়ের