এর চেয়ে মরে যাওয়া ভাল: ভারতীয় দূতাবাসের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ অসহায় পড়ুয়ারা

একেবারে শুরুতে যুদ্ধ বিধস্ত ইউক্রেনে(Ukraine) আটকে থাকা পড়ুয়াদের(Student) ফেরাতে ‘মসিহা’ রূপে ধরা দিয়েছিল ভারত সরকার। তবে বাস্তব যে ছবিটা ইউক্রেন থেকে উঠে আসছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। আটকে থাকা পড়ুয়াদের দাবি, দূতাবাসের আশ্বাস পেয়ে মাইনাস ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দীর্ঘ পথ হেঁটে কোনওমতে সীমান্তে এসে উপস্থিত হলেও সেখানে ভারত সরকারের তরফে কোনও সহায়তা আসেনি। উল্টে ইউক্রেনের সেনা বাহিনী রীতিমত বলপ্রয়োগ করে পড়ুয়াদের ভিতরে পাঠানোর চেষ্টা করছে। পোল্যান্ড সীমান্ত(Poland Border), রোমানিয়া সীমান্ত সর্বত্র দেখা গিয়েছে একই ছবি। খাবার, জল ছাড়া দীর্ঘ ১০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে হাজার হাজার পড়ুয়া সীমান্তে জড়ো হয়েছেন অথচ সেখানে তাদের উদ্ধার করার জন্য ভারতের তরফে কেউ উপস্থিত নেই। ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আটকে থাকা অসহায় পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, এর চেয়ে মরে যাওয়া ভাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসা একাধিক ভিডিও তুলে ধরছে সরকারের আশ্বাস পেয়ে সীমান্তে এসে কি ভয়াবহ দুরবস্থায় পড়েছেন ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়রা। সীমান্তে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দূতাবাসকে ফোনে ধরার চেষ্টা হলেও কেউ ফোন তুলছেন না। তুললেও বলা হচ্ছে সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ডে চলে আসার জন্য। অথচ দূতাবাসের সাহায্য ছাড়া এটা কীভাবে সম্ভব? জানতে চাওয়া হলে ফোন কেটে দেওয়া হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, সীমান্তে এসে জড়ো হওয়া পড়ুয়াদের উপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়াদের এলোপাথাড়ি লাথি মারছে সেনা। মাইনাস ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খোলা আকাসের নিচে জড়ো হয়ে বসে রয়েছেন পড়ুয়ারা। অথচ দেখা নেই ভারতীয় দূতাবাসের কোনও প্রতিনিধির। ভিডিও বার্তায় চোখে জল নিয়ে এক পড়ুয়াকে বলতে শোনা যাচ্ছে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জল খাবার ছাড়া ১০ ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি। এর চেয়ে ভালো গুলি খেয়ে ওখানেই মরে গেলে ভালো হত। ইউক্রেনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করা পোল্যান্ড- রোমানিয়া সমস্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় দেখা গিয়েছে একই ছবি। পড়ুয়ারা প্রশ্ন তুলছে যদি উদ্ধার না করা হয় তাহলে কেন সীমান্তে আসতে বলল দূতাবাস? তার উপর রয়েছে ভারতীয়দের উপর ইউক্রেন সেনার নির্যাতন। পড়ুয়াদের উদ্ধারে ভারত সরকারের জেই ব্যর্থতা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন:Satellite Image: রাজধানীর দখল চাই, কিভের পথে ৫ কিমি দীর্ঘ আগ্রাসী রুশ বাহিনী

যদিও এই ঘটনার কারণ হিসেবে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের অবস্থানকে দায়ি করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। দাবি করা হচ্ছে, ভারতের অবস্থানের কারণে ইউক্রেনে সমস্যার মুখে পড়ছেন ভারতীয়রা। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। তবে সেখানে ভোট না দিয়ে কারযত রাশিয়ার পাশেই দাঁড়ায় ভারত। পাশাপাশি যখন ন্যাটো ও মস্কোর হুঙ্কারে পরিস্থিতি ক্রমে পারমাণবিক সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য প্রস্তাব পেশ হয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে। সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১১টি। বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া। ভোটদানে বিরত থাকে ভারত, চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। যুদ্ধ বিধ্বস্ত অবস্থায় বারবার নিরব থেকে ভারতের কার্যত রাশিয়াকে সমর্থন মোটেই ভালো চোখে নিচ্ছে না কিয়েভ। তারই ফল ভুগতে হচ্ছে সেখানে থাকা ভারতীয়দের।

Previous articleBJP-STRIKE: নেতৃত্বেই দ্বিমত! অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেও ব্যর্থ বিজেপির ডাকা বাংলা বনধ
Next articleBook Fair: সেন্ট্রাল পার্কের নয়া নাম: ৪৫তম কলকাতা বইমেলার উদ্বেধন করে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর