নন্দীগ্রাম দিবসে সেই সময়কার কথা স্মরণ করলেন তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন।
নন্দীগ্রাম দিবসে শহিদ স্মরণ। মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে সোমবার অল্প সময়ের জন্য শহিদ-স্মরণের অনুষ্ঠান করা হয়। অনুষ্ঠানে ২০০৭-এ সেই অগ্নিগর্ভ দিনগুলির কথা স্মরণ করে দোলা। জানান, সেদিন তৃণমূল ছাড়া আর কোনও রাজনৈতিক দল নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে ছিল না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো দিনের পর দিন ছুটে বেরিয়েছেন। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) খুন করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পিছিয়ে যাননি নেত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দোলা সেন (Dola Sen)। ছিলেন পূর্ণেন্দু বসু (Purnedu Basu)-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
দেলা জানান, ২০০৭-এর ১৪ মার্চ রাতে তাঁদের নিয়ে তমলুকে গেস্ট হাউজে থাকেন মমতা। সবাইকে ঘুমোতে পাঠিয়ে নিজে জেগে থাকেন সারারাত। ১৫ মার্চ ভোরে থেকে রওনা হন নন্দীগ্রামের উদ্দেশে। দোলার অভিযোগ, সেদিন বিরোধীদলের মহিলা নেত্রীকে রাস্তায় অসম্মানিত করে সিপিআইএমের হার্মাদ বাহিনী। পুলিশের ছোড়া কাঁদনে গ্যাসের শেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন মমতা।
তবে, মার্চেই শেষ নয় ২০০৭-এ সারা বছর ধরে অত্যাচার চালায় সেই তৎকালীন শাসকদল। নভেম্বরে অপরেশন সূর্যোদয়-এর নামে নন্দীগ্রামে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। শুধু মার্চেই নয়, নভেম্বরেও অনেক মানুষ খুন হন নন্দীগ্রামে। কিন্তু স্থানীয়রা জমি বাঁচানো লড়াই থেকে সরে আসেননি। মাথা নীচু করেননি। নভেম্বরের সেইসব কালো দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢুকতে দেয়নি সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী। তিনি বাইকে করে ঘুর পথে যান। সেই সময় বিরোধী দল নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি এসেছিলেন নন্দীগ্রামে। তাঁদের গাড়িতে তিন তৃণমূল নেতা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। অত অত্যাচারের পরেও পরেও মাথা নোয়াননি নন্দীগ্রামের মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কারণেই বলেন, “ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলব নাকো নন্দীগ্রাম”। মহাশ্বেতা দেবী থেকে শুরু করে শাঁওলি মিত্র, কবীর সুমন থেকে প্রতুল মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকে ছিলেন সেদিন। তবে, রাজনৈতিক দল হিসেবে একমাত্র তৃণমূলই ছিল নন্দীগ্রামের পাশে।
দোলা সেন ছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা আশিস চক্রবর্তী, সঞ্জয় বক্সি, অশোক দাস, আবু সুফিয়ান, আবু তাহের, ফিরোজা বিবি, তুষার মণ্ডল-সহ নেতৃত্ব। শহিদ পরিবারের সদস্যদের মঞ্চে তুলে নেন দোলা। তিনি বলেন, “যতদিন সজ্ঞানে থাকব, ততদিন নন্দীগ্রামের পাশে থাকব।“