অধিকারীদের জবাব দিয়ে পঞ্চায়েত-লোকসভায় নন্দীগ্রামে বিজেপিকে সাফ করার ডাক কুণালের

নন্দীগ্রামে দিবসের সভা থেকে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০২৪ লোকসভা ভোটে বিজেপিকে সাফ করার ডাক দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক

“এই নন্দীগ্রাম থেকেই আগামিদিন তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েতের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মানুষকে পরিষেবা দেবেন। সিপিএম অনেক আগেই মুছে গিয়েছে, বিজেপিও থাকবে না। এখন থেকেই পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। নন্দীগ্রামকে বিজেপি শূন্য করতে হবে।” এভাবেই নন্দীগ্রামে দিবসের সভা থেকে আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০২৪ লোকসভা ভোটে বিজেপিকে সাফ করার ডাক দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

নন্দীগ্রামে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ও স্থানীয় নেতৃত্বকে এখন থেকেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে কুণাল বলেন, “পরের বছর পঞ্চায়েত ভোট। এখন থেকে বুথে বুথে প্রস্তুতি নিন। বিজেপিকে মুছে দিন। বিজেপি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যান। তাঁদের কাছে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের কথা তুলে ধরুন। আদি বিজেপির সঙ্গে আমাদের নীতির পার্থক্য আছে। তাঁরা তাঁদের মতাদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেন, আমরা আমাদের মতাদর্শ নিয়ে করি। কিন্তু নব্য ও তৎকালদের দখলে চলে গিয়েছে বিজেপি, আদিদের সেটা বোঝানোর চেষ্টা করুন। একইভাবে সিপিএমকে যাঁরা ভোট দিতেন, সেই বামপন্থীদের বাড়িতেও যান। তাঁদের বুঝিয়ে বলুন, সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে নিজের ভোট নষ্ট করা। সিপিএম জিততে পারবে না, তাই বিজেপিকে উৎখাত করতে আপনার মূল্যবান ভোট তৃণমূলকে দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকলে কেন আপনারা তৃণমূলকে ভোট দেবেন না?”

এরপরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কুণাল কাঁথির অধিকারী পরিবার ও শুভেন্দুকে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করেন কুণাল। তিনি বলেন, “একুশের বিধানসভা ভোটে বাংলায় ২১৩টি কেন্দ্রের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়েছেন। নন্দীগ্রাম ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু গদ্দার, কাপুরুষ শুভেন্দু অধিকারী মানুষের ভোটে জিততে না পেরে লোডশেডিং করে, ভয় দেখিয়ে জিতেছে। আদালতে মামলা চলছে। বিচার হবে। আর এখন ভোটে জিততে না পেরে বেইমানটা এজেন্সি নিয়ে মাঠে নেমেছে। কিন্তু এটা বেশিদিন চলবে না।”

বাংলার বুকে একের পর এক নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয় তুলে ধরেও শুভেন্দুকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কুণাল। তাঁর কথায়, “কোমরে এতো জোর। বিরাট বড় নেতা। যে নিজের বুথ, নিজের ওয়ার্ডে জিততে পারে না। ২০২৬ সালে ওকে Ex MLA করা হবে। আর চব্বিশেরর লোকসভা নির্বাচনের পর ওর বাবা-ভাইকে Ex MP প্যাড ছাপিয়ে রাখতে হবে। বাপের ব্যাটা হলে শুভেন্দু বলুক, ওর বাবা আর ভাই কোন দলে আছে। গোটা পরিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পেয়ে এখন বড় বড় কথা বলছে।”

নন্দীগ্রাম দিবসে সকল গ্রামবাসীকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়ে কুণাল বলেন, “নন্দীগ্রামে শহিদের রক্ত বেচে যারা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, সেই অধিকারী পরিবারকে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে উৎখাত করতে হবে। ওদের ভোটে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। লোডশেডিংয়ে জেতা বিধায়ককে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায় না। মানুষের প্রয়োজনে ফোন তোলে না। কোনও কাজ করে না। আগামিদিনে নন্দীগ্রামে সমস্তস্তরে।তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা মানুষের সেবা করবে।”

এদিন নন্দীগ্রামের বুকে দাঁড়িয়ে সিপিএমকেও একহাত নেন কুণাল। তিনি বলেন, “সিপিএম একের পর গণহত্যা করে মুছে গেছে বাংলার বুক থেকে। তবুও বড় বড় কথা বলছে। তৃণমূলের আমলে একটিও গণহত্যার নির্দশন নেই। কিন্তু সিপিএম আমলে ছোট আঙারিয়া, নানুর, নন্দীগ্রাম, সাঁইবাড়ি, বিজন সেতু, মরিচঝাঁপি, কোচবিহারের মতো একের পর এক গণহত্যা ঘটনা ঘটেছে। আগে সেই গণহত্যার জবাব দিক সিপিএম, তারপর বড় বড় কথা বলবে।

আরও পড়ুন:লন্ডনে বাংলায় লেখা স্টেশনের নাম: বাংলার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের জয়, টুইট মুখ্যমন্ত্রীর

 

Previous articleলন্ডনে বাংলায় লেখা স্টেশনের নাম: বাংলার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের জয়, টুইট মুখ্যমন্ত্রীর
Next articlePurulia Murder Update: ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে খুনে আটক নিহতর দাদা ও ভাইপো