কেশব রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়: বাড়ির কাছেই একটা বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম বৃহস্পতিবার। হাউজিং এস্টেটের মধ্যে বিয়ে। দেখলাম সব ঘরে আইপিএল চলছে। এটা আমার শহর। রাঁচিতে সবাই আমায় মাহির কোচ বলে চেনে। বিয়ে বাড়িতে আমার অনেক পুরনো ছাত্রর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ওরা বললো, ‘স্যার, আজ মাহি ভাইকো রান মিলেগা’। আমি তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে বাড়ি ফিরলাম। আর তারপরই মন ভরে গেল।

এখনও মাহির খেলা থাকলে টিভির সামনে থেকে উঠি না। খালি মনে হয় আমি উঠলে ও আউট হয়ে যাবে। ঋষভদের বিরুদ্ধে মাহি যেই মিড উইকেটে বল ঠেলে দু’রান নিল, বুঝলাম আজ হবে। তার আগে টিভিতে দেখছিলাম ব্যাট করতে নামার আগে মাহি ড্রেসিংরুমে শ্যাডো করছে। এই না হলে আমার ছাত্র। কোথাও ফাঁক রাখবে না।

একটা হিন্দি সিনেমার কথা মনে পড়ছে। বিশ সাল বাদ। একটু উল্টে নিতে হবে। বলা যাক, বিশ সাল পহেলে। এ তো সেই আগের মাহি। ওই যে মিড উইকেটে বল ঠেলে দৌড়ে দু’রান নিল, তাতেই এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে মাহি এখনও কত ফিট। চেন্নাই আর দিল্লির ক’টা প্লেয়ার ওর মতো এত ফিট, আমার সন্দেহ আছে। দেখুন, আমি মাহিকে ছোট্টবেলা থেকে চিনি। তাই বলছি, নিজের উপর আস্থা আছে বলেই এখনও আইপিএল খেলছে। না হলে অনেক আগেই বুট জোড়া কবে তুলে রাখত।

দিল্লি ম্যাচে ও ঠিক আগের মতো মাচটাকে ঠেলে শেষ ওভারের নিয়ে গেল। আমার তখন মনে হয়েছিল এরপর ঝটকা দেবে। তাই দিল। বেচারা উনাদকাটকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও এটাই হত। সত্যি বলছি, কুড়ি বছর আগের মাহিকেই দেখলাম। ও যেন জানত কোথায় বল পড়বে আর কোথা দিয়ে চার-ছয় হাঁকাবে।

আইপিএল পরের বছর খেলবে কিনা জানি না। ও কি করবে, কাউকে বুঝতেই দেবে না। তবে এখনও যে মাহিই সুপার ফিনিশার, সেটা অন্তত প্রমাণ হয়ে গেল। স্কুলের ম্যাচে মনে আছে বিপক্ষ দল হয়তো কম রানে অল আউট হয়ে গিয়েছে। মাহি আমাকে বলত, স্যার, যাই গিয়ে ম্যাচটা শেষ করে আসি? এটা ওর অভ্যেস। মাহি হল বর্ন ফিনিশার। যতদিন খেলবে, এভাবেই ম্যাচ ফিনিশ করে আসবে।
রাঁচিতে এখন খুব গরম পড়ে গিয়েছে। আমার আবার চার তলার উপর ফ্ল্যাট। গরম তাই আরও বেশি। বিকেলে মাহির এক বন্ধুর দোকানে আড্ডা দিতে যাই। দোকানটার নাম প্রাইম স্পোর্টস। খেলার সরঞ্জামের দোকান। আরও অনেকে আসে। মাহিকে নিয়েই বেশি কথা হয় আমাদের। এই ইনিংসের পর ওকে নিয়ে আমাদের চর্চা আরও বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুন:Ravindra Jadeja:’জানতাম ধোনি ম্যাচ জিতিয়ে ফিরবেন’, বললেন সিএসকে অধিনায়ক রবীন্দ্র জাদেজা
