আন্দোলন করছে তৃণমূল, নাটক করছেন অর্জুন: পাট শিল্পের স্বার্থে পথে নেবে দাবি ঋতব্রতদের

বাংলার পাট তথা চট শিল্পকে ধ্বংস করার কেন্দ্রীয় ষড়যন্ত্র-এর বিরুদ্ধে এবং চটশিল্পের চলতি সঙ্কটের জন্য কেন্দ্রকে নিশানা করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে জুট কমিশনার অফ ইন্ডিয়া অফিস ডেপুটেশনের কর্মসূচি নিয়েছিল। বেলা ২টো নাগাদ আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল সল্টলেক সিটি সেন্টার সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন থেকে জুট কমিশনারের দফতর পর্যন্ত যায়।

 

পরীক্ষার কারণে মাইকের অনুমতি না পাওয়ায় আইএনটিটিইউসি সমাবেশের পরিবর্তে এই প্রতিবাদ মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে ছোট্ট মঞ্চে বক্তৃতা দেন রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না, জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক তথা পাট শিল্প আন্দোলনের অন্যতম নেতা

সোমনাথ শ্যাম, তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সবশেষে সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পীযূষ গোয়েলের কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়।

এদিন একটি প্রতিনিধি দল জুট কমিশনের দফতরে গিয়ে কমিশনার মলয় চন্দন চক্রবর্তীকে ডেপুটেশন দেয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রায় আধঘণ্টা অতিক্রম করার পরেও জুট কমিশনারকে চট শিল্প, কারখানা ও শ্রমিকদের স্বার্থে একাধিক দাবি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতারা করলেও তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমনাথ শ্যামরা।

এই গোটা ঘটনায় ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং তাদের শাসক দল বিজেপির চক্রান্ত দেখছেন। বাংলার চট শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত কমপক্ষে তিন কোটি মানুষ। কেন্দ্রীয় ষড়যন্ত্রে এই মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। বেশকিছু পাট কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, বাকিগুলি বন্ধের মুখে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্লাস্টিক লবির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ রাজ্যের পাট শিল্পকে ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র, এমনটাই অভিযোগ করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। আর জুট কমিশনার তাঁদের সমস্ত প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বিষয়টি বিচারাধীন বলে অজুহাত খাড়া করছেন। তবে এভাবে চলতে থাকলে খুব দ্রুত আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন হাঁটবে বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে বস্ত্রমন্ত্রী সম্প্রতি ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে কথা বলেছেন। তবে মন্ত্রী এবং সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পরও ললিপপে তিনি ভুলবেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি’র এই সাংসদ। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম স্পষ্ট জানিয়েছেন, অর্জুন সিংয়ের অবস্থান নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যাথা নেই। বাংলার পাট শিল্প নিয়ে কেন্দ্রের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আজ অনেক মানুষ পথে হেঁটেছেন, অর্জুন সিং সত্যি যদি পাট শিল্প এবং শ্রমিকদের স্বার্থে কথা বলতেন, তাহলে তিনিও যোগ দিতে পারতেন। কিন্তু ব্যারাকপুরের সাংসদ নিজের গদি বাঁচাতে নাটক করছেন বলেই দাবি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের।

 

Previous articleচরমে অন্তর্দ্বন্দ্ব: হাইকোর্টে মামলা লড়তে এসে কংগ্রেসি আইনজীবীদেরই হেনস্থার শিকার চিদম্বরম
Next articleরেপো রেট বাড়ালো রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, বাড়তে চলেছে EMI-এর বোঝা