বন্দি থাকাকালীন জেলের মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ VS রাজ্য সরকার মামলায় আজ, শুক্রবার রায় দিল বিধাননগর MP-MLA কোর্ট। যেখানে
দোষী সাব্যস্ত হলেন কুণাল ঘোষ। যদিও তাঁকে কোনওরকম শাস্তি দিলেন না এই মামলার বিচারক মনোজ্যাতি ভট্টাচার্য। কুণাল ঘোষের সামাজিক সম্মানের দিকটি মাথায় রেখেই এমন রায় বিচারক মনোজ্যাতি ভট্টাচার্য-এর।
এদিন রায় দানের সময় বিচারক বলেন, “কুণাল ঘোষ দোষী সাব্যস্ত। আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শাস্তি দেবে না। শুধু ওঁকে বলব এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। আপনি যে লড়াই করছেন করুন। যত অবসাদই হোক, আত্মহত্যায় সমস্যার সমাধান হয় না। আপনি বিশিষ্ট সাংবাদিক। প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান। আপনার কাছ থেকে সমাজ অনেক কিছু আশা করে। আপনি মামলা আইনে লড়ুন এবং কাজ চালিয়ে যান। আত্মহত্যা করবেন না।”
কুণালকে তিরস্কারের পাশাপাশি মনোজ্যাতি ভট্টাচার্য প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ভূমিকারও কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “কুণাল ঘোষের লাইফ রিস্ক ছিল। খুন হতে পারতেন। যথাযথ নিরাপত্তা ছিল না।”
আরও পড়ুন:পরিবারের একজনকেই টিকিট, ৫ বছরের বেশি পদ নয়: নয়া নিয়মের পথে কংগ্রেস
রায়দানের পর আদালত কক্ষের বাইরে এসে কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতে বলেন, “আজকে আদালতের এমন রায়দানের মধ্যে দিয়ে অন্তত এটা পরিস্কার, সেদিন আমি নাটক করিনি। আমি পাগল নই। সেদিন যাঁরা বলেছিলেন আমি নাটক করছি, পাগল, আজ তাঁরা দেখুন রাজ্যেরই প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা আত্মহত্যার চেষ্টা। আমি আমার মতো আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। আমি কোনও অন্যায় করিনি। বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আমার বিশ্বাস সেটাও একদিন আদালতে প্রমাণ হয়ে যাবে।”
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর জেলের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কুণাল। সেই সময় অভিযোগ দায়ের হয় যে, কুণাল একসঙ্গে অনেকগুলি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন প্রেসিডেন্সি জেলের ভিতরে। তৎক্ষণাৎ কুণালকে ভর্তি করানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। তদন্তকারীরা জানান আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন কুণাল। যা আইনত অপরাধ। কিন্তু পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমানে কুণাল যে নিজে থেকে ঘুমের ওষুধ নিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জটিলতা তৈরি হয়। সেই যুক্তির জটিলতা আবর্তে দাঁড়িয়ে শুক্রবার কুণালের “আত্মহত্যা”র চেষ্টা মামলার রায়দান করলেন বিধাননগর MP-MLA কোর্টের বিচারক মনোজ্যাতি ভট্টাচার্য।