শ্রমিক সমাবেশে উপচে পড়া ভিড়, হলদিয়ার জনপ্লাবন দেখে অভিষেকের মন্তব্য: আগে কোথাও দেখিনি

সোমনাথ বিশ্বাস, পূর্ব মেদিনীপুর

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তিনি। রাজ্যের কোণায় কোণায় ঘুরে সভা করেন। তৃণমূলের সংগঠন অন্যান্য রাজ্যে বিস্তার করায়, দেশের নানা প্রান্তে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু শনিবার, হলদিয়ার রানিচকের সংহতি ময়দানের তৃণমূলের (TMC) শ্রমিক সমাবেশের জনপ্লাবন দেখে অভিষেক বলেন, আগে কোথাও দেখিনি।

এদিন, সমাবেশ শুরু হয় বেলা একটা নাগাদ। কিন্তু সকাল থেকেই হলদিয়ার (Haldia) রাস্তা ছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দখলে। এটা মূল দলের সভা নয়, একটি শাখা সংগঠন INTTUC-র সমাবেশ। তাও শুধু একটি জেলার। সেখানে বাইরে থেকে লোক আসার সম্ভাবনাই নেই। যে সব ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সদস্য-সমর্থকরা সমাবেশে যোগ দেন, সেখানেও ছিল শুধু এলাকার শ্রমিক সংগঠনের নাম। কিন্তু তাতেই ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই দশা। ভিড় দেখে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিজেই বলেন, সংহতি ময়দানও তৃণমূলের একটা জেলার শ্রমিক সমাবেশের জন্য ছোট পড়েছে। যত লোক সভাস্থলে উপস্থিত, তার থেকে বেশি মানুষ, রাস্তায় হাঁটছেন। তিনি বলেন, যতদূর মাইকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, তাঁদের সবাইকে বলছি এরকম জনসমাগম আগে দেখেনি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সুবাদে বাংলায় তো বটেই, রাজ্যের বাইরেও যাই। কারণ, তৃণমূলের সংগঠন এখন দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনের ডাকে একটি জেলার সমাবেশে এতো ভিড় কোথাও দেখিনি।

অভিষেককে দেখার জন্য় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল পূর্ব মেদিনীপুর। তীব্র গরম উপেক্ষা করেই বসেছিলেন সবাই। হলদিয়ার রয়েছে তৃণমূলের সাংগঠিক জেলা তমলুক ও কাঁথির গা ঘেঁষে। সেখান থেকে সব শ্রমিকরা এসেছিলেন সমাবেশে।

সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো ছিল মহিলাদের উপস্থিতি। সমাবেশস্থলে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অভিষেকের আসার প্রহর গুণছিলেন সবাই। সভাস্থলে আসার পথেই, তাঁকে ফুল ছুড়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান মহিলারা। আপ্লুত অভিষেক বলেন, মায়েদের আর্শীবাদ পেয়েছি। হলদিয়ার রাজনীতিতে তাঁদের উপস্থিতি কম। এই নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের মাধ্যমে অভিষেকের কাছে বার্তা পাঠান মহিলারা। জানান, তাঁরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তৃণমূলের সংগঠন করতে চান।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এক একটি কথায় করতলি দিয়ে সমর্থন জানান উপস্থিত জনতা। বারবার তাঁর নামে জয়ধ্বনি ওঠে। আর শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ওঠে প্রবল ধিক্কার। অধিকারীদের উদ্দেশ্য করে আওয়াজ ওঠে ‘গদ্দার’। অভিষেক নিজেই সেই জনতাকে শান্ত করেন। তবে, এদিনের সভা ছিল বক্তা-শ্রোতার বাক্য বিনিময়ের। যেন জননেতাকে সামনে পেয়ে নিজেদের সব কথা উজাড় করে দিতে চাইছেন মানুষ। অভিষেকও বারবার বক্তব্য থামিয়ে তাঁদের কথা শুনেছেন। উত্তর দিয়েছেন। মুছে গিয়েছে মঞ্চ আর দর্শকাসনের বেড়া।

তবে, শুধু অভিষেক নন, সমাবেশের জন্য মন্ত্রী মলয় ঘটক, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, INTTUC-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ যে নেতারা গিয়েছিলেন সবাইকে ঘিরেই ছিল বিপুল উন্মাদনা। কোথাও হাত মেলানো, তো কোথাও সেল্ফি তোলার আবদার ছিল। হাসি মুখে সে দাবি মেনেছেন শাসকদলের নেতৃত্ব। অভিষেকের কনভয় হলদিয়া ছেড়ে যাওয়ার পরেও তাঁর নামে দেওয়া জয়ধ্বনির রেশ ছিল।

আরও পড়ুন- কয়লা সঙ্কট আরও গুরুতর হতে চলেছে আগামী কয়েক মাসে, প্রকাশ্যে রিপোর্ট

Previous articleকয়লা সঙ্কট আরও গুরুতর হতে চলেছে আগামী কয়েক মাসে, প্রকাশ্যে রিপোর্ট
Next articleUttarakhand: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করতে কমিটি গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী ধামী