Monday, August 25, 2025

ইঞ্জিনিয়ারিং বুদ্ধিতে ডাক্তারি, মাঝ আকাশে প্রাণ বাঁচল যাত্রীর 

Date:

কানপুর আইআইটির (Kanpur IIT) ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র কার্তিকেয় মঙ্গলম (Karttikeya Mangalam)। কলেজের এক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম সেরে ইকোনমি ক্লাসে(Economy class) ফিরছিলেন বছর চব্বিশের ছেলেটা। প্লেনে বসেই ডাক্তারি বুদ্ধি খাটিয়ে বাঁচিয়ে দিলেন এক ডায়াবেটিস রোগীর প্রাণ।

কার্তিকেয় মঙ্গলম ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। কলেজের নানা প্রোজেক্ট নিয়ে এদিক ওদিক যাতায়াত করতেই হয়। জেনিভা (Geneva)থেকে মস্কো (Moscow) হয়ে দিল্লির পথে ফিরছিলেন তিনি। মস্কো থেকে টেকঅফের পরপরই ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কার্তিকেয়। মাঝ আকাশে আচমকা হট্টগোল, ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। দেখেন এক কেবিন ক্রু মহিলা ডাক্তারের খোঁজ করছেন, তাঁর চোখে মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ স্পষ্ট। জানা গেল, বছর তিরিশের থমাস নামের এক যুবক ততক্ষণে নেতিয়ে পড়েছেন।কিন্তু কেন? ডায়াবেটিসের পেশেন্ট তিনি, ভুল করে ইনসুলিন ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ মস্কো এয়ারপোর্টের (Moscow Airport) সিকিউরিটি চেকিংয়ে ফেলে এসেছেন। ব্যস গত পাঁচ ঘন্টা ধরে তাঁর শরীরে ইনসুলিন পড়েনি। চারিদিকে হইচই, বিমান অবতরণের কথা বলছেন কেউ কেউ। তখনই পাওয়া গেল এক ডাক্তারকে, যিনি আবার ঘটনাচক্রে ডায়াবেটিসের পেশেন্ট। তাঁর কাছে সিরিঞ্জ এবং ইনসুলিনের অ্যাম্পুল পাওয়া গেল। তিনি পরীক্ষা করে দেখলেন থমাসের ব্লাডসুগার লেভেল দ্রুত বাড়ছে। কিন্তু সমস্যা হল যে বিশেষ ডোজের ইনসুলিন থমাসের কাছে ছিল, তার জন্য প্রয়োজন স্পেশ্যাল সিরিঞ্জ বা ইনসুলিন পেন। কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে, অন্য কোনও উপায় না পেয়ে ডাক্তার নিজের সিরিঞ্জ দিয়ে নিজের ইনসুলিন অ্যাম্পুল থেকেই ইনজেক্ট করলেন থমাসকে। কিন্তু থমাসের অবস্থার কোনও উন্নতি তো হলই না উপরন্তু ততক্ষণে তাঁর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠতে শুরু করেছে । অসহায় ডাক্তার, নিরুপায় বিমানসেবিকা, কোনও মতেই ল্যান্ডিং সম্ভব নয়। অগত্যা, নড়েচড়ে বসলেন হবু ইঞ্জিনিয়ার।

বিজনেস ক্লাসের ইন্টারনেট ( wi-fi ) সাপোর্ট নিয়ে  নেট ঘেঁটে বের করে ফেললেন থমাসের স্পেশাল ইনসুলিন পেনের ড্রয়িং। ঐ ড্রয়িং দেখতে দেখতে ডাক্তারের সিরিঞ্জটা খুলে ফেলে নিয়ে তিনি দেখেন প্রয়োজনীয় একটা স্প্রিং নেই। কার্তিকেয় এরপর বিমানসেবিকাদের বলেন বলপেন জোগাড় করতে। সেইমতো তিন চারটে পেনের মধ্যে থেকে স্প্রিং বাছাই করে,সেই স্প্রিং লাগিয়ে ড্রয়িং দেখে দেখে জুড়ে ফেললেন সিরিঞ্জ। এবার সিরিঞ্জ লেগে গেল থমাসের সঙ্গে থাকা স্পেশাল ডোজের ইনসুলিন অ্যাম্পুলে। ডাক্তার দেরি না করে চটপট দিয়ে ফেললেন ইঞ্জেকশন। হু হু করে নামতে থাকল থমাসের সুগার লেভেল।  দিল্লিতে ল্যান্ডিং এর পর গুরগাঁওয়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কার্তিকেয় সঙ্গেই ছিলেন। তাঁর কীর্তিতে অবাক সবাই।



Related articles

একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস! মঙ্গলে জেলা সফরে বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী

আগামিকাল, মঙ্গলবার বর্ধমানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সফর ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই সাজিয়ে তোলা হয়েছে...

বিদ্যাপতি সেতুর সংস্কার শুরু, ধাপে ধাপে সরানো হবে দোকান

শিয়ালদহ ফ্লাইওভার বা বিদ্যাপতি সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করতে চলেছে কেএমডিএ। তার আগে সেতুর নীচে গড়ে ওঠা দোকানগুলিকে...

দার্জিলিংয়ে প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, তাকদায় সূচনা নতুন দিগন্তের

চলতি সপ্তাহেই নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে দার্জিলিং পাহাড়ে। প্রথমবারের জন্য পাহাড় পাচ্ছে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে...

ঘোষণা ছাড়াই টালিগঞ্জ থেকেই ঘুরছে মেট্রো! স্বস্তি উড়েছে যাত্রীদের

কথা দিয়ে কথা রাখছে না মেট্রো! কোনও ঘোষণা ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছেমতো ট্রেন চালাচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই ক্ষোভ...
Exit mobile version